হোম পিছনে ফিরে যান

একদিনের ব্যবধানে হিলিতে পেঁয়াজের দাম বেড়েছে ১৫ টাকা পর্যন্ত

bonikbarta.net 3 দিন আগে
ছবি— বণিক বার্তা।

ভারতীয় পেঁয়াজের আমদানি কম ও মূল্য বেশি থাকায় এবং দেশী পেঁয়াজের সরবরাহ কমের অজুহাতে দিনাজপুরের হিলিতে একদিনের ব্যবধানে আমদানিকৃত ও দেশীয় পেঁয়াজের দাম কেজিতে বেড়েছে ১০ থেকে ১৫ টাকা। হঠাৎ করে পেঁয়াজের দাম বাড়ায় বিপাকে পড়েছেন নিন্ম আয়ের মানুষ। এই মূল্য বৃদ্ধিকে ব্যবসায়ীদের কারসাজি বলে দাবি করছেন ক্রেতারা। তবে চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কম থাকায় পেঁয়াজের দাম বাড়ছে বলে দাবি করছেন বিক্রেতারা।

শুক্রবার (৫ জুলাই) হিলি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, প্রতিটি দোকানেই দেশীয় ও আমদানিকৃত পেঁয়াজের পর্যাপ্ত সরবরাহ রয়েছে।

একদিন আগেও বাজারে দেশী পেঁয়াজ ৮৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হলেও রাতের ব্যবধানে তা বেড়ে ১০০ টাকা হয়েছে। এছাড়া আমদানিকৃত ভারতীয় পেঁয়াজ গতকাল ৮০ টাকা দরে বিক্রি হলেও আজ তা বিক্রি হচ্ছে ৯০ টাকায়। এমনকি কেনো কোনো দোকানে তা ৯৫ টাকায় বিক্রি হতেও দেখা গেছে।

হিলি বাজারে পেঁয়াজ কিনতে আসা মিরাজুল ইসলাম বলেন, পেঁয়াজের দামের ঊর্ধ্বমুখিতার কারণে গরিব মানুষ পেঁয়াজ কিনে খেতে পারবে না। এভাবে পেঁয়াজের দাম বাড়তে থাকলে গরিব মানুষ কিনবে কীভাবে!

হিলি বাজারে পেঁয়াজ কিনতে আসা নূরে আলম বলেন, গতকাল দেশীয় পেঁয়াজ কিনে নিয়ে গেছি ৮৫ টাকা কেজি। সেই পেঁয়াজ আজকে হয়ে গেছে ১০০ টাকা কেজি। এমন তো নয় যে বাজার থেকে পেঁয়াজ উধাও হয়ে গিয়েছে, বাজারে তো পর্যাপ্ত পেঁয়াজ রয়েছে। তারপরও কেন দাম বাড়তি। এটি সম্পূর্ণ ব্যবসায়ীদের কারসাজি। তারাই সংকট সৃষ্টি করে দাম বাড়াচ্ছে।

পেঁয়াজ কিনতে আসা হায়দার আলী বলেন, এভাবে যদি প্রতিদিন পেঁয়াজের দাম বাড়ে তাহলে আমাদের তো পেঁয়াজ ছাড়াই তরকারি রান্না করে খেতে হবে। এক কেজি পেঁয়াজ কিনতেই যদি ১০০ টাকা চলে যায়, তাহলে অন্য খরচ কোত্থেকে করব!

হিলি বাজারের পেঁয়াজ বিক্রেতা আবুল হাসনাত বলেন, ঈদের পর থেকেই পেঁয়াজের দাম ঊর্ধ্বমুখী। এর কারণে ভারতে থেকে পর্যাপ্ত পেঁয়াজ আমদানি হচ্ছে না। যেটুক হচ্ছে তারও দাম বেশি। তাছাড়া দেশী পেঁয়াজের মৌসুম শেষের দিকে, অধিকাংশ কৃষকের ঘরে পেঁয়াজ নেই। তাই দেশী পেঁয়াজের দামও বেশি। যে পেঁয়াজ একদিন আগেও মোকামে ৩ হাজার ৩০০ টাকা মণ বিক্রি হতো, তা এখন বেড়ে ৩ হাজার ৭০০ থেকে ৩ হাজার ৯০০ টাকা হয়েছে। একদিনের ব্যবধানে মণপ্রতি দাম বেড়েছে ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা। এই ব্যবসায়ী বলেন, দেশী পেঁয়াজ কেজিপ্রতি ব্যবসায়ীরাই কিনছেন ৯৭ টাকা দরে। এর সাথে পরিবহন ও অন্যান্য খরচ যোগ করে তারা ১০০ টাকা কেজিতে বিক্রি করছেন।

এদিকে আমদানিকারকরা বলছেন ভারতে পেঁয়াজের রফতানির ওপর শুল্ক থাকায় ও রফতানি মুল্য নির্ধারিত থাকায় আমদানি কম হচ্ছে। তাছাড়া পেঁয়াজের সাধারণ বাজারদরও ঊর্ধ্বমুখী। এসব কারণে বন্দরেই পেঁয়াজের দাম উর্ধ্বমুখী। আগে বন্দরে প্রতি কেজি পেঁয়াজ ৭০ থেকে ৭৫ টাকায় বিক্রি হলেও এখন তা বেড়ে ৮৫ থেকে ৮৬ টাকা হয়েছে। খুচরায় যা ৯০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তাদের দাবি চাহিতার তুলনায় বাজারে সরবরাহ কম থাকায়ই পেঁয়াজের দাম ঊর্ধ্বমুখী।

এমন অবস্থায় ভারত থেকে পেঁয়াজের আমদানি বাড়লে দাম আবার কমে আসার আশা করছেন তারা।  

জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর দিনাজপুরের সহকারী পরিচালক মমতাজ বেগম বলেন, নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম সহনীয় পর্যায়ে রাখতে এবং কৃত্রিম সংকট তৈরি ঠেকাতে আমরা নিয়মিত বাজার তদারকি করছে।

এই কর্মকর্তা জানান, কারো বিরুদ্ধে বাড়তি দাম রাখার অভিযোগ পেলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।

People are also reading