জব্দ ব্রাহমা জাতের গরুগুলো কীভাবে বিক্রি করলো সাদিক অ্যাগ্রো
তিন বছর আগে যুক্তরাষ্ট্র থেকে অবৈধভাবে আমদানি করা ব্রাহমা জাতের জব্দ ১৫টি গরুর তথ্য অনুসন্ধানে ঢাকার সাভারের কেন্দ্রীয় গো-প্রজনন ও দুগ্ধ খামারে অভিযান চালিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। সোমবার দুপুরে (১ জুলাই) বিভিন্ন অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগে এ অনুসন্ধান চালায় দুদকের নয় সদস্যের একটি দল।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত রমজান মাস উপলক্ষে সুলভ মূল্যের মাংস বিক্রির জন্য জব্দ করা ওই ব্রাহমা জাতের গরুর মাংস বিক্রির উদ্যোগ নেওয়া হয়। তবে নিলামে কিনে ‘উচ্চবংশীয় গরু’ বলে বিক্রি করেন আলোচিত ‘সাদিক অ্যাগ্রো’র স্বত্বাধিকারী মোহাম্মদ ইমরান হোসেন। নিষিদ্ধ ব্রাহমা জাতের গরুগুলো তিন বছর আগে সাদিক অ্যাগ্রোর নামে আমদানি করা হয়েছিল। সেগুলো জব্দ করার পর আবারও একই প্রতিষ্ঠান ওই গরু নিয়ে গিয়ে বিক্রি করলো কীভাবে– এমন প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে অভিযান চালায় দুদক।
অভিযোগ রয়েছে, কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে কেন্দ্রীয় গো-প্রজনন ও দুগ্ধ খামারে জব্দ থাকা গরুগুলোর দায়িত্ব নেন সাদিক অ্যাগ্রোর ইমরান। গরুগুলো জবাই করে রমজান মাসে ২৮০ টাকা মূল্যে মাংস বিক্রি করার শর্তে তাকে দেওয়া হয়েছিল। তবে ইমরান সুলভ মূল্যে মাংস বিক্রি না করে গরুগুলো তার খামারে রেখে দেন। এ ছাড়াও নিষিদ্ধ ব্রাহমা গরু কেন্দ্রীয় গো-প্রজনন ও দুগ্ধ খামার থেকে সংগ্রহ করে কোটি টাকা দাম হাঁকিয়ে বাজারে তোলেন বলে অভিযোগ ওঠে।
এ বিষয়ে দুদকের সহকারী পরিচালক আবুল কালাম আজাদ এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘২০২১ সালে অবৈধভাবে ১৮টি ব্রাহমা জাতের গরু আমদানি হয়। সেগুলো এতদিন পরিচর্যার জন্য কেন্দ্রীয় গো-প্রজনন ও দুগ্ধ খামারে রাখা হয়। তবে গত এপ্রিলে (রমজান মাসে) কয়েকটি শর্ত দিয়ে সাদিক অ্যাগ্রোর স্বত্বাধিকারী ইমরান গরুগুলো জবাই করে বিক্রির জন্য দায়িত্ব নেন। কিন্তু তার বিরুদ্ধে কোরবানি ঈদে একই রকমের গরু বিক্রির অভিযোগ পাওয়া যায়। গরুগুলো জবাই না করে প্রদর্শন করে বিক্রি করা হয়েছে কিনা খতিয়ে দেখতে এই অনুসন্ধান চালানো হচ্ছে। এই সাদিক অ্যাগ্রোর সঙ্গে এখানকার কোনও কর্মকর্তা ও কর্মচারী জড়িত কিনা তাও দেখা হচ্ছে। ২০২১ সালে যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি করা ব্রাহমা জাতের ১৮টি গরু জব্দ করে ঢাকা কাস্টম হাউস। সেগুলোর মধ্যে তিনটি মারা যায়। বাকি ১৫টি গরু লালন-পালনের জন্য দায়িত্ব পায় কেন্দ্রীয় গো-প্রজনন ও দুগ্ধ খামার। কিন্তু ইমরান এই জাতের নিষিদ্ধ গরু ২০২৩ ও ২০২৪ সালের প্রাণিসম্পদ সেবা সপ্তাহ ও প্রদর্শনীতে প্রকাশ্যে উঠিয়েছিলেন।’
এর আগে ২০২১ সালে অবৈধভাবে নিয়ে আসা ১৮টি ব্রাহমা জাতের গরু ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ধরা পড়ে। সেগুলো বাজেয়াপ্ত করে সরকার। রাখা হয় সাভারের সরকারি ডেইরি ফার্মে।