হোম পিছনে ফিরে যান

বন্যা কবলিত সুনামগঞ্জের নতুন বিপদ ‘ভারি বৃষ্টি’

risingbd.com 4 দিন আগে
বন্যা কবলিত সুনামগঞ্জের নতুন বিপদ ‘ভারি বৃষ্টি’

ভারি বৃষ্টিপাত এবং ভারত থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে সুনামগঞ্জের সুরমা ও যাদুকাটা নদীর পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করে বন্যা পরিস্থিতি দেখা দিয়েছে। এতে জেলা শহরের কয়েকটি ওয়ার্ডসহ বিভিন্ন উপজেলার শতাধিক গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। 

Google news

এরই মধ্যে সুনামগঞ্জে ভারী বর্ষণের আশঙ্কার কথা জানিয়েছে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র। ফলে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতির শঙ্কা দেখা দিয়েছে।

বুধবার (৩ জুলাই) থেকে আগামি ৫ জুলাই পর্যন্ত বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বৃষ্টির পাশাপাশি পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতেরও কয়েকটি রাজ্যে চলমান টানা ভারী বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকার পূর্বাভাস রয়েছে।

পাউবোর দেওয়া তথ্য মতে, বুধবার সন্ধ্যা থেকে সুনামগঞ্জ পৌরশহরের ষোলঘর পয়েন্টে বিপৎসীমার ২ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় (২ জুলাই থেকে ৩ জুলাই সকাল ৯ টা পর্যন্ত জেলায় বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে ২৫ মিলিমিটার। এছাড়া সুরমা নদীর ছাতক পয়েন্টে বিপৎসীমার ৮০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে।

এদিকে গত ৩০ জুন থেকে টানা বর্ষণ হওয়ায় জেলার সকল নদী ও হাওরগুলোতে পানি বেড়েছে। সঙ্গে পাহাড়ি ঢল নামায় দেখা দেয় বন্যা। তলিয়ে যায় সুনামগঞ্জের ৪টি উপজেলার অনেক এলাকা। পৌর শহরের নদী তীরবর্তী এলাকায় থেকে ধীরে ধীরে পানি নামলেও জেলার বিভিন্ন স্থানে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়। জেলার তাহিরপুর, বিশ্বম্ভরপুর, দোয়ারাবাজার উপজেলার নিচু এলাকার রাস্তাঘাট পানিতে তলিয়ে রয়েছে। অনেকের বাড়িঘরে বন্যার পানি থাকায় আশ্রয়কেন্দ্রে রয়েছেন তারা। সুনামগঞ্জের চলমান এই দ্বিতীয় দফা বন্যায় জেলাজুড়ে অন্তত ৫ লাখ মানুষ বন্যা দুর্ভোগে রয়েছেন। এ অবস্থায় নতুন করে আবহাওয়ার এমন পূর্বাভাস সুনামগঞ্জবাসীর মনে ভয় বাড়িয়ে দিয়েছে। 

সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার সূর্য অন্তর দাস বলেন, পানি নামছিলো এখন আবার পানি বাড়ছে। বাচ্চাদের নিয়ে অনেক অসুবিধায় আছি। ঘরে পানি উঠায় বাজারে পলিথিন নিতে আসছি। পলিথিন দিয়ে ঘরে ছানি দিবো। এভাবেই কোনো মতে বাচ্চাদের নিয়ে থাকতে হবে।

সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার অম্রতশ্রী গ্রামের আলমগীর হোসেন বলেন, বাড়িঘরে পানি, গরু বাছুর রাখার মতো অবস্থা নাই। বাথরুম করার কোনো সুবিধা নাই। রাস্তাঘাট শুকনা নাই। নৌকা দিয়ে চলাচল করতে হয়। আর কাজ কামও নেই, খুব অভাব অনটনে আছি। এখন বলার জায়গাও নেই।

মঈনপুর গ্রামের মনোয়ার হোসেন বলেন, বাড়ির ভিতরে পানি ঢুকে গেছে, বর্তমানে বারান্দার নাকে নাকে পানি আছে। পানি ঘরে উঠার সম্ভাবনা বেশি। হাওর থেকে পানি এসে ঢুকছে বাড়ির ভিতরের দিকে। 

তিনি আরও বলেন, আমরা তো মাটির ঘরে থাকি, ঘরের ভিতরে থাকাই যাচ্ছে না। চাঙ বেঁধে থাকতে হচ্ছে। এভাবে তো আমরা রান্না করেও খেতে পারছিনা। খুব কষ্টে আছি। 

সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মামুন হাওলাদার বলেন, বর্তমানে সুনামগঞ্জের উজানে (ভারতে) ভারি থেকে অতি ভারি বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস রয়েছে। এটি আগামী ৫ জুলাই পর্যন্ত চলমান থাকতে পারে। সে ক্ষেত্রে নদীর পানি বৃদ্ধি পেতে পারে।

People are also reading