হোম পিছনে ফিরে যান

ক্রিমিয়ায় হামলা: যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নেওয়ার হুমকি রাশিয়ার

banglatribune.com 2024/7/1

যুক্তরাষ্ট্রের সরবরাহকৃত দূরপাল্লার আর্মি ট্যাকটিক্যাল মিসাইল সিস্টেম (এটিএসিএমএস)ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে ক্রিমিয়ায় ইউক্রেনীয় হামলার জন্য সরাসরি যুক্তরাষ্ট্রকে দায়ী করেছে রাশিয়া। এই হামলায় অন্তত চারজন নিহত এবং ১৫১ জন আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে ক্রেমলিন। সোমবার (২৪ জুন) যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূতকে আনুষ্ঠানিকভাবে সতর্ক করে রাশিয়া বলেছে, এ ঘটনার প্রতিশোধ অবশ্যই নেওয়া হবে। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।

১৯৬২ সালের কিউবার ক্ষেপণাস্ত্র সংকটের পর রাশিয়া ও পশ্চিমের মধ্যে সবচেয়ে বড় সংঘাতের জন্ম দিয়েছে ইউক্রেনের যুদ্ধ। রুশ কর্মকর্তারা বলছেন, এই সংঘাত এখন সবচেয়ে বিপজ্জনক পর্যায়ে পৌঁছেছে।

ক্রিমিয়ার ওপর হামলায় সরাসরি যুক্তরাষ্ট্রকে দায়ী করা রাশিয়ার জন্য একটি নতুন পদক্ষেপ। ২০১৪ সালে রাশিয়া ক্রিমিয়া দখল করেছিল। উপদ্বীপটিকে রুশ ভূখণ্ড হিসেবে বিবেচনা করে মস্কো। যদিও বিশ্বের অধিকাংশ দেশ রুশ দাবিকে স্বীকার করে না।

হামলার বিষয়ে ক্রেমলিন মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ সাংবাদিকদের বলেছেন, আপনাদের ওয়াশিংটনের মন্ত্রীদের জিজ্ঞাসা করা উচিত কেন তাদের সরকার রাশিয়ার শিশুদের হত্যা করছে। শুধু তাদের এই প্রশ্নটি করুন।

রাশিয়ার কর্মকর্তাদের মতে, সেভাস্তোপোলে রবিবারের হামলায় অন্তত দুই শিশু নিহত হয়েছে। হামলার সময় সেভাস্তোপোলের একটি সৈকত থেকে লোকজনকে পালাতে দেখা গেছে।

রাশিয়া বলছে, যুক্তরাষ্ট্র এই অস্ত্র সরবরাহ করেছে এবং যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বিশেষজ্ঞরা এই অস্ত্র পরিচালনা ও তথ্য সরবরাহ করেছে। তবে এই হামলার বিষয়ে ইউক্রেন বা যুক্তরাষ্ট্র কোনও মন্তব্য করেনি।

মস্কোতে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত লিন ট্রেসিকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তলব করেছে রাশিয়া। এ সময় তাকে বলা হয়েছে, ওয়াশিংটন রাশিয়ার বিরুদ্ধে একটি ‘হাইব্রিড যুদ্ধ’ চালাচ্ছে এবং প্রকৃতপক্ষে সংঘাতের একটি পক্ষ হয়ে উঠেছে।

রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ট্রেসিকে আরও বলেছে, এই হামলার ঘটনায় অবশ্যই প্রতিশোধমূলক পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বারবার বিশ্বের সবচেয়ে বড় পারমাণবিক শক্তিগুলোর মধ্যে একটি বৃহত্তর যুদ্ধের ঝুঁকির বিষয়ে সতর্ক করে আসছেন। যদিও তিনি বলেছেন, মার্কিন নেতৃত্বাধীন ন্যাটো জোটের সঙ্গে সংঘাত চায় না রাশিয়া।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনও ইউক্রেনে মার্কিন বা ন্যাটোর সেনা পাঠানোর বিষয়টি নাকচ করে আসছেন। ২০২২ সালে ইউক্রেনে রুশ আক্রমণের পরপরই তিনি বলেছিলেন, ন্যাটো ও রাশিয়ার মধ্যে সরাসরি সংঘাত তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের সূত্রপাত ঘটাতে পারে।

ইউক্রেনে যুদ্ধকে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে একটি বৃহত্তর সংঘাতের অংশ হিসেবে উপস্থাপন করে আসছেন পুতিন। তিনি মনে করেন, সোভিয়েত ইউনিয়নের ১৯৯১ সালে পতনের পর মস্কোর স্বার্থকে উপেক্ষা করা হচ্ছে এবং রাশিয়াকে খণ্ডিত করতে ও এর প্রাকৃতিক সম্পদ দখল করতে চক্রান্ত করা হচ্ছে।

পশ্চিমা ও ইউক্রেনীয় নেতারা ইউক্রেনে রুশ আক্রমণকে রাশিয়ার সাম্রাজ্যবাদী ভূমি দখল হিসেবে উল্লেখ করেছেন। পশ্চিমারা দাবি করে আসছে, রাশিয়াকে ধ্বংস করার কোনও পরিকল্পনা তাদের নেই। অন্যদিকে রাশিয়া বলে আসছে, তারা ন্যাটোর কোনও সদস্য রাষ্ট্রকে আক্রমণের পরিকল্পনা করছে না।  

People are also reading