হোম পিছনে ফিরে যান

ভর্তুকির লাগাম টানতে ৪৩ খাতে রপ্তানি প্রণোদনা কমানোর সিদ্ধান্ত

channelionline.com 2 দিন আগে

এই খবরটি পডকাস্টে শুনুনঃ

ছয় মাসের ব্যবধানে দ্বিতীয় বারের মতো রপ্তানিতে প্রণোদনা কমিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। পণ্য রপ্তানিতে ভর্তুকি থেকে বেরিয়ে আসতে আবারও ৪৩ খাতে রপ্তানি প্রণোদনা কমানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

রোববার ৩০ জুন বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রানীতি বিভাগ থেকে এ সংক্রান্ত এক নির্দেশনা জারি করা হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের এই নির্দেশনাটি দেশের সব তফসিলি ব্যাংকে পাঠানো হয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনায় বলা হয়েছে, দেশের রপ্তানি বাণিজ্যকে উৎসাহিত করার লক্ষ্যে সরকার বর্তমানে ৪৩টি খাতে রপ্তানির বিপরীতে রপ্তানি প্রণোদনা বা নগদ সহায়তা দিয়ে আসছে। রপ্তানি আয়ের ওপর এতদিন শূন্য দশমিক ৫ শতাংশ থেকে ১৫ শতাংশ পর্যন্ত নগদ সহায়তা দেওয়া হত। এখন নতুন ঘোষণার পর, সর্বোচ্চ হার ১৫ শতাংশ এবং সর্বনিম্ন শূন্য দশমিক ৩ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে। সোমবার ১ জুলাই থেকে ২০২৫ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত এই নতুন সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে বলেও উল্লেখ করা হয়েছে নির্দেশনায়।

নতুন হার অনুযায়ী, দেশিয় বস্ত্র খাতে শুল্ক বন্ড ও ডিউটি ড্রুব্যাকের পরিবর্তে বিকল্প নগদ সহায়তা কমিয়ে ১ দশমিক ৫ শতাংশ করা হয়েছে যা আগে ছিল ৩ শতাংশ। ইউরো অঞ্চলে বস্ত্র খাতের রপ্তানিকারকদের প্রণোদনার হার ১ দশমিক ৫ শতাংশের অতিরিক্ত বিশেষ সহায়তাও ১ শতাংশ থেকে কমিয়ে শূন্য দশমিক ৫ শতাংশ করা হয়েছে। নিট, ওভেন ও সোয়েটারসহ তৈরি পোশাক খাতের সব ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প অতিরিক্ত সুবিধা ১ শতাংশ কমিয়ে ৩ শতাংশ করা হয়েছে। পাশাপাশি নতুন পণ্য বা নতুন বাজারে ৩ শতাংশ থেকে কমিয়ে করা হয়েছে ২ শতাংশ। তৈরি পোশাক খাতে বিশেষ নগদ সহায়তা শূন্য দশমিক ৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে শূন্য দশমিক ৩ শতাংশ করা হয়েছে।

বৈচিত্র্যপূর্ণ পাটপণ্য রপ্তানির বিপরীতে রপ্তানি প্রণোদনা ১০ শতাংশ, পাটজাত চূড়ান্ত দ্রব্যে ৫ শতাংশ, পাটসূতায় ৩ শতাংশ এবং চামড়াজাত দ্রব্যাদি রপ্তানিতে ১০ শতাংশ প্রণোদনা দেওয়া হবে। এছাড়া হাতে তৈরি পণ্যে ৬ শতাংশ, গরু-মহিষের নাড়িভুঁড়ি, শিং ও রগে ৬ শতাংশ, হিমায়িত চিংড়ি ও অন্যান্য মাছ রপ্তানিতে খাতে ১ দশমিক ৫ থেকে ৮ শতাংশ, হালকা প্রকৌশল পণ্য রপ্তানিতে ১০ শতাংশ, কারখানাগুলোতে উৎপাদিত ক্রাস্ট ও ফিনিশড লেদার রপ্তানিতে ৬ শতাংশ, পেট বোতল-ফ্লেক্স রপ্তানিতে ৬ শতাংশ, পেট বোতল-ফ্লেক্স থেকে উৎপাদিত পলইয়েস্টার স্টাপল ফাইবার রপ্তানিতে ৬ শতাংশ, জাহাজ রপ্তানিতে বিপরীতে ৬ শতাংশ, পাটকাঠি থেকে উৎপাদিত কার্বন ও জুট পার্টিকেল বোর্ড রপ্তানিতে ৮ শতাংশ, শস্য ও শাকসবজির বীজ রপ্তানিতে ৮ শতাংশ, ফার্নিচারে ৮ শতাংশ, প্লাস্টিকদ্রব্য রপ্তানিতে ৬ শতাংশ, দেশে উৎপাদিত কাগজ ও কাগজ জাতীয় দ্রব্য রপ্তানিতে ৬ শতাংশ এবং আগর ও আতর রপ্তানিতে ৮ শতাংশ প্রণোদনা দেয়া হবে।

ফার্মাসিউটিক্যালস পণ্যে ৫ শতাংশ, অ্যাকুমুলেটর ব্যাটারিতে ১০ শতাংশ, সফটওয়্যার, আইটিইএস ও হার্ডওয়্যার রপ্তানিতে ৬ শতাংশ, সফটওয়্যার ও আইটিইএস সেবা রপ্তানিতে ব্যক্তি পর্যায়ের ফ্রিল্যান্সারদের জন্য ২ দশমিক ৫ শতাংশ, মোটরসাইকেল রপ্তানিতে ৬ শতাংশ, রেজার ও রেজার ব্লেডে ৬ শতাংশ, সিরামিক পণ্যে ৬ শতাংশ, টুপি রপ্তানির বিপরীতে রপ্তানি প্রণোদনা ৭ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে।

এছাড়াও, কাকড়া ও কুঁচে রপ্তানির বিপরীতে রপ্তানি প্রণোদনা ৬ শতাংশ, কেমিক্যাল পণ্য (ক্লোরিন, হাইড্রোক্লোরিক অ্যাসিড, কস্টিক সোডা এবং হাইড্রোজেন পারঅক্সাইড) রপ্তানিতে ৫ শতাংশ, কনজিউমার ইলেকট্রনিক্স, ইলেকট্রিক্যাল হোম ও কিচেন অ্যাপ্লায়েন্স পণ্য রপ্তানিতে ৬ শতাংশ, চাল রপ্তানিতে ৩ শতাংশ, চা রপ্তানিতে ২ শতাংশ, স্টিল রপ্তানিতে ২ শতাংশ, বাইসাইকেল ও এর পার্টস রপ্তানিতে ৩ শতাংশ, সিমেন্ট সিট রপ্তানিতে ৩ শতাংশ, বেজা, বেপজা ও হাইটেক পার্ক এ অবস্থিত প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে রপ্তানিতে দশমিক ৩ শতাংশ থেকে ২ শতাংশ প্রণোদনা দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে আর্থিক খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ ব্যাংক।

People are also reading