হোম পিছনে ফিরে যান

লেবানন ও ইরাক থেকে ইসরায়েলে হামলা

rtvonline.com 2 দিন আগে
লেবানন ও ইরাক থেকে ইসরায়েলে হামলা

হামাস নির্মূলের নামে ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনের ৯ মাস হতে চলল। নির্বিচার এ আগ্রাসন থামাতে জাতিসংঘ কিংবা পরম মিত্র যুক্তরাষ্ট্র, কারও কথাতেই কর্ণপাত করছে না দখলদার রাষ্ট্রটির শীর্ষ নেতৃত্ব। ফলশ্রুতিতে ক্রমেই অস্থিতিশীল হয়ে উঠছে মধ্যপ্রাচ্য পরিস্থিতি। সবশেষ ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলো লক্ষ্য করে লেবানন ও ইরাক থেকে হামলার খবর পাওয়া গেছে একই দিনে।

এর মধ্যে লেবানন থেকে সেখানকার ইসলামি প্রতিরোধ আন্দোলন সংগঠন হিজবুল্লাহর ড্রোন হামলায় ইসরায়েলের ১৮ সেনা আহত হয়েছেন বলে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইসরায়েল। আহত সেনাদের মধ্যে একজনের অবস্থা গুরুতর বলে জানা গেছে।

রোববার (৩০ জুন) এই হামলা চালানো হয় বলে নিশ্চিত করেছে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ)। টাইমস অব ইসরায়েলের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রোববার বিকেলে গ্যালিলি এবং উত্তর গোলানে একাধিক ড্রোন পাঠায় হিজবুল্লাহ। এর মধ্যে বিস্ফোরক বোঝাই একটি ড্রোন মেরোম গোলান অঞ্চলে আঘাত হানে। এতে ১৮ সেনাসদস্য আহত হয়। তাদের মধ্যে একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, সকালে লেবাননে ইসরায়েলি বাহিনীর হামলার পাল্টা জবাব দিতেই হিজবুল্লাহ এই হামলা চালিয়েছে বলে জানিয়েছে। বিস্ফোরক বোঝাই ড্রোন দিয়ে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর একটি অবকাঠামোতে এ হামলা চালানো হয়েছে।

একইদিন লোহিত সাগরের তীরে অবস্থিত ইলা নামে ইসরায়েলের আরেকটি শহরে হামলা চালানো হয়েছে ইরাক থেকে। দ্য ইসলামিক রেজিসটেন্স নামের একটি সংগঠন এ হামলার দায় স্বীকার করেছে। খবর আল জাজিরার।

এর আগেও ইসরায়েলের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা লক্ষ্য করে ড্রোন হামলা চালিয়েছে ইসলামিক রেজিসটেন্স। জুনের শুরুর দিকে এসব হামলা চালানো হয়। সে সময় সংগঠনটি জানায় যে, তারা দখলদার ইসরায়েলের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলোকে ধ্বংস করে দেবে। গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর হামলাকে কেন্দ্র করেই এসব হামলা চালানো হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এ বিষয়ে বিস্তারিত আর কোনো তথ্য জানা যায়নি।

উল্লেখ্য, গত বছরের ৭ অক্টোবর হামাসের এক হামলার প্রেক্ষিতে ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায় সামরিক অভিযান শুরু করে ইসরায়েল। ৯ মাস হতে চলল, হামাস নির্মূলের নামে গাজার নিরপরাধ মানুষের ওপর নির্বিচার হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েলি সেনারা। এ পর্যন্ত ৩৮ হাজারেরও বেশি সাধারণ ফিলিস্তিনি প্রাণ হারিয়েছে ইসরায়েলের আগ্রাসনের শিকার হয়ে। অনতিবিলম্বে গাজা ভূখণ্ডে ‘যুদ্ধবিরতি’ দিতে ইসরায়েলের প্রতি বারবার আহ্বান জানিয়ে আসছে জাতিসংঘ ও বিশ্বের বিভিন্ন রাষ্ট্র। কিন্তু সেদিকে কোনো কর্ণপাত করছে না ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ও তার সরকার। এমনকি নিজেদের পরম মিত্র মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকেও এক্ষেত্রে তোয়াক্কা করছে না দখলদার রাষ্ট্রটি।

এদিকে গাজায় আগ্রাসনের প্রতিক্রিয়ায় প্রতিদিনই ইসরায়েলি সেনাদের সঙ্গে সংঘাতে জড়াচ্ছে ইরান সমর্থিত বিভিন্ন সংগঠন ও হামাসের মিত্র গোষ্ঠীগুলো। ইয়েমেন, লেবানন এবং ইরান থেকে ইসরায়েলের বিভিন্ন লক্ষ্যে হামলা চালাচ্ছে সংগঠনগুলো। গাজায় নিয়মিত অভিযানের পাশাপাশি এসব দেশেও হামলা চালানো হচ্ছে ইসরায়েলের পক্ষ থেকে।

সম্প্রতি হামলার লক্ষ্যবস্তু চিহ্নিত করে ইসরায়েলি বাহিনীর গুরুত্বপূর্ণ ও স্পর্শকাতর বিভিন্ন স্থাপনার ভিডিও ফুটেজ প্রকাশ করেছে হিজবুল্লাহ। এসব ফুটেজে যেসব গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাকে চিহ্নিত করা হয়েছে তার মধ্যে রয়েছে নেগেভ মরুভূমিতে অবস্থিত ইসরায়েলের দিমোনা পরমাণু চুল্লি, তেল আবিবের বেন গুরিয়ন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এবং নেভাতিম বিমানঘাঁটি। এর বাইরে আরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা রয়েছে যার মধ্যে রয়েছে হাকিরিয়া কমপ্লেক্স। সেখানে রয়েছে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর জেনারেল স্টাফ এবং অনেক শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তাদের আবাসস্থল। এছাড়া রয়েছে রামাত ডেভিড বিমান ঘাঁটি এবং লেবানন উপকূলের কারিশ গ্যাসক্ষেত্রও।

People are also reading