যশোরের মণিরামপুরে তৃতীয় লিঙ্গের সদস্য মঙ্গলী ওরফে পলি হত্যাকান্ডের রহস্য উদঘাটন করেছে যশোর জেলা গোয়েন্দা শাখা (ডিবি পুলিশ)। একই সাথে হত্যাকারী রমজান হোসেন ওরফে বাবুকে (২৭) গ্রেফতার করেছে গোয়েন্দা পুলিশ।
গত শনিবার (২৯ জুন) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে যশোর শহরতলীর মুড়লী মোড় এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারের পর হত্যার ঘটনায় ব্যবহৃত চাপাতি এবং হত্যার পর লুট করা স্বর্ণালংকার, নগদ ১২শ’ টাকা, আসামির ব্যবহৃত মোবাইল ফোন ও হত্যাকান্ডের শিকার পলির রক্তমাখা কাপড়ের অংশ বিশেষ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
নিহত তৃতীয় লিঙ্গের মঙ্গলী খাতুনের সাথে আসামি রমজানের দীর্ঘদিনের সম্পর্ক ছিল। সম্পর্কচ্ছেদের চেষ্টায় ব্যর্থ হয়েই পলিকে হত্যা করে রমজান।
রোববার (৩০ জুন) দুপুরে যশোর ডিবি কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) বেলাল হোসাইন।
নিহত মঙ্গলী ওরফে পলি (৪০) মণিরামপুর উপজেলার ঘুঘুদহ গ্রামের মৃত আব্দুল খালেকের সন্তান। তিনি উপজেলার মাছনা মোড়লপাড়া গ্রামে বাড়ি নির্মাণ করে একাকি বসবাস করতেন। হত্যাকান্ডে অভিযুক্ত রমজান হোসেন ওরফে বাবু মণিরামপুর উপজেলার কামালপুর গ্রামের আলী আহমেদের ছেলে।
সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বেলাল হোসাইন জানান, গত ২৮জুন সন্ধ্যা রাত ৭টার দিকে মণিরামপুরের মাছনা মোড়লপাড়া গ্রামে তৃতীয় লিঙ্গের মঙ্গলী খাতুন পলির বাড়ি থেকে গলাকাটা লাশ উদ্ধার করে মণিরামপুর থানা পুলিশ। এই ঘটনায় নিহতের ভাই মিজানুর রহমান বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। যশোর ডিবি পুলিশের একটি চৌকস টিম তদন্তে নেমে ২৪ ঘন্টার মধ্যে ঘটনায় জড়িত অপরাধীকে সনাক্ত করে।
এরপর শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে যশোর শহরতলীর মুড়লী মোড় থেকে আসামি রমজান হোসেন ওরফে বাবুকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। এরপর তার কাছ থেকে পলির ঘর থেকে চুরি করা স্বর্ণালংকার, আসামির ব্যবহৃত মোবাইল উদ্ধারসহ আসামি রমজানের স্বীকারোক্তি মোতাবেক তার বসতবাড়ি থেকে হত্যাকাজে ব্যবহৃত ধারালো চাপাতি, ঘটনাস্থল থেকে চাপাতির রক্তমোছা রক্তমাখা কাপড় উদ্ধার করতে সক্ষম হয়।
তিনি আরও জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে আসামি রমজান হোসেন ওরফে বাবু একজন কুখ্যাত চোর ও মাদকসেবী। তার বিরুদ্ধে একাধিক চুরি ও মাদক মামলা রয়েছে।
নিহত তৃতীয় লিঙ্গের মঙ্গলী খাতুনের সাথে আসামি রমজানের দীর্ঘদিনের সম্পর্ক ছিল। সম্পর্কচ্ছেদের চেষ্টায় ব্যর্থ হয়েই পলিকে হত্যা করে রমজান। ঘটনার দিন নিহতের বাসায় চুরির পরিকল্পনা করে বাড়িতে যায় ঘাতক রমজান।
গভীর রাতে পলির বাড়িতে চুরি করার সময় টের পেয়ে তাদের মধ্যে ধস্তাধস্তির একপর্যায়ে ঘরে থাকা ধারালো চাপাতি দিয়ে গলায় ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত করে তৃতীয় লিঙ্গের পলিকে হত্যা করে। এরপর তার ঘরে থাকা স্বর্ণের কানের দুল, নগদ ২২৫০ টাকা চুরি করে পালিয়ে যায় রমজান।
যাযাদি/ এম
..