হোম পিছনে ফিরে যান

মালিকানা পরিবর্তনে ১৫ জুলাই পযন্ত সময় পেলো ইয়াকিন পলিমার

sharebazarnews.com 6 দিন আগে

নিজস্ব প্রতিবেদক : পুঁজিবাজারে প্রকৌশল খাতে তালিকাভুক্ত কোম্পানি ইয়াকিন পলিমার লিমিটেড নির্ধারিত সময়ে মালিকানা পরিবর্তন করতে পারেনি। এতে দ্বিতীয়বারের মতো সময় বাড়িয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। কমিশন সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

বিএসইসির শর্তানুসারে পিপি ওভেন ব্যাগ প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠানটির উদ্যোক্তা এবং পরিচালকদের হাতে থাকা শেয়ার ১৫ জুলাইয়ের মধ্যে নতুন মালিকদের কাছে হস্তান্তর করতে হবে। প্রতিষ্ঠানটির উদ্যোক্তা এবং পরিচালকদের হাতে ৩০ দশমিক ৫২ শতাংশ শেয়ার রয়েছে।

বিএসইসি সূত্রে জানা গেছে, নির্ধারিত সময়ে ইয়াকিন পলিমারের উদ্যোক্তা এবং পরিচালকদের হাতে থাকা শেয়ার নতুন মালিকানায় হস্তান্তর করতে ব্যর্থ হয়েছে। এজন্য দ্বিতীয় বারের মতো সময় বৃদ্ধি করা হয়েছে। এরপর আর সময় বৃদ্ধি করা হবে না। নতুন সময়ের মধ্যে শেয়ার হস্তান্তর করতে ব্যর্থ হলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। কারণ বিনিয়োগকারীরা কোম্পানিতে তাদের বিনিয়োগের বিপরীতে কোনো মুনাফা পাচ্ছে না।

তথ্য অনুযায়ী, ২০২২ সালের ১২ মে ইয়াকিন পলিমারের উদ্যোক্তা পরিচালকের ২ কোটি ২১ লাখ ৯৩ হাজার ৭৪৫ শেয়ার ক্যাপিটা প্যাকেজিং সলিউশনসে স্থানান্তরে প্রাথমিক সম্মতি দেয় বিএসইসি। শর্তানুসারে ১১ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের হাতে থাকা কোম্পানিটি শেয়ার একটি প্রতিষ্ঠান ও তিনজন ব্যক্তির নামে হস্তান্তর করতে হবে। তথ্যানুসারে, ইয়াকিন পলিমারের উদ্যোক্তা এবং পরিচালকদের হাতে থাকা শেয়ার ক্যাপিটা প্যাকেজিং সলিউশনস লিমিটেড, চাকলাদার রেজাউনুল আলম, মোহাম্মদ হারুনর রশিদ ও দিদারুল আলমের কাছে হস্তান্তর করতে হবে।

শেয়ার ক্রয় চুক্তি (এসপিএ) অনুসারে, প্রতি শেয়ার ১০ টাকা অভিহিত মূল্যে সাতক্ষীরা ফিড ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের ৫২ লাখ ৪৬ হাজার ৩৫৬ শেয়ার, ইয়াকিন অ্যাগ্রো প্রডাক্টস লিমিটেডের ২৮ লাখ ২৩ হাজার ৩৯, কাজী আনোয়ারুল হকের ২৭ লাখ ২৩ হাজার ১০৮, কাজী নাজিবুল হকের ১৯ লাখ ১১ হাজার ১৭২, এস এম আকতার কবিরের ১৭ লাখ ৪৮ হাজার ৭৮৫, জুলিয়া পারভীনের ১৩ লাখ ৮১ হাজার ৭৫, মালিহা পারভীনের ১৫ লাখ ৭৩ হাজার ৯০৬, এস এম মনিরুজ্জামানের ১৫ লাখ ৬১ হাজার ৪১৫, সাবরিনা সামসাদের ১৪ লাখ ৭৪ হাজার ৫৯৯, এস কে জামিল হোসেনের ১৪ লাখ ৭৫ হাজার ৪৮১ ও কাজী এমদাদুল হকের ২ লাখ ৭৪ হাজার ৮০৯ শেয়ার নতুন মালিকদের কাছে হস্তান্তর করতে হবে।

