হোম পিছনে ফিরে যান

চমক দেখাচ্ছেন নতুন এমপিরা

alokitobangladesh.com 4 দিন আগে
তরুণ সংসদ সদস্যরা বেশ সক্রিয়
চমক দেখাচ্ছেন নতুন এমপিরা

একের পর এক ইতিবাচক চমক দেখাচ্ছেন দেশের নতুন ও তরুণ এমপিরা। নিজ নিজ নির্বাচনী এলাকার জন্য নিবেদিতপ্রাণ হয়ে কাজ করছেন তারা। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয়ী হয়েই মানুষের সেবা এবং এলাকার উন্নয়নে মনোযোগী হয়েছেন। ভালো কাজের মধ্যদিয়ে জনসাধারণের মনে স্থায়ীভিত্তি গড়ে তোলার প্রয়াস চালাচ্ছেন। বিশেষ করে যারা তরুণ এবং প্রথমবার নির্বাচিত হয়েছেন সেসব এমপিরা বেশ সক্রিয়।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ভোটের আগে দেওয়া প্রতিশ্রুতি রাক্ষায় নিরলস কাজ করছেন অপেক্ষাকৃত তরুণ ও নতুন এমপিরা। এলাকার সামাজিক কর্মকাণ্ডে নিজেকে সম্পৃক্ত রাখছেন। ধর্মীয় অনুষ্ঠানে উপস্থিত হচ্ছেন। মানবিক কাজ করে গণভিত্তি অজর্নের প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছেন। এলকার উন্নয়নে সরকারের প্রকল্পগুলোর প্রতিও বিশেষ নজর রাখছেন তারা। যাতে মানসম্মতভাবে সঠিকভাবে সে কাজগুলো হয়। নতুন এমপিদের মধ্যে আওয়ামী লীগের দলীয় এবং স্বতন্ত্ররাও রয়েছে। তবে প্রত্যেকেই সংসদ নেতা শেখ হাসিনার প্রতি আস্থাশীল। বঙ্গবন্ধুকন্যার নেতৃত্বে ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ বাস্তবায়নেও রাখতে চান ভূমিকা। তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকজনের কথা দৈনিক আলোকিত বাংলাদেশে তুলে ধরা হল,

ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন: হবিগঞ্জ-৪ আসনের এমপি ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন। তিনি একজন স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য। এমপি হওয়ার আগ থেকেই সমাজিক মাধ্যমে বিভিন্ন অসংগতি এবং নিজের ভালো কাজগুলো তুলে ধরে আলোচনায় আসেন তিনি। এমপি হওয়ার পরও সামাজিক মাধ্যমে সবর রয়েছেন। নির্বাচনি এলাকা নিয়ে তার মহাপরিকল্পনা রয়েছে। চুনারুঘাট ও মাধবপুর উপজেলাকে পর্যটন এলাকা বানাতে উদ্যোগী হয়েছেন তিনি। এরইমধ্যে চুনারুঘাটের সাতছড়ি সড়কের রামগঙ্গা চা বাগান মোড়ে পরিত্যক্ত যাত্রী ছাউনিকে পর্যটনকেন্দ্রে রূপান্তর করেছেন। স্থানীয় বাসিন্দাদের চিকিৎসার মান উন্নয়নেও চুনারুঘাট উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তাকে ইতিমধ্যে নির্দেশ দিয়েছেন। এমপি হওয়ার পরপরই নিজে নদীতে নেমে খোয়াই নদীর ময়লা পরিস্কার করেছেন। মানবিক ও সামাজিক কাজ গণভিত্তি অজর্নের প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছেন। এছাড়া দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতির বিরুদ্ধে নিয়েছেন শক্ত অবস্থান। এরইমধ্যে সিলেটের বন্যা পরিস্থিতিতেও নিজের সমর্থ নিয়ে ছুটে গেছেন বানভাসী মানুষের কাছে। সিলেটের বন্যার বিষয়ে সংসদে তুলে ধরবেন ব--সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আমার ভূমিকা আগের মতোই থাকবে। দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ, নিপীড়িত মানুষের পক্ষে কথা বলা এবং নিজের এলাকাকে যতটুকু পারা যায় বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলাকে বাস্তবিক অর্থে রূপ দেওয়া।’

