ন্যাটোর নীতি দিয়েই পশ্চিমাদের ঘায়েলের পরিকল্পনা কিম-পুতিনের!
উত্তর কোরিয়ায় রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বিরল সফরে দেশটির সঙ্গে সই হওয়া চুক্তি নিয়ে চুলচেরা বিশ্লেষণ চলছে। ন্যাটোর নীতির মতো একটি সংযুক্তি রয়েছে সেই চুক্তিতে। যেখানে এক দেশ আক্রান্ত হলে অন্য দেশকেও আক্রান্ত হিসেবে বিবেচনা করা হবে। এছাড়া ন্যাটোর মতো যৌথ বাহিনী গঠন ও নতুন কোনো দেশ জোটে অন্তর্ভুক্ত হবে কিনা, তা নিয়েও জোর আলোচনা চলছে।
এসব বিষয় নিয়ে একটি বিশ্লেষণ প্রকাশ করেছে মার্কিন গণমাধ্যম সিএনএন। ইউক্রেন যুদ্ধের জেরে সাম্প্রতিক সময়ে বিশ্বের উল্লেখযোগ্য অনুষ্ঠানগুলোতে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি পুতিনকে। এ পরিস্থিতিতে কিম জং উনের উষ্ণ অভ্যর্থনা বলছে, পশ্চিমারা যতই বঞ্চিত করার চেষ্টা করুক না কেন অনেকের কাছে পুতিনের গ্রহণযোগ্যতা এখনো কোনো অংশে কমেনি।
এই সফরে দুই নেতার বিবৃতি ও চুক্তির মধ্য দিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রদের সাম্রাজ্যবাদী নীতির নিন্দার পাশাপাশি উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে রাশিয়ার সম্পর্ক আরও জোরদার হওয়ার আভাস পাওয়া গেছে।
উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে একটি প্রতিরক্ষা চুক্তি সই করেছেন পুতিন। এই চুক্তিতে পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটোর পাঁচ নম্বর ধারার অনুরূপ একটি সংযুক্তি আছে। যাতে বলা হয়েছে, পশ্চিম কিংবা প্রতিবেশীদের যেকোনো আগ্রাসনে এই দুই দেশ পরস্পরকে সহায়তা করবে।
চুক্তিতে আরও বলা হয়, একটি দেশে যদি যুদ্ধ পরিস্থিতি তৈরি হয়, তাহলে অপর দেশ তাৎক্ষণিকভাবে অস্ত্র সহায়তাও দেবে।
প্রশ্ন উঠেছে, এই ‘সামরিক কৌশলগত অংশীদারিত্ব’ চুক্তির ফলে যৌথ সামরিক মহড়া এবং সীমান্ত রক্ষার জন্য যৌথ বাহিনী গঠন হবে কিনা। ভবিষ্যতে আরও দেশ এই চুক্তিতে যুক্ত হবে কিনা, সে প্রশ্নও তুলছেন বিশ্লেষকরা। এছাড়াও, পারস্পরিক সামরিক সহযোগিতার এই চুক্তির ফলে ইউক্রেন যুদ্ধে উত্তর কোরিয়ার অস্ত্র ব্যবহার হবে কি না, সেই প্রশ্নও উঠছে।
এদিকে, বহু প্রতীক্ষিত মার্কিন যুদ্ধাস্ত্র ইউক্রেনে আসতে শুরু করেছে। রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধে অস্ত্র ব্যবহারে বেশকিছু নিষেধাজ্ঞাও তুলে নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। ইউক্রেনকে ক্রমাগত চাপের মুখে রাখতে এবং চলমান যুদ্ধে আশানুরূপ ফল অর্জনে রাশিয়ার এখন তাই অস্ত্রের প্রয়োজন। আবার পরমাণু কর্মসূচিতে রাশিয়ার কাছ থেকে প্রযুক্তি ও আর্থিক সহযোগিতা চেয়ে আসছে উত্তর কোরিয়া।
এ অবস্থায় রাশিয়া আদৌ কিম জং উনকে সেই সহযোগিতা করবেন কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন থাকলেও আপাতত এই সফরের মধ্য দিয়ে পুতিন পশ্চিমাদের সেটি-ই বিশ্বাস করাতে চান বলে ধারণা বিশ্লেষকদের।