হোম পিছনে ফিরে যান

যৌতুকের দাবিতে স্ত্রীকে হত্যা মামলায় স্বামীর মৃত্যুদণ্ড

jaijaidinbd.com 2024/7/5
ছবি-যায়যায়দিন

যৌতুকের দাবিতে স্ত্রীকে হত্যা মামলায় স্বামী মৃত্যুদন্ড যৌতুকের দাবীতে স্ত্রীকে হত্যার মামলায় স্বামী মোঃ কায়েদে আযমকে মৃত্যুদন্ড দিয়েছে আদালত।

বুধবার খুলনার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল ৩ এর বিচারক আব্দুস সালাম খান এই আদেশ দেন। একই সাথে এই মামলার অপর ছয় আসামীকে খালাস দিয়েছে আদালত।

খালাস প্রাপ্ত আসামীরা হলেন, মোঃ কায়েদী আজমের বাবা আবু তালেব গাজী, ভাই ইসরাফিল, ভাবী মাফিয়া খাতুন, বন্ধু মোঃ মনি, রজব আলী ও জহুরুল।

মামলার এজাহার থেকে জানাযায়, ১৯৯৯ সালে কয়রা উপজেলার ১নং ওয়ার্ডের আবু তালেব গাজীর ছেলে মোঃ কায়েদে আজম এর সাথে একই এলাকার ফজর ঢালীর মেয়ে নাজমা খাতুন এর বিবাহ হয়।

বিবাহের পর থেকে যৌতুকের দাবীতে নাজমা খাতুন এর উপর নির্যাতন চালাতো কায়েদী আজম ও তার পরিবারের সদস্যরা। এই নিয়ে এলাকায় গনমান্য ব্যাক্তিবর্গের সামনে বেশ কয়েকবার শালিসি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে নিজের ভুল শিকার করে ক্ষমা প্রার্থনা করে স্ট্যাম্পে লিখিত অঙ্গীকার করে কায়েদী আজম।

কিন্তু প্রতিবারই সে তার অঙ্গীকার নামা ভঙ্গ করে নাজমা খাতুন এর উপর নির্যাতন চালাতো। এ সময় তাদের এক পুত্র ও এক কন্যা সন্তানও জন্ম নেয়। ২০০৬ সালে কায়েদে আজম পরোকিয়া সম্পর্কে লিপ্ত হন। এই নিয়ে নাজমা খাতুন এর সাথে তার তীব্র গলোযোগ লেগে থাকতো।

এই বছরের সেপ্টেম্বর মাসের আট তারিখ বিকালে মোঃ কায়েদে আযম, তার তিন বন্ধু ও ভাই, ভাবী মিলে নাজমা খাতুনের উপর নির্যাতন চালিয়ে তাকে মেরে ফেলে। পরে ঘরের বাঁশের গলায় ফাঁস দিয়ে নাজমা খাতুন এর লাশ ঝুলিয়ে আত্মহত্যা বলে চালানোর চেষ্টা করে। তারা যখন নাজমা খাতুনের উপর নির্যাতন করছিলো তখন তাদের আট বছর বয়সের পুত্র গোলাম মোস্তফা বাড়ির বাইরে গিয়ে তার নানা ফজর ঢালীকে ডাকতে যায়।

রোজার মাস থাকায় তার নানা ইফতারির জন্য শসা কিনে গোলাম মোস্তফাকে বাসায় পাঠিয়ে দেয়, বলে সে একটু পরে আসতেছে। সে সময় শসা নিয়ে বাড়িতে এসে গোলাম মোস্তফা দেখতে পায় তার মায়ের লাশ ঘরের বাঁশের সাথে ঝুলিছে। বাড়িতে কেউ নেই সবাই পালিয়ে গেছে। তখন সে তার ছোট ১৪ মাস বয়সের শিশু বোন সারমিন আক্তারকে নিয়ে পুনরায় নানার কাছে যান ও তাকে ডেকে নিয়ে আসেন। নানা গোলাম মোস্তফাদের বাড়িতে এসে তার মেয়ের লাশ দেখতে পান।

পরে পুলিশ এসে লাশ উদ্ধার করে এবং ফজর ঢালীকে বাদী করে একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের করেন। পরবর্তীতে পুলিশ সুপারসহ বিভিন্ন স্থানে ঘুরে নারী ও শিশু নির্যাতন মামলা না করতে পেরে ২০০৬ সালের ২০ নভেম্বর নাজমা খাতুন এর মা মোছাঃ রাজিয়া খাতুন আদালতে মোঃ কায়েদী আযমসহ সাত আসামীর নাম উল্লেখ করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ এর ১১(ক) ও ৩০ ধারায় মামলা দায়ের করেন। এই মামলায় ১৭ স্বাক্ষীর মধ্য নয় স্বাক্ষী আদালতে সাক্ষ্য প্রদান করেন। পরে বিচার শেষে বুধবার আদালত মোঃ কায়েদী আজমকে ফাঁসি ও অন্য ছয় আসামীকে খালাস দেন।

যাযাদি/ এম

People are also reading