লালমনিরহাট জেলা ছাত্রলীগের সভাপতিকে অব্যাহতি করা হয়েছে
Read Time:5 Minute, 18 Second
আজ বৃহস্পতিবার (১৩ জুন) ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি সাদ্দাম হোসেন ও সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান স্বাক্ষরীত এক বিজ্ঞাপ্তিতে এই তথ্য নিশ্চিত হওয়া গেছে।
বিজ্ঞাপ্তিতে বলা হয়েছে, সংগঠন বিরোধী, শৃঙ্খলা-পরিপন্থী, অপরাধমুলক ও সংগঠনের মর্যাদা ক্ষুন্ন হয় এমন কার্যকলাপে লিপ্ত থাকার অভিযোগে লালমনিরহাট জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রাশেদ জামান বিলাসকে তার বর্তমান পদ থেকে অব্যাহতি প্রদান করা হয়। বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের জরুরী সিদ্ধান্ত মোতাবেক তাকে অব্যাহতি প্রদান করা হয়।
এর আগে গত সোমবার (১০ জুন) রাতে লালমনিরহাট সদর থানায় সভাপতি বিলাসসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগ দায়ের করেন একজন গরু ব্যবসায়ী। অভিযোগে দাবি করা হয়েছে, তার হাত-পা বেঁধে আটকে রেখে ২.৫ লাখ টাকা চাঁদা আদায় করেন লালমনিরহাট জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি রাশেদ জামান বিলাসসহ (৩১) অভিযুক্তরা।
থানায় করা অভিযোগ থেকে জানা গেছে, আদিতমারী উপজেলার ভেলাবাড়ি ইউনিয়নের তালুক দুলালী গ্রামের মৃত মোসলেম উদ্দিনের ছেলে গরু ব্যবসায়ী আইয়ুব আলী গত রবিবার (৯ জুন) লালমনিরহাট আদালতে একটি মামলায় হাজিরা দিয়ে বের হচ্ছিলেন।
এই সময় ৩টি মোটরসাইকেলে করে ৫ জন যুবক এসে জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি বিলাসের কথা বলে তাকে মোটরসাইকেলে করে তুলে নিয়ে যায়। তারা প্রথমে লালমনিরহাট মর্গের নির্জন এলাকায় নিয়ে গরু ব্যবসায়ীকে মারধর করে। সেখানে বিলাস ছিলেন। এই সময় মারপিট থেকে বাঁচতে জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি বিলাসের পা ধরেও রক্ষা পায়নি আইয়ুব। মারধরের পর তারা তার পকেটে থাকা ২০,০০০ টাকা কেড়ে নেশ।
এরপর বিজিবি ক্যান্টিন মোড়ে ছাত্রলীগ সভাপতি বিলাসের ব্যক্তিগত চেম্বারে নিয়ে যাওয়া হয় তাকে। সেখানে তার হাত-পা বেঁধে মারপিট করে ৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করা হয়। অবশেষে তা ২.৫ লাখে সমাধান হলে গরু ব্যবসায়ী আইয়ুব আলী তার স্ত্রীকে ফোন করে বিকেলে ২ লাখ ২০,০০০ আনিয়ে দিলে আইয়ুবকে ছেড়ে দেওয়া হয়। এই ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা নিলে বা কাউকে বললে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকিও দেওয়া হয় তাকে।
গত সোমবার (১০ জুন) লালমনিরহাট সদর থানায় লিখিত অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী গরু ব্যবসায়ী আইয়ুব আলী। বাকি অভিযুক্তরা হলেন সৌরভ টেরা, তুষার, বাবু, রব্বানী ও রায়হান। তারা সবাই ছাত্রলীগের নেতাকর্মী ও বিলাসের সঙ্গী।
এর আগেও রাজধানী ঢাকার কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে জেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি হুমাইয়ুন কবির হিরু’র উপর হামলা চালিয়ে আলোচনায় আসে লালমনিরহাট জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রাশেদ জামান বিলাস।
এই ঘটনায় ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদ লালমনিরহাট জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রাশেদ জামান বিলাসকে স্বীয় পদ থেকে অব্যাহতি প্রদান করেছে বলে স্থানীয়রা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা দাবি করে।
লালমনিরহাট জেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি হুমায়ুন কবির হিরু জানান, অব্যাহতি পত্রের বিজ্ঞাপ্তিটি সঠিক। সাংগঠনিক ভাবে জেলা কমিটিকে জানানো হয়েছে। তবে নতুন করে কে বা কে ভারপ্রাপ্তের দায়িত্ব পালন করবেন তা বলা হয়নি। ১১ জন সহ-সভাপতির মাত্র দুইজন রয়েছেন অবিবাহিত।
লালমনিরহাট সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ওমর ফারুক জানান, চাঁদাবাজির অভিযোগটি তদন্ত চলছে। এখন পর্যন্ত মামলা হিসেবে নথিভুক্ত হয়নি।