হোম পিছনে ফিরে যান

ইউক্রেনে সামরিক ঠিকাদার পাঠানোর উদ্যোগ নিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র

banglatribune.com 4 দিন আগে

ইউক্রেনীয় সেনাবাহিনীকে সহায়তা করার জন্য মার্কিন সামরিক ঠিকাদারদের ইউক্রেনে পাঠানোর উদ্যোগ নিচ্ছে বাইডেন প্রশাসন। ইউক্রেনে মার্কিন সরবরাহকৃত অস্ত্র ব্যবস্থা রক্ষণাবেক্ষণ ও মেরামত করতে এই পদক্ষেপটি নেওয়া হচ্ছে। চার মার্কিন সামরিক সূত্র সংবাদমাধ্যম সিএনএনকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।

মার্কিন কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এই সিদ্ধান্তের ফলে জো বাইডেন প্রশাসনের ইউক্রেন নীতিতে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন আনবে। কারণ ইউক্রেনের সামরিক বাহিনীকে রাশিয়ার বিরুদ্ধে চলমান যুদ্ধে সহযোগিতার আরও উপায় খুঁজছে যুক্তরাষ্ট্র। এই নীতি এখনও চূড়ান্ত অনুমোদন পায়নি এবং প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে।

একজন প্রশাসনিক কর্মকর্তা বলেছেন, আমরা এখনও কোনও সিদ্ধান্ত নেইনি। এই বিষয়ে যেকোনও অপরিপক্ব। প্রেসিডেন্ট স্পষ্ট করেছেন তিনি ইউক্রেনে মার্কিন সেনা পাঠাবেন না।

কর্মকর্তারা বলছেন, এই পরিকল্পনা অনুমোদন পেলে চলতি বছরের মধ্যে কার্যকর হবে। এর ফলে ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি রাশিয়া ইউক্রেনে আক্রমণের পর প্রথমবারের মতো ইউক্রেনীয় ভূখণ্ডে কাজ করতে মার্কিন কোম্পানিকে অনুমোদন দিতে পারে পেন্টাগন। কর্মকর্তারা আশা করছেন, এতে ইউক্রেনীয় সামরিক বাহিনী যে অস্ত্র ব্যবস্থাগুলো ব্যবহার করছে সেগুলোর রক্ষণাবেক্ষণ ও মেরামত দ্রুততর হবে।

গত দুই বছরে বাইডেন বারবার জোর দিয়ে বলেছেন, মার্কিন সেনারাদের ইউক্রেনে পাঠানো হবে না। হোয়াইট হাউজ মার্কিন নাগরিকদের ঝুঁকির বিষয়ে সচেতন। ২০২২ সাল থেকে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় মার্কিনিদের ইউক্রেনে ভ্রমণ থেকে বিরত থাকার জন্য সতর্ক করেছে।

মার্কিন সরবরাহকৃত সামরিক সরঞ্জামগুলোর উল্লেখযোগ্য ক্ষতি হলে সেগুলো মেরামতের জন্য পোল্যান্ড, রোমানিয়া বা অন্য ন্যাটো দেশগুলোতে স্থানান্তর করতে হচ্ছে। যা সময় সাপেক্ষ। মার্কিন সেনারা রক্ষণাবেক্ষণ ও লজিস্টিকসের জন্য দূর থেকে ভিডিও চ্যাট বা ফোনের মাধ্যমে ইউক্রেনীয়দের সহায়তা করছে। কিন্তু এই ব্যবস্থাটি যথেষ্ট সীমাবদ্ধতার মুখোমুখি হচ্ছে। কারণ মার্কিন সেনা ও ঠিকাদাররা সরাসরি এই ব্যবস্থাগুলোতে কাজ করতে পারছেন না।

গত কয়েকমাস ধরে রাশিয়া যুদ্ধক্ষেত্রে অগ্রগতি অব্যাহত রেখেছে। ইতোমধ্যে ইউক্রেনের জন্য মার্কিন তহবিল কংগ্রেসে অনুমোদিত হয়েছে। তবে সহযোগিতা অনুমোদনে বিলম্বের সুবিধা নিয়েছে রাশিয়া। কর্মকর্তারা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্র সরকার-নিযুক্ত অভিজ্ঞ ঠিকাদারদের ইউক্রেনে উপস্থিতি থাকা মানে তারা ক্ষতিগ্রস্ত উচ্চ-মূল্যবান সামরিক সরঞ্জামগুলোর মেরামত দ্রুত করতে সক্ষম হবে। 

এই চুক্তির জন্য দরপত্রকারী কোম্পানিগুলোকে তাদের কর্মীদের হুমকি মোকাবিলার জন্য বিস্তৃতি ঝুঁকি প্রশমনের পরিকল্পনা তৈরি করতে হবে বলে এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন।

যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনকে রুশদের পেছনে ঠেলে দিতে সহায়তা করার জন্য গত কয়েক মাসে যে একাধিক সিদ্ধান্ত নিয়েছে তার পরিপ্রেক্ষিতে এই আলোচনাগুলো শুরু হয়েছে। মে মাসের শেষের দিকে, বাইডেন ইউক্রেনকে মার্কিন অস্ত্র দিয়ে রাশিয়ার অভ্যন্তরে, ইউক্রেনীয় শহর খারকিভের সীমানার কাছাকাছি লক্ষ্যবস্তু আক্রমণের অনুমতি দিয়েছেন, যা পূর্বে যুক্তরাষ্ট্র বারবার প্রত্যাখ্যান করেছিল। গত সপ্তাহে, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জেক সুলিভান বলেছিলেন যে ইউক্রেন এখন ইউএস অস্ত্র ব্যবহার করে ইউক্রেন-রাশিয়া সীমান্ত জুড়ে যেকোনো স্থানে পাল্টা আঘাত করতে পারে।

ইউক্রেনে ঠিকাদারদের মোতায়েনের আলোচনায় জড়িত বর্তমান ও সাবেক কর্মকর্তারা জোর দিয়ে বলেছেন যে, নীতির এই পরিবর্তন ইরাক ও আফগানিস্তানের মতো বিপুল সংখ্যক ঠিকাদারের উপস্থিতি নিশ্চিত করবে না। বরং এটি একসময়ে কয়েক ডজন থেকে কয়েক শ’ ঠিকাদার ইউক্রেনে কাজ করতে পারে এমন একটি আরও কেন্দ্রীভূত প্রচেষ্টা হবে।

সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শাসনামলে ইউরোপীয় বিষয়ক পরিচালকের দায়িত্ব পালন করা অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা অ্যালেক্স ভিন্ডম্যান বলেছেন, ইউক্রেন একটি মিত্র দেশ। ইউক্রেনকে সমর্থন করার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় নিরাপত্তা স্বার্থ রয়েছে এবং ঝুঁকি প্রশমনের জন্য প্রচুর উপায় রয়েছে।

People are also reading