কোম্পানিটির চেয়ারম্যান কাজী আনোয়ারুল হক বলেন, ‘বিভিন্ন কারণে তারা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে নতুন মালিকদের কাছে শেয়ার হস্তান্তর সম্পন্ন করতে পারেননি। বেশ কিছু জটিলতার কারণে এমন হয়েছে বলে তিনি জানান। তবে তিনি আশা করছেন যেসব জটিলতা রয়েছে তা আগামী এক মাসের মধ্যে কেটে যাবে। নির্ধারিত এক মাসের মধ্যে তাদের হাতে থাকা শেয়ার হস্তান্তর করতে পারবেন।

তিনি বলেন, ‘আমরা আশা করি যে পুরো প্রক্রিয়াটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে শেষ হবে’। প্রক্রিয়াটির একটি বড় অংশ ইতোমধ্যেই সম্পন্ন হয়েছে বলে তিনি জানান।

তথ্য অনুযায়ী, ১২ মে ২০২২ সালে ইয়েকিন পলিমার শেয়ার স্থানান্তরের জন্য বিএসইসি থেকে অনুমোদন পায়। এমন সিদ্ধানের পর ২০২২ সালের জানুয়ারি মাসে কোম্পানির শেয়ারের দামে উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি পায়। প্রতিষ্ঠানটির মালিকানা স্থানান্তর-সংক্রান্ত সমস্যার মধ্যেও ২০২২ সালের জানুয়ারির পর শেয়ারের দাম বেড়েছে ১৪০ শতাংশ।

২০২৩ সালের ২১ ডিসেম্বর প্রতিষ্ঠানটিকে প্রথমবারের জন্য সময় বৃদ্ধি করা হয়। কিন্তু নির্ধারিত সময়ে মালিকানা পরিবর্তন করতে পারেনি প্রতিষ্ঠানটির উদ্যোক্তা এবং পরিচালকরা। চলতি বছরের ৯ জুন কোম্পানিটি শেয়ার স্থানান্তর প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ করার জন্য বিএসইসি নতুন করে এক মাসের সময় বৃদ্ধি করেছে।

কোম্পানিটির প্রতিবেদন পর্যালোচনায় দেখা যায়, ২০২৩ হিসাব বছরের তিন প্রান্তিকে (জুলাই-মার্চ) ইয়াকিন পলিমারের শেয়ারপ্রতি লোকসান হয়েছে ৮০ পয়সা। আগের হিসাব বছরের একই সময়ে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছিল ১৭ পয়সা। গত ৩১ মার্চ কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদমূল্য (এনএভিপিএস) দাঁড়িয়েছে ৫ টাকা ৩৫ পয়সায়।

কোম্পানিটি ২০১৬ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয়ে বর্তমানে ‘বি’ ক্যাটাগরিতে অবস্থান করছে। ১০০ কোটি টাকা অনুমোদিত মূলধনের বিপরীতে পরিশোধিত মূলধন ৭৩ কোটি ৬৯ লাখ ৯০ হাজার টাকা। রিজার্ভের পরিমাণ ৮ কোটি ২৯ লাখ টাকা। কোম্পানিটির মোট ৭ কোটি ৩৬ লাখ ৯৮ হাজার ৮১৭টি শেয়ার রয়েছে। ডিএসইর সর্বশেষ তথ্যমতে, মোট শেয়ারের মধ্যে উদ্যোক্তা ও পরিচালকদের কাছে ৩০ দশমিক ৫২ শতাংশ, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে ২৮ দশমিক ৪০ শতাংশ ও সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে ৪১ দশমিক ০৮ শতাংশ শেয়ার রয়েছে।

People are also reading