হোম পিছনে ফিরে যান

জাতীয় সংসদে বাজেট পাস

comillarkagoj.com 3 দিন আগে

জাতীয় সংসদে বাজেট পাস

গতকাল থেকে শুরু হয়েছে নতুন অর্থবছর। জাতীয় সংসদে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেট পাস হয়েছে। পাস হওয়া বাজেটটি দেশের ৫৩তম বাজেট এবং আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকারের ২৫তম ও অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলীর প্রথম বাজেট। ‘সুখী, সমৃদ্ধ, উন্নত ও স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে অঙ্গীকার’ স্লোগানে বাজেটের আকার ধরা হয়েছে সাত লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকা।
এই বাজেটে রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা থাকছে পাঁচ লাখ ৪১ হাজার কোটি টাকা। বাকি দুই লাখ ৫৬ হাজার কোটি টাকা ঋণ নেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা থাকবে। দুই লাখ ৬৫ হাজার কোটি টাকার বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) এরই মধ্যে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। দেশের ৫৩তম এই বাজেটের আকার বাড়ছে ৪.৬ শতাংশ।
নতুন অর্থবছরে কালো টাকার মালিকরা আয়ের উৎস সম্পর্কে প্রশ্নের সম্মুখীন না হয়েই তাঁদের অঘোষিত সম্পদকে বৈধ করার সুযোগ পাচ্ছেন। প্রস্তাবিত বাজেট অনুযায়ী দেশের প্রচলিত আইন যা-ই থাকুক, কোনো করদাতা ফ্ল্যাট, জমির পাশাপাশি নগদ অর্থসহ স্থাবর সম্পত্তির জন্য ১৫ শতাংশ কর দিলে কোনো কর্তৃপক্ষ কোনো প্রশ্ন তুলতে পারবে না। সংসদের ভেতরে-বাইরে কঠোর সমালোচনা সত্ত্বেও প্রস্তাবটি বহাল রাখা হয়েছে। নতুন অর্থবছরে সংসদ সদস্যদের শুল্কমুক্ত গাড়ি আমদানির সুবিধা বহাল থাকছে।
এর আগে অপ্রদর্শিত আয়ের টাকা পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে শর্ত শিথিল করে বড় আর কোনো পরিবর্তন ছাড়াই গত শনিবার পাস হয় অর্থ বিল।
এই বাজেট বাস্তবায়নে সরকারের সামনে অনেক চ্যালেঞ্জ রয়েছে। নানামুখী সংকটে দেশের অর্থনীতি। মূল্যস্ফীতির চাপ অসহনীয়। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) তথ্যে দেখা যায়, ১৪ মাস ধরে দেশে মূল্যস্ফীতি ১০ শতাংশের কাছাকাছি।
বাংলাদেশ ব্যাংক নীতি সুদ হার বাড়িয়েও মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পারেনি। বাজেটে মূল্যস্ফীতি ৬.৫ শতাংশে নামিয়ে আনার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আগামী অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে নিত্যপণ্যের ওপর উৎস কর কমানোর প্রস্তাব করা হয়েছে।
রিজার্ভে ডলার সংকট চরমে। গত অর্থবছরে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ২৪ বিলিয়ন ডলারে নেমে এসেছিল। অর্থসংকটের কারণে দেশের উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নে কাক্সিক্ষত লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়নি। ২০২৩-২৪ অর্থবছরের ১১ মাসে সর্বনি¤œ এডিপি, মাত্র ৫৭.৫৪ শতাংশ বাস্তবায়িত হয়েছে। ওদিকে আমদানির ক্ষেত্রে নেওয়া হয়েছে সংকোচননীতি। আমদানি সংকোচন করায় রপ্তানি ও শিল্প উৎপাদন কমেছে। এর সঙ্গে কমেছে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ। এর প্রভাব পড়েছে মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধিতে। বিবিএস পূর্বাভাস দিয়েছে, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ৫.৮২ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হতে পারে। আছে জ্বালানিসংকটও।
বাংলাদেশ এখন সত্যিকার অর্থেই এক কঠিন সময় অতিক্রম করছে। জীবনযাত্রার ব্যয় অনেক বেড়ে গেছে। বাজার ঊর্ধ্বমুখী। নতুন কর্মসংস্থান নেই। বাড়ছে বেকারত্ব। মধ্যবিত্ত ও নি¤œবিত্ত-উভয় শ্রেণির মানুষের আয় কমেছে।
এ অবস্থায় দেশের বেশির ভাগ মানুষের জীবনে কিছুটা স্বাচ্ছন্দ্য দেওয়াই এখন সরকারের জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। এই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় বাজেট বাস্তবায়নে সরকারকে দক্ষতার পরিচয় দিতে হবে। সরকার বাজেট বাস্তবায়নে মনোযোগী হবে, এটাই আমাদের প্রত্যাশা।

People are also reading