প্রকৌশলী আব্দুস সবুর: প্রথমরাব এমপি হয়েই ব্যাপক কর্মযজ্ঞ শুরু করেছেন কুমিল্লা-১ (দাউদকান্দি-তিতাস) আসনের এমপি প্রকৌশলী আব্দুস সবুর। তার নির্বাচনি এলাকার অবকাঠামোগত উন্নয়নের পাশাপশি কর্মমূখী শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও যুবসমাজকে মাদকমুক্ত রাখতে কাজ করছেন তিনি। এছাড়া স্থানীয়দের প্রত্যাশা পূরণেও কাজ করছেন। দীর্ঘদিনের প্রত্যাশিত দাউদকান্দি উপজেলার হাসানপুর কলেজের সামনে ফুটওভার ব্রিজের কাজে হাত দিয়েছেন। সিএনজি স্টেশনের চাঁদাবাজি বন্ধ করেছেন। এছাড়া নির্বাচনী এলাকায় আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস স্থাপনের অনুমোদন করিয়ে আনেন এই সংসদ সদস্য। শুধু কাঠামোগত উন্নয়ন নয়, তার নির্বাচনি এলাকায় আওয়ামী লীগকে আরো শক্তিশালী করতে কাজ করে করছেন। প্রতিটি ইউনিয়নে ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের জন্য একটি করে স্থায়ী অফিস স্থাপনেরও কাজ শুরু করেছেন। প্রকৌশলী মো. আবদুস সবুর বলেন, আমি নির্বাচিত হয়েই এলাকার মানুষের জন্য উন্নয়ন মূলক কাজ শুরু করি। নির্বাচনের আগে সাধারণ মানুষের যে প্রত্যাশা ছিলো তা আমি বাস্তবায়ন করার জন্য কাজ করে যাচ্ছি। আগামী পাঁচ বছরে এই দুই উপজেলাকে সারা বাংলাদেশের মধ্যে মডেল উপজেলায় পরিণত করতে চাই।

বিপ্লব হাসান পলাশ: আওয়ামী লীগের নবীন এমপি অ্যাডভোকেট বিপ্লব হাসান পলাশ। তিনি কুড়িগ্রাম-৪ আসনের সংসদ সদস্য। এমপি হয়েই এলাকার সাধারণ মানুষের জন্য রাষ্ট্রীয় সুযোগ সুবিধা চেয়েছেন তিনি। এলাকার সার্বিক উন্নয়ন করতে শুরুতেই সড়ক এবং যোগাযোগব্যবস্থার সংস্কার ও নির্মাণে মনোযোগ দিয়েছেন তিনি। ইতিমধ্যে কুড়িগ্রাম জেলার রাজীবপুর ও রৌমারী উপজেলায় ২টি নদীর উপরে ১২ টি কাঠের সাঁকো নির্মাণ করে দিয়েছেন। এতে ৪০ গ্রামের মানুষের শহরের সঙ্গে যোগাযোগ সহজ হয়েছে। পাশাপশি কুড়িগ্রামের ভাঙনরোধে নদীশাসন ও বাধঁ নির্মাণের ব্যবস্থা দ্রুত করতে পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুককে সঙ্গে নিয়ে নদী ভাঙ্গন কবলিত এলাকা পরিদর্শন করেছেন। পরিদর্শন শেষে পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী শীঘ্রই প্রতিরক্ষা বাঁধ নির্মাণের কার্যক্রম শুরু হবে বলে আশ্বাস দেন। এলাকার মানুষের জন্য স্মার্ট কর্মসংস্থানও গড়ে তোলার প্রয়াস চালাচ্ছেন এই তরুণ সংসদ সদস্য। জানতে চাইলে তিনি আলোকিত বাংলাদেশকে বলেন, ‘এলাকার মানুষের কর্মসংস্থান বাড়াতে পরিকল্পনা প্রণয়ন করছি। সে অনুযায়ী কাজ করব। রাষ্ট্রের সুযোগ-সুবিধা যাতে কুড়িগ্রাম-৪ আসনের মানুষ সহজে পায় সে বিয়ষটি নিশ্চিত করব।’ ভালো ভালো কাজ করার মধ্যদিয়ে দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছেন এই তরুণ সংসদ সদস্য। এছাড়া তার কাছে মানুষের প্রত্যাশাও বেড়েছে।

