হোম পিছনে ফিরে যান

মেয়ের পরিকল্পনায় খুন হন সাবেক এমপির স্ত্রী : পিবিআই

alokitobangladesh.com 3 দিন আগে
মেয়ের পরিকল্পনায় খুন হন সাবেক এমপির স্ত্রী : পিবিআই

সাবেক সংসদ সদস্য (এমপি) শামসুদ্দোহা খানের বড় মেয়ে শামীমা তাহের পপির পরকীয়া প্রেমের বলি হয়েছেন স্ত্রী সেলিমা খান মজলিস। মেয়ের পরকীয়ার সম্পর্কের কথা জেনে যাওয়ায় প্রেমিক সুবলকে সঙ্গে নিয়ে পেশাদার খুনির মতোই মাকে হত্যা করেন পপি। হত্যাকাণ্ডের ১৩ বছর পর তিনজনকে গ্রেফতার করলে তাদের থেকে হত্যাকাণ্ডের চাঞ্চল্যকর তথ্য জানতে পারে পিবিআই-এর ঢাকা জেলা ইউনিট।

মঙ্গলবার (২ জুন) রাজধানীর ধানমন্ডিতে পিবিআই হেডকোয়ার্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান পিবিআই প্রধান বনজ কুমার মজুমদার।

গ্রেফতারকৃতরা হলেন- শামসুদ্দোহা-সেলিমা দম্পতির মেয়ে শামীমা খান মজলিশ ওরফে পপি (৫৭), আরতি সরকার ও সুবল কুমার রায় (৫০)। গত মাসের ৪ জুন সাভারের ভাগলপুর এবং পাকিজা এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়।

পিবিআই জানায়, নিহতের মেয়ে শামীমা খান পপির সঙ্গে গ্রেফতার সুবল কুমার রায়ের মধ্যে অনৈতিক সম্পর্ক ছিল। এছাড়াও পারিবারিক সম্পত্তি সংক্রান্ত বিরোধ এবং রাজনৈতিক বিরোধের জেরে এমপি স্ত্রীকে হত্যা করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে বনজ কুমার জানান, সাভারের বর্ষীয়ান আওয়ামী লীগ নেতা ও সাবেক ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মরহুম শামসুদ্দোহা খানের স্ত্রী ছিলেন সেলিমা খান মজলিশ। তিনি তার স্বামীর দুই তলার বাড়ির নিচতলার পশ্চিম পার্শ্বের ফ্ল্যাটে বড় মেয়ে শামীমা খান মজলিশ ওরফে পপি (৫৭), মেয়ে তিলোত্তমা ও মেয়ের জামাই আবুল কালাম আজাদ এবং পূর্ব পার্শ্বের ফ্ল্যাটে সেজ মেয়ে সেলিনা খান মজলিশ ওরফে শিল্পী (৩৮) এবং তার একমাত্র ছেলে প্লাবনকে (১২) নিয়ে বসবাস করতেন।

২০১১ সালের ১৪ জুন ভোর সাড়ে ছয়টা থেকে সাড়ে সাতটার মধ্যে সেলিমা খানকে গলা ও পেটকাটা অবস্থায় উদ্ধার করে সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউতে ভর্তি করা হয়। সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজধানীর সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় চারদিন পর ১৮ জুন তিনি মারা যান।

এ ঘটনায় নিহতের ভাই মো. শাফিউর রহমান খান ওরফে শাফি বাদী হয়ে একটি মামলা করেন। মামলার পর নিহতের নাতনি জামাই আবুল কালাম আজাদ ও গৃহকর্মী স্বরসতীর স্বামী শ্রী হরিপদ সরকারকে গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ করা হয়৷ পরে থানা পুলিশের আবেদনের প্রেক্ষিতে মামলাটির তদন্তভার সিআইডির কাছে হস্তান্তর করা হয়।

সিআইডি ৪ বছর ৩ মাস ২৪ দিন তদন্ত করে। তদন্তকালে সিআইডি হত্যাকাণ্ডে জড়িত সন্দেহে মো. আবু সুফিয়ান ওরফে রানা (৩২) নামে আরেজনকে গ্রেফতার করে। কিন্তু মামলার তদন্তে তাদের সম্পৃক্ততা না মেলায় চূড়ান্ত প্রতিবেদন থেকে তাদের নাম বাদ দেয় পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ।

এরপর ২০১৫ সালের অক্টোবরে আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়। পরবর্তীতে আদালত মামলাটি পুনঃতদন্তের জন্য পিবিআইকে নির্দেশ দেয়। মামলাটির তদন্ত করেন উপপরিদর্শক (এসআই) সালেহ ইমরান। পরে গত ১৬ ফেব্রুয়ারি মামলার তদন্তের দায়িত্ব পান এসআই ইমরান আহমেদ।

প্রসঙ্গত, ১৩ বছর আগে সাভার দক্ষিণ পাড়া এলাকায় নির্মমভাবে খুন হন সাবেক এমপি শামসুদ্দোহা খানের স্ত্রী সেলিমা খান মজলিস। এ ঘটনায় মামলা হলে প্রথমে সাভার থানা পুলিশ তদন্ত করে। পরে তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হয় সিআইডিকে। দীর্ঘ তদন্ত শেষেও মামলার কুলকিনার করতে পারেনি সংস্থাটি।

People are also reading