আরসার কিলিং গ্রুপ কমান্ডার কামালসহ দুই সহযোগী গ্রেপ্তার
সাম্প্রতিক সময়ে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বিভিন্ন হত্যাকাণ্ডের মূলহোতা, আরসার জোন ও কিলিং গ্রুপ কমান্ডার হাফেজ কামাল ও তার দুই সহযোগীকে বিদেশী রাইফেল ও দেশীয় অস্ত্র-গুলিসহ উখিয়ার ৪ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব-১৫।
মঙ্গলবার (২ জুলাই) উখিয়ার পালংখালী রোহিঙ্গা বাজারের মরাগাছতলায় এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃত আসামিরা হলেন, উখিয়া মধুছড়া ক্যাম্প-৪ এর ডি/৯ ব্লকের নজির আহম্মদের ছেলে হাফেজ কামাল (৩৫), তার দেহরক্ষী ডি/৩ ব্লকের মোহাম্মদ ইসলামের ছেলে আনসার উল্লাহ (২০) ও ক্যাম্প-১৮ এর ৮ ব্লকের বলি আমিনের ছেলে মোহাম্মদ সাইফুল।
এসময় তাদের কাছ থেকে একটি বিদেশী জি-৩ রাইফেল, ১টি দেশীয় তৈরী এলজি এবং ৭ রাউন্ড গুলি ও ১টি খালি কার্তুজ উদ্ধার করা হয়।
বুধবার (৩ জুলাই) দুপুরে প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানান র্যাব-১৫ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল এইচ এম সাজ্জাদ হোসেন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ১০ পদাতিক ডিভিশনের গোয়েন্দা শাখা ও রাষ্ট্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার তথ্যের ভিত্তিতে র্যাব আরসার জোন ও কিলিং কমান্ডার হাফেজ কামালের অবস্থান সম্পর্কে তথ্য পায়।
এই তথ্যের ভিত্তিতে মঙ্গলবার সাড়ে ৩টার দিকে উখিয়ার পালংখালীর রোহিঙ্গা বাজারের নিকটস্থ মরাগাছতলায় অভিযান পরিচালনা করে হাফেজ কামালের অন্যতম সহযোগী মোহাম্মদ সাইফুলকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়। পরবর্তীতে সাইফুল হতে প্রাপ্ত তথ্যের সূত্র ধরে র্যাবের চৌকস আভিযানিক দল ৬ টার দিকে উখিয়ার ৪ নং রোহিঙ্গা ক্যাম্পে পুনরায় অভিযান পরিচালনা করে।
এ সময় র্যাবের উপস্থিতি বুঝতে পেরে পালানোর চেষ্টাকালে আরসার জোন কমান্ডার হাফেজ কামাল ও তার দেহরক্ষী আনসার উল্লাহকে গ্রেপ্তার করা হয়। এসময় তাদের কাছ থেকে বিদেশী জি-৩ রাইফেল ও দেশীয় অস্ত্র-গুলি উদ্ধার করা হয়।
তিনি আরও বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা সন্ত্রাসী সংগঠন আরসা’র সাথে সংশ্লিষ্ট থেকে খুন ও অপহরণসহ বিভিন্ন সন্ত্রাসী কার্যক্রমে জড়িত থাকার বিষয়টি স্বীকার করেছেন।
গ্রেপ্তারকৃত আরসার সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন বলে র্যবের এই কর্মকর্তা।
র্যাব আরও জানায়, রোহিঙ্গা ক্যাম্পের মূর্তিমান আতঙ্কের নাম আরসা সন্ত্রাসী গোষ্ঠী। এই সন্ত্রাসী সংগঠন রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আধিপত্য বিস্তার ও প্রত্যাবাসনে বিঘ্ন ঘটানো, খুন, অপহরণ, ডাকাতি, মাদক, চাঁদাবাজি, অগ্নি-সংযোগসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড পরিচালনা করছে।
র্যাব বিভিন্ন সময়ে সন্ত্রাসবিরোধী অভিযান পরিচালনা করে আরসার সামরিক কমান্ডার হাফেজ নূর মোহাম্মদ, অর্থ সম্পাদক মাওলানা মোহাম্মদ ইউনুস, গান কমান্ডার রহিমুল্লাহ প্রকাশ মুছা, অর্থ সমন্বয়ক মোহাম্মদ এরশাদ প্রকাশ নোমান চৌধুরী ও আবু তৈয়ব, কিলার গ্রুপের প্রধান নূর কামাল প্রকাশ সমিউদ্দিন, ইন্টেলিজেন্স সেলের কমান্ডার ওসমান গনি র্যাবের হাতে গ্রেপ্তার হয়।
এছাড়াও লজিস্টিক শাখার প্রধান, গান গ্রুপের প্রধান, প্রধান সমন্বয়ক, অর্থ শাখার প্রধান, আরসা প্রধান নেতা আতাউল্লাহর দেহরক্ষী আকিজ, মৌলভী অলি আকিজ এবং গান গ্রুপ কমান্ডার জাকারিয়াসহ সর্বমোট ১১৮ জন আরসা সন্ত্রাসীকে র্যাব গ্রেপ্তার করে এবং তাদের থেকে ৫৩.৭১ কেজি বিস্ফোরক, ৫টি গ্রেনেড, ৩টি রাইফেল গ্রেনেড, ১০টি দেশীয় হ্যান্ড গ্রেনেড, ১৫টি বিদেশি আগ্নেয়াস্ত্র, ৫৭টি দেশীয় আগ্নেয়াস্ত্র, ১৮৩ রাউন্ড গুলি, ৬৭ রাউন্ড খালি খোসা, ৪টি হাত বোমা, ৪টি আইডি ও ৪৮টি ককটেল উদ্ধার করা হয়।