Alipurduar | ফের জল-যন্ত্রণা, এক রাতের বৃষ্টিতে ভাসল আলিপুরদুয়ার
মণীন্দ্রনারায়ণ সিংহ, আলিপুরদুয়ার: একাধিক কালর্ভাট অকেজো, মূল নিকাশিনালা বুজে গিয়ে বৃষ্টির জল এলাকায় আটকে যাওয়ায় আলিপুরদুয়ার(Alipurduar) শহরের বিস্তীর্ণ এলাকার বাসিন্দাদের দিনের পর দিন জলবন্দি(Water Logged) থাকতে হচ্ছে। এক রাতের বৃষ্টিতেই মঙ্গলবার বিজি রোড ফের হাঁটুজলে ভাসল। নিউটাউন মহাকালধাম মন্দির থেকে নিউ আলিপুরদুয়ার স্টেশনে যাতায়াতের রাস্তা বিজি রোড জলমগ্ন হওয়ায় ছোট গাড়ি কিংবা টোটো ওই রাস্তায় যেতে চাইছে না। এতে যাত্রী দুর্ভোগ হচ্ছে। এছাড়াও বিজি রোড এলাকা সংলগ্ন সারদাপল্লি, নিউ আলিপুরদুয়ার রেলস্টেশন সংলগ্ন এলাকার শতাধিক ঘরবাড়িতে নালা উপচে জল ঢুকেছে। সেই নোংরা জল মাড়িয়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের যাতায়াত করতে হচ্ছে। তবে রাস্তার ওই জমা জল কতদিনে নামবে, চিন্তিত বাসিন্দারা। শহরের ১৬, ২০ নম্বর ওয়ার্ডের বিস্তীর্ণ এলাকার বাসিন্দাদের বর্ষা নামতেই জল-যন্ত্রণা শুরু হয়েছে।
পুরসভার চেয়ারম্যান প্রসেনজিৎ কর বলেন, ‘ওই এলাকার তিনটি কালর্ভাট নষ্ট হয়েছে। এছাড়া প্রধান নালার উপর বেআইনি দখলদারি থাকায় নালা বুজে গিয়েছে। বর্ষার পরই নিকাশিনালা সংস্কার সহ কালর্ভাটগুলিও জরুরি ভিত্তিতে তৈরি করা হবে।’
বিজি রোডের বাসিন্দা পেশায় ব্যবসায়ী শুভরঞ্জন কর বলেন, ‘ক’দিন আগে বৃষ্টি হয়েছিল। সেই সময় টানা পাঁচদিন পাকা রাস্তায় জল ছিল। নালার নোংরা জলে পা দিয়ে বাড়িতে যাতায়াত করতে হয়েছে। কয়েকদিন রোদ ওঠায় জমা জল শুকিয়ে যায়। সোমবার রাতে টানা বৃষ্টি হয়। মঙ্গলবার সকালে উঠে দেখতে পাই বাড়ির সামনে হাঁটু জলে থইথই অবস্থা। চারদিকে শুধু জল, সেই জলে ভাসছে শহরের জঞ্জাল। শহরের অন্য জায়গায় বৃষ্টির জল কয়েকঘণ্টায় নেমে গেলেও আমাদের এলাকার জমা জল বেরোনোর পথই নেই। তাই বর্ষাকালের রাস্তা নালা সব একাকার হয়ে যায়।’
হোটেল ব্যবসায়ী বিপুল সাহা বলেন, ‘রাস্তায় নোংরা জল মাড়িয়ে বারবার দোকানে যাতায়াত করতে হয়। নিকাশি ব্যবস্থা নিয়ে পুরসভা পদক্ষেপ না করায় বর্ষায় ভোগান্তি প্রতি বছর লেগেই রয়েছে।’
কেন বিজি রোড বারবার ভাসছে? স্থানীয়রা জানান, একদিকে এলাকার নিকাশিনালা প্রায় বন্ধ হয়ে গিয়েছে। নালায় কাদা জমে গভীরতা হারিয়েছে। ফলে বসতি এলাকায় নালার গভীরতা হারিয়ে যাওয়ায় বৃষ্টির জল এলাকার ঘরবাড়িতে ঢুকে যাচ্ছে। আগে ওই এলাকায় অনেক ফাঁকা জমি ছিল। সেগুলিতে নতুন করে বসতি গড়ে উঠেছে। নতুন বসতি এলাকায় অনেক জায়গায় নালা হয়নি, ফলে বৃষ্টির জল এলাকা থেকে বেরোতে পারছে না। এছাড়া পুরোনো তিনটি কালর্ভাট অকেজো হয়ে যাওয়ায় জলনিকাশি ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে।
২০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলার শান্তনু দেবনাথ বলেন, ‘এলাকায় নিকাশি ব্যবস্থা বেহাল হওয়ায় বর্ষায় ওয়ার্ডের বাসিন্দাদের ভোগান্তি হচ্ছে। পুরসভার বোর্ড মিটিংয়ে এলাকার নিকাশিনালা সংস্কার, কালর্ভাটের দাবিতে বারবার সরব হয়েছি। পুরসভা সেই কাজে ঢিলেমি করছে।’ যদিও পুরসভার চেয়ারম্যান প্রসেনজিৎ কর বলেন, ‘কয়েকমাস আগেই আমরা নালা সংস্কার ও কালভার্টের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। কিন্তু লোকসভা ভোট ঘোষণার জন্য বর্ষার আগে ওই কাজ করা যায়নি। তবে এবারে বর্ষার পরপরই ওই সমস্যা মেটাতে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে।’