হোম পিছনে ফিরে যান

‘সরকারের পতন ঘটাতে আমাদের আরও বেশি ঐক্যবদ্ধ হতে হবে’

banglatribune.com 2024/10/6

রাজধানীতে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের একটি সংলাপে অংশ নিয়েছেন বাম প্রগতিশীল দলের শীর্ষ নেতারা। বিএনপি, নাগরিক ঐক্য, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, জাতীয় পার্টি (কাজী জাফর), গণফোরাম, গণঅধিকার পরিষদ, এবি পার্টিসহ বিভিন্ন দলের প্রতিনিধিরা সংলাপে অংশ নেন। এ সময় বিভিন্ন দলের নেতারা বলেন, এই সরকারের পতন ঘটাতে আমাদের আগের চেয়েও তীব্র লড়াই করতে হবে। যতটুকু ঐক্যবদ্ধ হয়ে আমরা লড়াই করেছি, তার চেয়েও বেশি ঐক্যবদ্ধ হওয়া দরকার।

বুধবার (৩ জুলাই) রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবের আব্দুস সালাম হলে ‘জাতীয় সংকট নিরসনে জাতীয় সংলাপ’ শীর্ষক এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ। 

অনুষ্ঠানে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘কয়েকদিন আগে আমরা একটা আন্দোলন করেছি। ওই আন্দোলনে আমরা সবাই যুক্ত ছিলাম। কখনও যুগপৎ, কখনও যার যার অবস্থান থেকে আন্দোলন করছি। তবে দাবি কিন্তু আমাদের একটাই, সেটা হলো অনির্বাচিত এ সরকারের পদত্যাগ এবং নির্দলীয়-নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন।’

তিনি বলেন, ‘এমন একটি সরকার প্রয়োজন, জনগণের কাছে যার জবাবদিহি থাকবে। সে রকম একটি সরকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে এ সরকারের পতন ঘটাতে হবে এবং নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে হবে। এ জন্য প্রয়োজন তীব্র লড়াই। যতটুকু ঐক্যবদ্ধ হয়ে আমরা লড়াই করেছি, তার চেয়ে বেশি ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।’

ভারতের সঙ্গে তিস্তা প্রকল্পের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘যখনই আমাদের সরকার তিস্তা প্রকল্পে রাজি হবে, তখনই বুঝতে হবে সরকার পানি বণ্টনের যে প্রসঙ্গ সেটা শেষ করে এসেছে। কারণ তিস্তার পানি আসছে না বলেই এই প্রকল্প। আমরা যদি তিস্তার পানি পাই, তাহলে আর প্রকল্পের প্রয়োজন হচ্ছে না। আমরা যদি প্রকল্পের জন্য রাজি হয়ে যাই, তাহলে ধরেই নিচ্ছি, আমরা তিস্তার পানি পাচ্ছি না।’

নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘বাংলাদেশ ধীরে ধীরে ভারতের পেটে চলে যাচ্ছে। আমরা তিস্তার পানি চাইলেও শেখ হাসিনা কিন্তু চান না। আমাদের স্বাধীনতা এবং সার্বভৌমত্ব হুমকির মুখে। আমাদের সবাইকে এক হয়ে দেশকে রক্ষা করতে হবে। এ সরকার ক্ষমতায় থাকার জন্য দেশকে বিক্রি করে দিচ্ছে। মানুষের কল্যাণ হবে আমরা এ রকম একটা রাষ্ট্র চাই।’

বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, ‘আপনি ভারতকে ট্রানজিট দিয়েছেন, করিডোর দিয়েছেন, এটা কোনও দেশপ্রেমিক মানুষ করতে পারে না। ভারতের জন্য বাংলাদেশের নিরাপত্তা হুমকিতে রয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর দিল্লি সফরের তিস্তা প্রকল্প চুক্তির সমাধান ছিল টেবিলের নিচে। এ সরকার এক ফোঁটা পানিও ভারতের কাছ থেকে আদায় করতে পারবে না।’

১২ দলীয় জোট প্রধান ও জাতীয় পার্টি (জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার বলেন, ‘আজ বাংলাদেশ মহা সংকটে নিমজ্জিত। এই সংকট থেকে উত্তরণ ঘটাতে হলে দেশের মানুষকে সঠিক নেতৃত্ব দিতে জানতে হবে। তাহলে আমাদের বিজয় নিশ্চিত। আজ বাংলাদেশ ভারতকে ট্রেন ট্রানজিটের কথা বলে করিডর দিয়ে দিয়েছে। এ রকম কিছু হোক তা আমরা চাই না।’

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করিম বলেন, ‘ট্রানজিট দেওয়ার বিনিময়ে বাংলাদেশ কোনোকিছু আদায় করতে পারেনি। ট্রানজিট প্রদান আমাদের ভাবিয়ে তোলে। নিজেদের সার্বভৌমত্বের ওপরে থাকা অধিকারকে প্রশ্নবিদ্ধ করে। পানি বণ্টন নিয়ে যে যৌথ কমিটি করা হয়েছে, তা নিছক সস্তা ও বহুল ব্যবহৃত একটি আইওয়াশ। তিস্তা প্রকল্প ভারতের হাতে তুলে দেওয়ার পাঁয়তারা করা হয়েছে। এই নির্মম ও কঠিন বাস্তবতাকে সামনে রেখে আমাদের চুপ থাকার সুযোগ নেই।’

গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী বলেন, ‘বছরের পর বছর ধরে শেখ হাসিনা ভারতের কাছে দেশকে বিকিয়ে দিয়েছে। শেখ হাসিনার পতন অনিবার্য করতে হলে আমাদের ঘরে বসে থাকলে চলবে না। আমরা রাজপথে খুব শিগগিরই নামবো।’

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমীর মুফতী সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও ছিলেন– বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদিন, গণঅধিকার পরিষদ সভাপতি নুরুল হক নূর, গণঅধিকার পরিষদের একাংশের আহ্বায়ক কর্নেল (অব.) মিয়া মশিউজ্জামান, এবি পার্টির সদস্য সচিব মজিবুর রহমান মঞ্জু, খেলাফত মজলিসের নায়েবে আমীর মাওলানা আহমাদ কাসেমী, মুসলিম লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য আতিকুল ইসলাম, খেলাফত আন্দোলনের নায়েবে আমীর মাওলানা মুজিবুর রহমান হামিদী প্রমুখ।

People are also reading