হোম পিছনে ফিরে যান

অনলাইন জুয়ায় অর্থপাচার বাড়ছে, নিয়ন্ত্রণে সমন্বিত প্রচেষ্টা দরকার: সিআইডি

banglatribune.com 5 দিন আগে

সমন্বিত প্রচেষ্টা ছাড়া অনলাইন গ্যাম্বলিং (জুয়া) নিয়ন্ত্রণ করা যাবে না বলে মন্তব্য করেছেন পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) প্রধান অতিরিক্ত আইজিপি মোহাম্মদ আলী মিয়া। তিনি বলেন, সিআইডিসহ অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অভিযান পরিচালনা, ডিভাইস জব্দসহ অপরাধীদের গ্রেফতার করতে পারতো। কিন্তু নতুন সাইবার নিরাপত্তা আইনে অবৈধ অর্থপাচারের ধারায় এখন সেটা সম্ভব হচ্ছে না। এমন পরিস্থিতিতে আমরা সহজে কিছু করতে পারছি না। নতুন আইন হবার পর অনলাইন গ্যাম্বলিংয়ের অভিযোগে কোনও মামলা হয়নি। অথচ অনলাইন গ্যাম্বলিংয়ে অবৈধভাবে অর্থপাচার বাড়ছে। এখনই অনলাইন গ্যাম্বলিং নিয়ন্ত্রণ আইন হওয়া জরুরি।

রবিবার (৩০ জুন) দুপুরে সিআইডি সদর দফতরে "মোবাইল অ্যাপসের মাধ্যমে অবৈধ অর্থ স্থানান্তর নিয়ন্ত্রণের চ্যালেঞ্জ: অনলাইন জুয়া নিয়ে একটি গবেষণা" বিষয়ে গবেষণা প্রতিবেদন শীর্ষক এক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

অতিরিক্ত আইজিপি মোহাম্মদ আলী মিয়া বলেন, অনলাইন গ্যাম্বলিং এখন ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। এ কারণে প্রতিনিয়ত দেশ থেকে ই-মানির মাধ্যমে টাকা পাচার হচ্ছে। কোনও একটি সংস্থার পক্ষে এই অনলাইন গ্যাম্বলিং নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয়। এজন্য প্রয়োজন সকল সংস্থার সমন্বিত উদ্যোগ।

কিন্তু অনলাইন জুয়ার ক্ষেত্রে আমরা এখনও পিছিয়ে আছি। আমাদের টুলসের অভাব। আমরা চাই, সবাই তথ্য দেন, সিআইডিকে জানান, আমরা ব্যবস্থা নেবো। এখনই ব্যবস্থা না নিলে এ ধরণের অপরাধ থামবে না। অপরাধীদের ধরতে পারলে এসব অপরাধ থামবে।

এক প্রশ্নের জবাবে সিআইডি প্রধান বলেন, আমাদের একটা ট্র্যাডিশনাল আইন আছে৷ প্রকাশ্যে যারা জুয়া খেলে— তিন বা চার তাস জাতীয়। এর শাস্তি ছিল ৫০/১০০ টাকা জরিমানা। কিন্তু এখন সেটা অনলাইন জুয়ায় রূপান্তর হয়েছে। যা অনলাইনভিত্তিক অপরাধ। এটা নিয়ন্ত্রণে কিন্তু দেশে আলাদা কোনও আইন নেই। যে আইনটা ধরে আমরা কাজ করেছি, সেটা হলো সাইবার সিকিউরিটি অ্যাক্ট। সেটাতে বলা হয়েছে, অবৈধ ই-মানি ট্রানজেকশন। এইধারা তখন ছিল আমলযোগ্য অপরাধ (এ ক্ষেত্রে বিনা পরোয়ানায় গ্রেফতার করা যায়)। এখন সেটা অআমলযোগ্য করা হয়েছে অর্থাৎ প্রমাণের আগে পুলিশ কাউকে ধরতে না পারায় বিষয়টি এখন আমাদের জন্য অনেক কঠিন।

এই আইনের সংশোধন বা অনলাইন জুয়া নিয়ন্ত্রণে আলাদা আইন করার বিষয়ে পুলিশের প্রস্তাব রয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা চাচ্ছি এটা দ্রুত সংশোধন করা হোক। পুলিশ সদর দফতর থেকে প্রস্তাবনা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করা হয়েছে। যতটুকু জানি যে, এটি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে আইন মন্ত্রণালয়ে যায়নি। আমরা চাই এটার দ্রুত বাস্তবায়ন ও আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারি।

বাংলাদেশে কত মানুষ অনলাইন জুয়ায় আসক্ত বা জুয়া খেলছে, এর দ্বারা কি পরিমাণ টাকা পাচার হচ্ছে জানতে চাইলে এ অতিরিক্ত আইজিপি বলেন, কতজন লোক জুয়া খেলছে, তারা কারা? যারা জুয়া অর্গানাইজ করছে তারা কারা?— বাংলাদেশে এর উপরে কোনও রিসার্চ নাই, ডাটা নাই। এজন্যই চাচ্ছি একটা ডাটা সেন্টার হোক।

তিনি বলেন, অনলাইন বেইজ, ট্রেড বেইজে আন্ডার ও ওভার ইনভয়েজের মাধ্যমে যে পরিমাণ টাকা পাচার হচ্ছে, ই-মানির মাধ্যমে টাকা পাচার হচ্ছে— এর কোনও সুনির্দিষ্ট তথ্য আমাদের কারও কাছে নাই। ডাটাবেজ থাকলে এসব জানা সহজ হতো।

যে পরিমাণ অর্থ মানি লন্ডারিং হচ্ছে, কে কত অংশ বা কি পরিমাণ অনলাইন গ্যামব্লিংয়ে হচ্ছে?— জানতে চাইলে তিনি বলেন, এই তথ্য আমাদের কাছে নাই। বাংলাদেশ ব্যাংকেও নাই। কারও কাছে নাই। আমরা যখন কাউকে ধরি তখন কিছু তথ্য পাই। তবে এই মুহূর্তে আমরা দেখতে পাচ্ছি সাড়ে ৬ হাজারের উপরে অনলাইন জুয়া টিম আছে। যারা বিভিন্ন উপায়ে অপরাধ করে যাচ্ছে। ছয় হাজারের বেশি ক্রিপটো কারেন্সি আছে বাংলাদেশে।

People are also reading