হোম পিছনে ফিরে যান

Jalpaiguri | করলার জলে ভাসল শহরের দুই ওয়ার্ড, ক্ষোভ বাসিন্দাদের

uttarbangasambad.com 2024/7/8

সৌরভ দেব, জলপাইগুড়ি: করলার জলে (Karala River) জলপাইগুড়ি (Jalpaiguri) পুরসভার ১ এবং ২৫ নম্বর ওয়ার্ডের একাংশ প্লাবিত (River Flows) হল। রবিবার নদীর জল এলাকায় ঢুকে পড়ায় দুটি ওয়ার্ডের প্রায় ৫০০ পরিবার গৃহবন্দি হয়। প্রয়োজনীয় নথি বাঁচাতে বাসিন্দাদের কেউ ব্যাগ হতে ফ্লাড শেলটারে ছোটেন, কেউবা বাড়ির গোরু-ছাগল নিয়ে নদীর বাঁধে আশ্রয় নেন। প্রতি বর্ষায় জল-যন্ত্রণার জেরে বাসিন্দারা ক্ষোভ জানিয়েছেন। জলপাইগুড়ি পুরসভার তরফে জলবন্দিদের একাংশকে ফ্লাড শেলটারের পাশাপাশি নিরাপদ আশ্রয়ে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। কাউন্সিলারদের তরফে গুড়, চিঁড়ার মতো শুকনো খাবারের পাশাপাশি খিচুড়ির ব্যবস্থা করা হয়।

পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান সৈকত চট্টোপাধ্যায় বন্যা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে এদিন এলাকায় গিয়েছিলেন। তিনি বলেন, ‘পুরসভার তরফে দুটি ওয়ার্ডের জলবন্দিদের জন্য পানীয় জল এবং খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে। কিছু মানুষকে ফ্লাড শেলটারগুলিতে রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে। পুরসভা পরিস্থিতির ওপর নজর রাখছে।’

অন্যদিকে, অতিবৃষ্টিতে কিছু এলাকায় বিদ্যুতের খুঁটি পড়ে গিয়েছে। ফলে রাত থেকে ময়নাগুড়ি ব্লকের ধর্মপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রায় ৫০টি পরিবার বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। জলঢাকা এলাকাতেও একই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। সেচ দপ্তর তিস্তার দোমোহনি থেকে মেখলিগঞ্জের বাংলাদেশ সীমানা পর্যন্ত অসংরক্ষিত এলাকায় হলুদ সংকেত জারি করেছে। সেচ দপ্তর সূত্রে খবর, এদিন সকাল পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় জলপাইগুড়িতে ১৩৬ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়। বিদ্যুৎ দপ্তরের জলপাইগুড়ি রিজিওনাল ম্যানেজার সঞ্জয় মণ্ডল বলেন, ‘অতিবৃষ্টিতে ময়নাগুড়ি এবং জলঢাকার কুমাই এলাকায় কিছু বিদ্যুতের খুঁটি পড়ে যাওয়ায় সমস্যা তৈরি হয়েছে। পরিষেবা দ্রত স্বাভাবিক করার চেষ্টা করছে।’

এদিন সকালে রাজবাড়িপাড়া ও পরেশ মিত্র কলোনিতে পরিস্থিতি ঠিকই ছিল। বেলা ১০টা বাজতেই করলা ফুলেফেঁপে ওঠে। বাঁধ টপকে নদীর জল ১ নম্বর ওয়ার্ডের রাজবাড়িপাড়া নীচ মাঠ এলাকা এবং ২৫ নম্বর ওয়ার্ডের পরেশ মিত্র কলোনিতে ঢুকে পড়ে। ঘণ্টা দুয়েকের মধ্যেই রাজবাড়িপাড়া নীচ মাঠ ও পরেশ মিত্র কলোনি জলমগ্ন হয়। পরেশ মিত্র কলোনির প্রায় ৪৫০টি পরিবার জলবন্দি হয়েছে। অন্যদিকে, রাজবাড়িপাড়া এলাকাতেও প্রায় ৬০টি বাড়িতে জল ঢুকেছে।

পরেশ মিত্র কলোনির রমেশ মাহাতো বলেন, ‘আমার ঘরের ভেতর প্রায় এক বুক জল। আমাদের এই কষ্ট কেউ বুঝবে না।’ রানি রায় বললেন, ‘ভোট এলেই নেতারা এসে বলে যান করলার বাঁধের উচ্চতা বাড়বে। কিন্তু বছরের পর বছর গড়ালেও সমস্যা মেটে না।’ রাজবাড়িপাড়া এলাকায় জল জমার সমস্যা মেটাতে বেশ কয়েকটি জায়গায় করলার বাঁধে লক গেট বানানো হয়েছিল। কিন্তু তাতেও সমস্যা মেটেনি। এলাকাবাসীর দাবি লক গেটগুলো ঠিকঠাক বন্ধ হচ্ছে না। কাউন্সিলারের মাধ্যমে লক গেটের সমস্যার কথা সেচ দপ্তরে জানানো হয়েছে। রাজবাড়িপাড়ার বাসিন্দা সবিতা চক্রবর্তী বললেন, ‘জল–যন্ত্রণা থেকে চিরতরে মুক্তি পেতে চাই।’ দ্রুত এলাকার পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার চেষ্টা চলছে বলে ১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলার নীলম শর্মা এবং ২৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলার পৌষালি দাস জানিয়েছেন।

People are also reading