হোম পিছনে ফিরে যান

লোডশেডিংয়ে বিপর্যস্ত গ্রামাঞ্চল, বিপাকে শিক্ষার্থীরা

dainikshiksha.com 2 দিন আগে
এইচএসসি পরীক্ষা শুরু রোববার - dainik shiksha

সারা দেশে তীব্র গরম ও লোডশেডিংয়ে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন। জেলা শহরগুলোতে লোডশেডিং তুলনামূলক কম হলেও গ্রামাঞ্চলে ঘণ্টার পর ঘণ্টা থাকছে না বিদ্যুৎ। এতে একদিকে তীব্র গরম অপরদিকে বিদ্যুৎ না থাকায় চরম কষ্টে আছে মানুষ। বিদ্যুৎ-সংশ্লিষ্টদের দাবি, চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কম পাওয়ায় লোডশেডিং দিতে হচ্ছে।

কামারখন্দ (সিরাজগঞ্জ) সংবাদদাতা জানান, সিরাজগঞ্জের কামারখন্দে তীব্র গরম আর বিদ্যুতের ঘন ঘন লোডশেডিংয়ে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে বাসিন্দারা। রাতের বেশি সময় বিদ্যুৎ না থাকায় তীব্র গরমে অনেকে অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। সিরাজগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ এর কামারখন্দ সাব জোনাল অফিসের তথ্য মতে, উপজেলায় দিনে আট মেগাওয়াট বিদ্যুতের চাহিদা থাকলেও বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে পাঁচ মেগাওয়াট অপরদিকে রাতে ১৩ মেগাওয়াট বিদ্যুতের চাহিদা থাকলেও বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে মাত্র ছয় মেগাওয়াট বিদ্যুৎ। দিনের তুলনায় রাতে ভয়াবহ লোডশেডিং দেওয়া হচ্ছে। এতে একদিকে তীব্র গরম অপরদিকে রাতের বেশি সময় বিদ্যুত্ না থাকায় চরম কষ্টে আছেন উপজেলার বাসিন্দারা।

উপজেলা চর কামারখন্দ গ্রামের বাসিন্দা আকরাম হোসেন জানান, আমি অসুস্থ মানুষ। প্রতিদিন উচ্চ রক্তচাপসহ ঘুমের ওষুধ সেবন করে ঘুমাতে হয়। কিন্তু গত কয়েক দিন হলো একদিকে তীব্র গরম অন্যদিকে রাতের বেশি সময় বিদ্যুত্ না থাকায় ঠিকমতো ঘুমাতে না পেরে অসুস্থ হয়ে পড়েছি। সিরাজগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ এর জেনারেল ম্যানেজার জাকির হোসেন জানান, দিনের বেলায় বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইনের বিভিন্ন অংশে কাজ করার কারণে সংশ্লিষ্ট এলাকায় বিদ্যুৎ সাময়িক বন্ধ থাকে। আর রাতে ঘন ঘন লোডশেডিংয়ের ব্যাপারে আমার জানা নেই।

নাঙ্গলকোট (কুমিল্লা) সংবাদদাতা জানান, কুমিল্লার নাঙ্গলকোটে বিদ্যুতের ভয়াবহ লোডশেডিংয়ে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। প্রতিদিন অন্তত ১৮ ঘণ্টা এলাকাবাসীকে বিদ্যুৎহীন থাকতে হচ্ছে। লোডশেডিংয়ের পাশাপাশি তীব্র তাপদাহেও মানুষের নাভিশ্বাস উঠেছে। ঘণ্টার পর ঘণ্টা বিদ্যুৎ না থাকায় বাসাবাড়ির জিনিসপত্র নষ্ট হওয়াসহ মানুষজনকে তীব্র কষ্ট ভোগ করতে হচ্ছে। রাতের অধিকাংশ সময় বিদ্যুৎ না থাকার ফলে নির্ঘুম রাত কাটাতে হচ্ছে। ফলে এইচএসসি পরীক্ষার্থীসহ শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ায় চরম বিঘ্ন ঘটছে।

তীব্র লোডশেডিংয়ের কারণে উপজেলার পৌর সদরসহ বিভিন্ন ইউনিয়নের হাটবাজারগুলোতে ব্যবসায়ীদের লোকসান গুনতে হচ্ছে। করাত কল, ধান, আটাসহ মসলা ভাঙার মিলগুলো বন্ধ রয়েছে। নিয়মিত বিদ্যুত্ না থাকায় বাসাবাড়ি ও দোকানপাটে রক্ষিত ফ্রিজের মালামাল নষ্ট হয়ে গেছে বলে অনেকে অভিযোগ করেন। পল্লী বিদ্যুৎ অফিস সূত্র মতে, এখানে বিদ্যুতের চাহিদা রয়েছে ৩০ মেগাওয়াট। পাওয়া যাচ্ছে মাত্র ১৫ মেগাওয়াট বিদ্যুত্।

উপজেলার অষ্টগ্রামের বিদ্যুত্ গ্রহক মফিজুর রহমান ভেন্টার বলেন, বিদ্যুতের ভয়াবহ লোডশেডিংয়ে জনজীবন বিপর্যন্ত হয়ে পড়েছে। বিদ্যুত্ না থাকায় বাসাবাড়ি ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের জিনিসপত্র নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। প্রচণ্ড তাপদাহের কারণে মানুষজন রাতে ঘুমাতে পারছে না। শিক্ষার্থী আবদুল্লাহ বলেন, প্রচণ্ড গরমের কারণে পড়ার জন্য টেবিলে বসতে কষ্ট হয়। বিদ্যুত্ না থাকার কারণে রাতে ঘুমাতেও পারি না।

কুমিল্লা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-৪ নাঙ্গলকোটের ডি জি এম কামাল পাশা বলেন, কয়লা সংকটের কারণে কয়েকটি কয়লাচালিত বিদ্যুত্ প্লান্ট বন্ধ থাকায় লোডশেডিং হচ্ছে। নাঙ্গলকোটে বিদ্যুতের চাহিদা ৩০ মেগাওয়াটের বিপরীতে পাওয়া যাচ্ছে ১৫ মেগাওয়াট। তিনি আশা করেন, আগামী কয়েক দিনের মধ্যে বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক হবে।

People are also reading