হোম পিছনে ফিরে যান

হস্তান্তরের আগেই ভাঙল পৌনে ৭ কোটি টাকার সড়ক

risingbd.com 2024/10/6
হস্তান্তরের আগেই ভাঙল পৌনে ৭ কোটি টাকার সড়ক

বরগুনার পাথরঘাটা-হরিণঘাটার চার কিলোমিটার সড়ক হস্তান্তরের আগেই দুই পাশ ভেঙে পড়েছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, সড়ক নির্মাণে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করা হয়েছে। শুরু থেকে তারা এটা নিয়ে প্রতিবাদ করে আসছেন, কিন্তু কাজ হয়নি। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বলছেন, সড়কটি নির্মাণে ব্যয় হয়েছে প্রায় ৭ কোটি টাকা। ঠিকাদার রাস্তা ঠিক করে না দিলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Google news

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) পাথরঘাটা উপজেলা কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ২০২২-২৩ অর্থবছরে সড়ক প্রশস্তকরণ ও মজবুতকরন প্রকল্পের আওতায় দরপত্র আহ্বান করা হয়। ৬ কোটি ৭২ লাখ ৫৯ হাজার ৫২৫ টাকার এ কাজটি ই-টেন্ডারের মাধ্যমে কার্যাদেশ পান পটুয়াখালীর ঠিকাদার আবুল কালাম আজাদ। গত বছরের মে মাসে এই সড়কের কাজের অনুমতি দেওয়া হয়। আগামী সেপ্টেম্বর মাসে এই কাজের মেয়াদ শেষ হবে। এই সড়কটিকে নতুন করে ৫.৫ মিটার প্রশস্ত করন করা হয়। 

সরেজমিনে ওই সড়কে গিয়ে দেখা গেছে, পাথরঘাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের প্রধান ফটক থেকে বাদুরতলা জাফরের দোকান নামক স্থান পর্যন্ত ৪ কিলোমিটার সড়কের কাজ শেষ হয়েছে গত তিন মাস আগে। তবে এরই মধ্যে ওই সড়কের দুই পাশের বিভিন্ন স্থান থেকে পিচঢালাই উঠে সড়ক ভেঙে গেছে। এতে যানবাহন চলাচলসহ মানুষের চরম ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে। 

বাদুরতলা এলাকার বাসিন্দা মুজিবর রহমান বলেন, সড়ক নির্মাণের শুরুতে আমরা এই অংশে ভাঙন ঠেকাতে  ঠিকাদারকে বলেছিলাম। সে সময় তিনি আমাদের কথা শোনেনি। এখন এই স্থানটি ভেঙে যাওয়ার কারণে যানবাহন ও পথচারী ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে। 

বাদুলতলা বাজারের ভাসমান সবজি ব্যবসায়ী মো. রাজু মিয়া বলেন, বাদুরতলা বাজার থেকে পর্যটন কেন্দ্র হরিনঘাটা এলাকার বাজার সংলগ্ন আশ্রয় কেন্দ্রের সামনে সড়কটি দুই স্থানে ধসে পড়ছে। 

এ বিষয়ে ঠিকাদার আবুল কালাম আজাদের কাজ পরিচালনা করা সাব ঠিকাদার শহিদুল ইসলাম মৃধা বলেন, আমরা  নিয়ম মেনে সড়কের কাজ করেছি। সড়কের যে অংশটুকু ভেঙে গেছে তা বাঁধের বাইরের অংশ। ঘূর্ণিঝড় রেমালের জোয়ারের পানিতে সড়কটি বাদুরতলা নামক স্থানে একপাশ দিয়ে ভেঙে গেছে। আমরা ওই অংশ মেরামত করে দেবো। তবে পিচঢালাই হবে না। 

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) পাথরঘাটা উপজেলা প্রকৌশলী চন্দন কুমার চক্রবর্তী বলেন, সড়কটি নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়েছে পৌনে ৭ কোটি টাকা। ঠিকাদার আমাদের কাছে এখন পর্যন্ত কাজ বুঝিয়ে দেননি। তবে সড়কের পাশে পর্যাপ্ত মাটি না দেওয়ায় ওই সড়কের দুই পাশ ভেঙে সড়কটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। যদিও হস্তান্তরের আগ পর্যন্ত সড়কের সকল দায়ভার ঠিকাদারের। সে ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

এ বিষয় পাথরঘাটা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইউএনও রোকুনুজ্জামান বলেন, এই ঠিকাদারের বিরুদ্ধে আগেও নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহারের অভিযোগ পেয়েছিলাম। তখন তাকে শোকজ করা হয়। এবারও একই অভিযোগ ওঠায় আমরা তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছি। তাদেরকে ১৫ দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।  প্রতিবেদন হাতে পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) বরগুনা কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী মেহেদী হাসান বলেন, সড়কটির কাজ এখনো চলমান। আমি ওই এলাকা এখনো পরিদর্শন করতে পারিনি। কারণ আমি নতুন এসেছি। তবে বিষয়টি জেনেছি। সরেজমিনে সড়কটি পরিদর্শন করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

People are also reading