হোম পিছনে ফিরে যান

যুদ্ধ বন্ধে আরও ইউক্রেনীয় ভূখণ্ডের দাবি পুতিনের, কিয়েভের প্রত্যাখ্যান

banglatribune.com 2024/6/26

রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেছেন, ইউক্রেন যদি ন্যাটোতে যোগদানের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসে এবং মস্কোর দাবিকৃত চারটি প্রদেশের সব ভূখণ্ড হস্তান্তরে রাজি হয় তাহলে যুদ্ধ বন্ধ করবে রাশিয়া। শুক্রবার (১৪ জুন) তিনি যুদ্ধ বন্ধের এই শর্ত হাজির করেছেন। তবে কিয়েভ এই দাবি প্রত্যাখ্যান করে বলেছে, এটি আত্মসমর্পণের শামিল। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে। 

সুইজারল্যান্ডে ইউক্রেন নিয়ে শান্তি সম্মেলনের পূর্বে পুতিন যেসব শর্ত হাজির করেছেন তা ইউক্রেনের দাবির সঙ্গে সাংঘর্ষিক। মস্কো যুদ্ধে ভালো অবস্থানে রয়েছে বলে ক্রেমলিনের ক্রমবর্ধমান আত্মবিশ্বাস প্রতিফলিত হচ্ছে এসব শর্তের মাধ্যমে। শান্তি সম্মেলনে রাশিয়াকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি।

২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেন আক্রমণে সেনাদের নির্দেশ দেওয়ার সময় পুতিন ইউক্রেনের বেসামরিকীকরণের দাবি করেছিলেন। সেই দাবিতে এখনও তিনি অটল রয়েছেন। রুশ প্রেসিডেন্ট বলেছেন, পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার অবসানকে অবশ্যই শান্তি চুক্তির মধ্যে অন্তর্ভুক্ত হতে হবে। এছাড়া ইউক্রেনকে নাৎসিমুক্তকরণের দাবির পুনরাবৃত্তি করেছেন তিনি। কিয়েভ মনে করে ইউক্রেনীয় নেতৃত্বের বিরুদ্ধে এটি অপবাদ।

ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্টের উপদেষ্টা মিখাইলো পডোলিয়াক রয়টার্সকে বলেছেন, পুতিনের শর্ত হচ্ছে যুদ্ধে হার স্বীকার করা এবং সার্বভৌমত্ব তুলে দেওয়া। এই প্রস্তাবের ভিত্তিতে কোনও সমঝোতার সম্ভাবনা নেই।

সুইজারল্যান্ডের সম্মেলনকে লক্ষ্য করে পুতিন এই ভাষণ দিয়েছেন তা স্পষ্ট। সম্মেলনে যুদ্ধ বন্ধে ইউক্রেনের প্রতি আন্তর্জাতিক সমর্থন তুলে ধরতে চাইছেন ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি।

ভাষণে পুতিন বলেছেন, শর্তগুলো খুব সাধারণ। পুরো ডনেস্ক, লুহানস্ক, খেরসন ও জাপোরিজ্জিয়া থেকে ইউক্রেনকে পুরোপুরি সেনা প্রত্যাহার করতে হবে।

২০২২ সালে রাশিয়া এই চারটি অঞ্চলকে নিজেদের ভূখণ্ড হিসেবে ঘোষণা করেছে। যদিও এই চারটি অঞ্চলের আংশিক ভূখণ্ড তাদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। মস্কোর এই উদ্যোগ জাতিসংঘের বেশিরভাগ দেশের কাছে বেআইনি। এর আগে ২০১৪ সালে ইউক্রেনের ক্রিমিয়া দখল করেছিল রাশিয়া।

পুতিন বলেছেন, কিয়েভে তারা যখন ঘোষণা দেবে এমন সিদ্ধান্তের জন্য তারা প্রস্তুত এবং অঞ্চলগুলো থেকে প্রকৃত অর্থে সেনা প্রত্যাহার শুরু হবে এবং আনুষ্ঠানিকভাবে ন্যাটোতে যোগদানের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করবে, আমাদের পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিকভাবে যুদ্ধবিরতির নির্দেশ কার্যকর এবং আলোচনা শুরু হবে।

তিনি বলেছেন, আমি আবারও বলছি আমরা তাৎক্ষণিকভাবে তা করব। স্বাভাবিকভাবে ইমরা ইউক্রেনীয় সেনাদের নিরাপদ প্রত্যাহারের নিশ্চয়তা দেব।

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ তৃতীয় বছরে চলমান। এখন পর্যন্ত ইউক্রেনের প্রায় এক-পঞ্চমাংশ ভূখণ্ড রাশিয়া দখল করেছে। ইউক্রেন বলে আসছে, রুশ সেনাদের পুরোপুরি প্রত্যাহার ও দখলকৃত ভূখণ্ড ফেরত পাওয়ার ভিত্তিতে শান্তি অর্জন হতে পারে। 

সুইজারল্যান্ডে অনুষ্ঠেয় চলতি সপ্তাহের সম্মেলনে বিশ্বের ৯০টির বেশি দেশ ও সংস্থা প্রতিনিধি পাঠাতে পারে। ধারণা করা হচ্ছে, সম্মেলনে ভূখণ্ডগত বিষয়কে এগিয়ে খাদ্য নিরাপত্তা ও ইউক্রেনে পারমাণবিক নিরাপত্তার ওপর আলোকপাত করা হতে পারে।

ক্রেমলিন বলেছেন, রাশিয়ার প্রতিনিধিত্ব ছাড়া সম্মেলনটি অকার্যকর বলে প্রমাণিত হবে।

People are also reading