হোম পিছনে ফিরে যান

সাবেক অর্থমন্ত্রীর অনুসারীদের বিরুদ্ধে আ.লীগ নেতার মনোনয়ন বাণিজ্যের অভিযোগ

banglatribune.com 2024/5/19
রফিকুল হোসেন
© 2024 Bangla Tribune Online Media

সাবেক অর্থমন্ত্রী, কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও কুমিল্লা-১০ আসনের সংসদ সদস্য আ হ ম মুস্তফা কামালের অনুসারীদের বিরুদ্ধে মনোনয়ন বাণিজ্যের অভিযোগ তুলেছেন নাঙ্গলকোট উপজেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক রফিকুল হোসেন। সম্প্রতি উপজেলার মাহিনী উচ্চ বিদ্যালয়ে আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে এক চেয়ারম্যান প্রার্থীর পক্ষে প্রচারণাকালে এ অভিযোগ তোলেন তিনি। তার বক্তব্যের ভিডিও ফুটেজ ইতোমধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।

ভাইরাল হওয়া আট মিনিটের ওই ভিডিওতে রফিকুল হোসেন বলেন, ‘১৪ বছর উপজেলা আওয়ামী লীগের সেক্রেটারি ছিলাম। সভাপতি, আহ্বায়ক মিলিয়ে ১৩-১৪ বছর দায়িত্ব পালন করেছি। এখনও উপজেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক। তাদের কথা কী বলবো? তারা যে কর্মকাণ্ড করেছে, একজন ইউনিয়ন চেয়ারম্যানের মনোনয়ন দিতে ৫০। ৫০ মানে ৫০ টাকা নয়, ৫০ লাখ টাকা! সর্বনিম্ন এক প্রার্থীর কাছ থেকে ৫০ লাখ টাকা নিয়েছেন। এক প্রার্থী, আফসার সাহেব বললেন, নৌকার মনোনয়নের জন্য তার কাছ থেকে ৬০ লাখ টাকা নিয়েছিল। এরপর তার বিরুদ্ধে দুই প্রার্থী দাঁড় করিয়ে দিয়েছিল (আ হ ম মুস্তফা কামালের অনুসারীদের উদ্দেশ করে)। এই ব্যবসাটা টিকিয়ে রাখার জন্য এতদিন কইছে “কোপা”। এখন কয় “বোবা”। আমি মন্ত্রী মহোদয়ের (মুস্তফা কামাল) কাছে নমিনেশন, নমিনেশন মানে মতামত জানতে চেয়েছিলাম প্রার্থী হবো কিনা। সংসদ নির্বাচনের সময়ও বলেছেন, পরেও বলেছেন। পরবর্তী সময়ে তার স্ত্রী-মেয়েকে হাত করে তারা মনোনয়ন বদলে দিয়েছিল (উপজেলায় মুস্তফা কামালের অনুসারীদের উদ্দেশ করে)। তিনি (মুস্তফা কামাল) আবার বউয়ের কথা শোনেন বেশি।’

মুস্তফা কামালের মেয়ে ও স্ত্রীকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, ‘তারা আমাকে বলেন, আপনার টাকাপয়সা নাই, জনসমর্থনও নাই। আপনি প্রার্থী হলে জিতবেন কীভাবে? আরে বাবুরে, আমি কি লুটপাট করছি, এত টাকা আসবে কোত্থেকে? তবে চলার মতো টাকা আমার আগেও ছিল, বর্তমানেও আছে, মরার পরও থাকবে। এখন তিনি মনে করছেন রফিকও প্রার্থী, বাছিরও প্রার্থী। আমি চেয়ারম্যান হলে ওনার সব গোমর ফাঁস হয়ে যাবে। তাই ছুপুকে (বিএনপির বহিষ্কৃত নেতা মাজহারুল ইসলাম ছুপু) দাঁড় করিয়ে দিয়েছেন।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে নাঙ্গলকোট উপজেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক রফিকুল হোসেন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আমি মন্ত্রী মহোদয়ের (সাবেক মন্ত্রী) বিরুদ্ধে মনোনয়ন বাণিজ্যের অভিযোগ করিনি। করেছি উপজেলা চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে। তবে রাগের মাথায় বলেছি, মন্ত্রী স্ত্রীর কথা শোনেন। এটি আমার ভুল হয়েছে। আপনারা এ নিয়ে প্লিজ লেখালেখি করবেন না।’

নাঙ্গলকোট উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সামছুদ্দিন কালু বলেন, ‘একটি নির্দিষ্ট ভোটাভুটি প্রক্রিয়ায় ইউনিয়ন পরিষদের দলীয় চেয়ারম্যান প্রার্থীদের স্থানীয় সংসদ সদস্য বাছাই করেন। দলের আহ্বায়ক হিসেবে রফিক সাহেব নিজেও মতামত দেন। সেখানে আমি বাণিজ্য করবো কীভাবে? আর মন্ত্রী মহোদয় দলকে ফান্ড করেন। যদি তার বিরুদ্ধে বাণিজ্যের অভিযোগ তোলা হয়, সেটিও একদম ভিত্তিহীন। মন্ত্রী নিজেই তাকে (রফিকুল হোসেন) দলের আহ্বায়ক বানিয়েছেন, তিনি কীভাবে তার বিরুদ্ধে বিষোদগার করেন?’

প্রসঙ্গত, আগামী ৮ মে নাঙ্গলকোটসহ কুমিল্লার চার উপজেলায় উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নাঙ্গলকোট এবং মেঘনা উপজেলায় প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। অপরদিকে নিষ্প্রাণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে স্থানীয় সরকারমন্ত্রী তাজুল ইসলামের নির্বাচনি এলাকা লাকসাম ও মনোহরগঞ্জে।

People are also reading