মোহাম্মদ সাঈদ খোকন: আগে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র হলেও প্রথমবার ঢাকা-৬ আসন থেকে এমপি হয়েছেন আলহাজ্ব মোহাম্মদ সাঈদ খোকন। এ আসনে দুইবার আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোট থেকে জাতীয় পার্টির এমপি ছিলেন কাজী ফিরোজ রশিদ। যদিও ঢাকার উন্নয়নের সিংহভাগ কাজ করে সিটি করপোরেশন। ফিরোজ রশিদের আমলে এ আসনের আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা বরাবরই ছিল কোনঠাসা। বিভিন্ন শিক্ষা ও স্বাস্ব্য সেবা প্রতিষ্ঠানে জায়গা পেয়েছিল ফিরোজ রশিদ পন্থীরা। দলীয় এমপি পেয়ে এবার চাঙা হয়ে উঠেছে ঢাকা-৬ আসনের আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা। বিভিন্ন দাবিদাওয়া নিয়ে ছুটে যাচ্ছেন সাঈদ খোকনের কাছে। তিনিও মূল্যায়ন করার আশ্বাস দিয়ে নেতাকর্মীদের কাছে টানছেন। দলকে শক্তিশালী করতে নেতাকর্মীদের বিভিন্ন সময় দিকনির্দেশনা দিচ্ছেন। তার নির্বাচনি আসনে মাদক, সন্ত্রাস ও বিভিন্ন ধরণের চাঁদাবাজি বন্ধেও আইন-শৃঙ্খলা সংক্রান্ত সমন্বয় সভায় জোড়ালো ভাবে সর্তক করছেন। এছাড়া পুরাণ ঢাকার বিভিন্ন সমস্যার স্থায়ী সমাধানে সংসদে সোচ্ছার রয়েছে সাঈদ খোকন।

অ্যাডভোকেট ময়েজ উদ্দিন শরীফ রুয়েল: পড়াশোনা শেষ করে আইন পেশায় নাম লিখিয়েছেন। ছিলেন ছাত্রনেতা। এরইমধ্যে আওয়ামী লীগের মনোয়ন পেয়ে এমপি নির্বাচিত হন। অ্যাডভোকেট ময়েজ উদ্দিন শরীফ রুয়েল বর্তমানে হবিগঞ্জ-২ (আজমিরীগঞ্জ-বানিয়াচং) আসনের সংসদ সদস্য। জনসাধারণের দুর্ভোগ লাগবে তিনি নির্বাচনি এলাকার অবকাঠামো উন্নয়নে মনোযোগী হয়েছেন। বিভিন্ন সড়ক, ব্রিজ ও কালভার্ট সংস্কার ও নির্মাণের জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে চাহিদাপত্র দিচ্ছেন। এরইমধ্যে হবিগঞ্জ-বানিয়াচং-আজমিরীগঞ্জের শরীফ উদ্দিন সড়ক এবং ফিরিঙ্গীটিলা ব্রিজ সংস্কার করতে মন্ত্রণালয়ে ডিও লেটার দিয়েছেন। হাওড় বেষ্টিত হবিগঞ্জ-২ বসবাসরতদের দাবিদাওয়া পর্যায়ক্রমে পূরণ করবেন তরুণ এই সংসদ সদস্য। স্থানীয়দের সঙ্গে ভালোবাসার সম্পর্ক তৈরীতে কাজ করছেন তিনি। ময়েজ উদ্দিন শরীফ রুয়েলের বাবা শরীফ উদ্দিন আহমেদ এ আসনে দুবার সংসদ-সদস্য ছিলেন। ১৯৯১ ও ৯৬ সালে তিনি সংসদ-সদস্য নির্বাচিত হন। দ্বিতীয় মেয়াদে সংসদ-সদস্য নির্বাচিত হওয়ার কিছুদিন পরই তিনি মারা যান। অত্যন্ত সৎ ও সজ্জন ব্যক্তি হিসাবে তিনি সবার কাছে শ্রদ্ধার পাত্র ছিলেন। বাবার সুনাম ও মর্যাদা ধরে রাখতে মানবিক কাজ করছেন এমপি ময়েজ উদ্দিন শরীফ রুয়েল।

আজিজুল ইসলাম: বর্তমান সংসদে সবচেয়ে কনিষ্ঠ এমপি আজিজুল ইসলাম। তিনি যশোর-৬ আসনের স্বতন্ত্র এমপি। ২৮ বছর বয়সেই সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে চমক দেখিয়েছেন। এরপর সিএনজি চালিত অটোরিকশায় চড়ে সংসদের প্রথম অধিবেশনে এসে সবাইকে তাক লগিয়ে দেন তিনি। এমপি হয়ে সকলকে সঙ্গে নিয়ে এলাকার উন্নয়নের বার্তা দেন আজিজুল ইসলাম। পাশাপশি তার নির্বাচনি এলাকায় মাদক-সন্ত্রান, দখল ও চাঁদাবাজি বন্ধে কঠোর হুশিয়ারি দেন। তিনি বলেন, কেশবপুর উপজেলার প্রতিটি পরিবার আমাকে যেন তাদের সন্তান মনে করে। আমি কেশবপুর বাসির সন্তান হিসেবে বেঁচে থাকতে চাই। আমি তাদের সুখ-দুখের সঙ্গী হয়ে থাকতে চাই।

People are also reading