হোম পিছনে ফিরে যান

পশ্চিমবঙ্গ জয়ে এবার মোদির ত্রিপুরী সেনা!

banglatribune.com 2024/5/18
লোকসভা নির্বাচন। ছবি: সংগৃহীত
© 2024 Bangla Tribune Online Media

পশ্চিমবঙ্গ জয়ে এবার অন্য রাজ্যের নেতাদের ওপর নয়, ত্রিপুরার বাংলা ভাষী নেতাদের ওপরই আস্থা রাখছে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। তাই ত্রিপুরার দুইটি লোকসভা নির্বাচন শেষ করেই পশ্চিমবঙ্গ দখলে ঝাঁপিয়ে পড়ছে মোদির ত্রিপুরী সেনা!

২০১৯ সালের লোকসভা ভোটের সময় অন্য রাজ্যের নেতারা পশ্চিমবঙ্গে ঘাঁটি গেড়ে ছিলেন। ওইসব নেতাদের ভাষা ও আদবকায়দা নিয়ে কটাক্ষ করে বিজেপি বহিরাগতদের দল বলে প্রচার করতো শাসকদল তৃণমূল।

২০২১ সালের বিধানসভা ভোটে ‘বাংলা নিজের মেয়েকে চায়’ বলে বিজেপির বিরুদ্ধে স্লোগানও হাজির করেছিল তৃণমূল। যা নিয়ে বাংলার পদ্ম শিবিরের অভ্যন্তরেও কমবেশি সমালোচনা হয়েছিল। এবার এই তকমা দূর করতে মোক্ষম চাল দিয়েছেন শাহ-নাড্ডারা।

উত্তরপূর্ব ভারতের বাঙালি অধ্যুষিত রাজ্য ত্রিপুরায় লোকসভা নির্বাচন শেষ। রাজ্যের লোকসভার দুটি আসনেই জয়ে ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী ক্ষমতাসীন বিজেপি। বিশেষ করে ত্রিপুরার বর্তমান রাজা প্রদ্যোত মাণিক্য দেব বর্মনের নেতৃত্বে ‘ত্রিপ্রা মোথা’-এর সঙ্গে জোট করার পরে পূর্ব আসন জয়ের প্রতি আত্মবিশ্বাসী বিজেপি। অপর আসনটিতে আবার ত্রিপুরা রাজবংশের কৃতি সিং গেরুয়া দলের প্রার্থী হয়ে ভোটে লড়ছেন।

তাই এখন ত্রিপুরা বিজেপির পরবর্তী মিশন পশ্চিমবঙ্গ। বাঙালি অধ্যুষিত ত্রিপুরা থেকে একঝাঁক বিজেপি নেতাকে পশ্চিমবঙ্গের ভোটের আসরে নামাতে চলেছেন।

বিজেপি মনে করছে, ত্রিপুরা ও পশ্চিমবঙ্গ উভয়েই একই রকম সাংস্কৃতিক ও ভাষার শিকড় রয়েছে। সুশাসন ও উন্নয়নে বিজেপির সাফল্য রাজ্যের জনগণের জন্য একটি মডেল হতে পারে।

২০২৩ সালে ত্রিপুরা বিধানসভা নির্বাচনে ব্যর্থ হয় তৃণমূল। উত্তর-পূর্বের এই বাঙালি রাজ্যের জনগণ সম্পূর্ণভাবে প্রত্যাখ্যান করেছিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দলকে। বিজেপি’র আত্মবিশ্বাস, পশ্চিমবঙ্গের লোকসভা ভোটে প্রভাব ফেলতে সক্ষম হবেন ত্রিপুরার নেতারা।

জানা গেছে, লোকসভা নির্বাচনে পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির প্রচারের জন্য আসছেন ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী ডা. মানিক সাহাসহ প্রায় ৩০ জন নেতা। তাদের সঙ্গে থাকছেন ত্রিপুরার একাধিক বিধায়ক ও মন্ত্রীরা।

ত্রিপুরায় বিজেপি’র রাজ্য সভাপতি রাজীব ভট্টাচার্য টেলিফোনে বলেন, আমরা এখন ত্রিপুরায় দুটি লোকসভা আসনে ব্যাপক ভোটে জেতার জন্য অপেক্ষা করছি। ত্রিপুরার ভোট শেষ হওয়ার পর এবার আমাদের মিশন পশ্চিমবঙ্গ। দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব আমাদের পশ্চিমবঙ্গে প্রচার চালানোর দায়িত্ব দিয়েছেন।

তিনি আরও বলেন, আমাদের মুখ্যমন্ত্রী ডা. মানিক সাহাসহ মন্ত্রী-বিধায়কদের একটি দল বাংলায় যাচ্ছেন। কেউ কেই ইতোমধ্যেই চলে গিয়েছেন। বাকিরা কয়েকদিনের মধ্যেই যাবেন। আমাদের মূল লক্ষ্য বাংলায় দলকে শক্তিশালী করার পাশাপাশি বিজেপির জয়কে নিশ্চিত করা।

তিনি বলেন, জেপি নাড্ডার নির্দেশেই আমরা এই কাজ করছি। আমাদের নেতারা প্রচারসহ বিভিন্ন সাংগঠনিক কর্মসূচিতে থাকবেন। বাংলায় বিজেপির জয়কে নিশ্চিত করতে সাহায্য করবেন। আমরা বাংলায় সিপিএমের দীর্ঘ ৩৪ বছর আর বর্তমানে তৃণমূলের প্রশাসনের অপশাসনগুলো তুলে ধরব। এই দুই শাসনেরই মিল রয়েছে। বাংলায় শিল্পের পতন, কেন্দ্রীয় প্রকল্পগুলোর রূপায়ণে মমতা সরকারের বাধার বিষয়গুলোকে আমরা প্রচারে সময় সামনে আনব।

তিনি আরও বলেন, বাংলার মানুষকে জানাব, কীভাবে ত্রিপুরায় আমরা বাম-শাসনের অবসান ঘটিয়ে আজ মোদিজির নির্দেশিত পথে সমৃদ্ধির দিকে এগিয়ে যাচ্ছি।

ত্রিপুরার রাজ্য সভাপতি বলেন, বাংলার প্রাথমিক সমস্যা হল হিংসা। তৃণমূল সাধারণ মানুষের মনে আতঙ্ক তৈরি করেছে। আমরা জানাব, কীভাবে হিংসার রাজনীতি দূর করে ত্রিপুরায় আজ শান্তি এসেছে। আমরা ত্রিপুরা বাঙালিরা আশা করছি, এবার বাংলার মানুষ পরিবর্তনের পথেই হাঁটবেন। তারা বাংলায় বিজেপির জয়কে নিশ্চিত করবেন।

People are also reading