যুদ্ধ যখন লেবাননে বাংলাদেশি যোদ্ধাদের কবরের ওপর
উত্তর ইসরায়েল ও দক্ষিণ লেবাননে উত্তেজনা বাড়ার মুখে সবার মনে প্রশ্ন, মধ্যপ্রাচ্যে সম্ভাব্য আরেকটি যুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান কী হবে? হিজবুল্লাহকে আগে থেকে তারা ‘সন্ত্রাসী’ সংগঠন মনে করে। সেই সূত্রে নসরুল্লাহর পতনই চায় যুক্তরাষ্ট্র। কিন্তু ইসরায়েলের দুই ফ্রন্টে যুদ্ধ মানেই তাদের বেশি বেশি সহায়তা দেওয়ার প্রশ্ন আসবে।
গাজা যুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র তেল আবিবের সরকারকে ক্রমাগত যেভাবে সহায়তা দিচ্ছে, তাতে নিজ দেশের করদাতাদের মধ্যে মৃদু আকারে হলেও প্রশ্ন আছে। রাশিয়ার বিরুদ্ধে ইউক্রেনেরও ভরসা এই মানুষদের পকেট। এত দিকে বন্ধুরাষ্ট্রগুলোর যুদ্ধের খরচ জোগানো সহজ ব্যাপার নয়। এতে ওয়াশিংটন বৈশ্বিকভাবে ধীরে ধীরে খলনায়কে পরিণত হচ্ছে। কিন্তু অক্টোবরে ইসরায়েলের ভেতরে হামাস যোদ্ধাদের অভিযান দেখে যুক্তরাষ্ট্র হিজবুল্লাহকে নিয়েও দুশ্চিন্তায় আছে। ইসরায়েল যে অজেয় কোনো সামরিক শক্তি নয়, হামাস সেটা প্রমাণ করেছে। হিজবুল্লাহ আগামী দিনে সেটা আরেকবার প্রমাণ করতে পারে।
এ বছরের জানুয়ারিতে আন্তর্জাতিক মেডিকেল জার্নাল ‘ল্যানসেট’ ৭১০ জন ইসরায়েলি থেকে নেওয়া তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে এক গবেষণাপত্র প্রকাশ করে দেখিয়েছে, হামাসের অক্টোবর অভিযানের পাল্টা হিসেবে গাজায় হাজার হাজার মানুষ খুন করা হলেও ইসরায়েলিরা এখনো এক গণট্রমায় আক্রান্ত। এখানকার সমাজজীবনে ৭ অক্টোবর দীর্ঘমেয়াদি এক ‘ডিপ্রেশন’ তৈরি করেছে।
হিজবুল্লাহ উত্তর ইসরায়েলের দিকে হামাসের মতো অভিযান চালিয়ে ইসরায়েলিদের নিরাপত্তাহীনতার বোধ আরও বাড়িয়ে তুলতে পারে। এর আরেকটা পার্শ্বফল হতে পারে মধ্যপ্রাচ্যে ইরানের নৈতিক প্রভাব বেড়ে যাওয়া।
এ রকম বিষয়গুলো বিবেচনায় নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের নীতিনির্ধারক মহলের বড় অংশ এখনই হিজবুল্লাহর ওপর সর্বাত্মক আক্রমণ চাইছে না। বরং লেবানন অভিযানের আগে গাজা যুদ্ধ বন্ধে একটি চুক্তিতে পৌঁছাতে চেষ্টায় আছে তারা। হিজবুল্লাহও বলছে, গাজায় আগ্রাসন বন্ধ হলেই কেবল তারা উত্তর ইসরায়েলের মানুষকে শান্তিতে থাকতে দেবে। কিন্তু গাজা যুদ্ধ অবসানের চাবিকাঠি খানিকটা রয়ে গেছে ইরানের হাতে।