হোম পিছনে ফিরে যান

চীনে বাড়েনি রপ্তানি

comillarkagoj.com 2024/10/5

চীনে বাড়েনি রপ্তানি

বাংলাদেশের বৈদেশিক বাণিজ্যের সাম্প্রতিক বাস্তবতা হচ্ছে, এখনো তৈরি পোশাক রপ্তানিই বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের বড় মাধ্যম। এর পরও রপ্তানিমুখী পণ্যের প্রসার ঘটছে। দেশের অনেক অপ্রচলিত পণ্য এখন বিদেশের বাজারে রপ্তানি হচ্ছে, কিন্তু তা একেবারেই আশাব্যঞ্জক নয়। সম্প্রতি এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশের রপ্তানি পণ্যের বৈচিত্র্য কম।
দেশের রপ্তানির প্রায় ৮৫ শতাংশই আসে তৈরি পোশাক খাত থেকে। এলডিসি বা স্বল্পোন্নত দেশের কাতার থেকে বেরিয়ে গেলে রপ্তানি পণ্যে যে শুল্ক আরোপিত হবে, তার জেরে দেশের রপ্তানি ৫.৫ থেকে ১৪ শতাংশ পর্যন্ত কমে যেতে পারে-এমন আশঙ্কা এডিবির। এই বাস্তবতায় দেশের রপ্তানির সক্ষমতা বৃদ্ধির বিকল্প নেই বলেই মনে করে সংস্থাটি।
দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য টেকসই করতে ৪৪টি দেশের সঙ্গে মুক্তবাণিজ্য চুক্তি আর নতুন করে জাতীয় রপ্তানি নীতি ২০২৪-২৭ করা হয়েছে।
দেশে তৈরি পণ্য ও সেবা রপ্তানির মাধ্যমে ১১০ বিলিয়ন ডলার আয়ের লক্ষ্য নিয়ে ২০২৪-২৭ মেয়াদের খসড়া রপ্তানি নীতিমালার নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি।
রপ্তানি বহুমুখীকরণে সবাই একমত, তবে নীতি সংস্কার সেভাবে হচ্ছে না। আমরা মোট প্রায় এক হাজার ২০০ থেকে এক হাজার ৩০০ পণ্য রপ্তানি করি। কিন্তু এখনো রপ্তানির ৮৪ শতাংশ আসে শুধু গার্মেন্টস পণ্য থেকে।
বলা হয়, ১৭০টি দেশে আমরা ওষুধ রপ্তানি করি, যা সাকল্যে এক বিলিয়ন ডলার বা তার কাছাকাছি। এক বিলিয়নের ওপর পণ্য রপ্তানি করি হাতে গোনা দুই বা তিনটি আইটেম। পণ্য রপ্তানির বড় বাধা আমাদের ট্যারিফ হার।
পত্রিকান্তরে প্রকাশিত এক খবরে বলা হয়েছে, চীন বাংলাদেশের বড় বাণিজ্যিক অংশীদার হলেও দুই দেশের মধ্যে বিশাল বাণিজ্য ঘাটতি রয়েছে। এই বাণিজ্য ঘাটতি কমিয়ে আনতে চীনা বিনিয়োগকারীদের দেশে উন্নত প্রযুক্তি ও তৈরি পোশাক খাতের সংযোগ শিল্পে বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়েছেন দেশের শীর্ষ ব্যবসায়ীরা।
তাঁদের আশা, প্রধানমন্ত্রীর আসন্ন চীন সফরে এই বিষয়গুলোতে গুরুত্ব দেবে বাংলাদেশ। ২০২২ সালে চীনের বাজারে ৯৯ শতাংশ পণ্যে শুল্কমুক্ত সুবিধা দিলেও বাংলাদেশ সেই সুযোগ কাজে লাগাতে পারছে না। প্রশ্ন হচ্ছে, বাংলাদেশ চীনে কী রপ্তানি করবে? রপ্তানি বহুমুখীকরণের প্রধান শর্ত পণ্য বহুমুখীকরণ। পণ্য বহুমুখীকরণ ও রপ্তানিযোগ্য পণ্যের নতুন বাজার খুঁজে বের করতে বা নতুন বাজার সৃষ্টি করতে কাজ করতে হবে।
দেশীয় ও আন্তর্জাতিক চাহিদা বাড়াতে হলে বাজারজাত সব পণ্য এখন হতে হবে আন্তর্জাতিক মান ও গুণ সম্পন্ন এবং সেসব পরিবেশবান্ধবভাবে উৎপাদন করতে হবে। বিশ্ববাজারে আমাদের কৃষিপণ্যের চাহিদা ও সম্ভাবনা আছে। বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশের শাক-সবজি ও ফলমূলের চাহিদা রয়েছে। প্রবাসী লাখো বাংলাদেশি নিয়মিত দেশি পণ্য চান। আবার বিদেশিরাও এখানকার নাতিশীতোষ্ণ আবহাওয়ায় উৎপাদিত কৃষিপণ্যের প্রতি আগ্রহী। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই খাতে প্রতিবছরই বড় প্রবৃদ্ধি অর্জন সম্ভব। গুণগত মানের পণ্য সংরক্ষণ ও সরবরাহ লাইনে ঘাটতিসহ সরকারের দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা বাস্তবায়নে সক্ষমতা না থাকায় রপ্তানি বাজারে প্রতিযোগিতা সক্ষমতা হারাচ্ছে কৃষিপণ্য।
আমরা আশা করব, পণ্য বহুমুখীকরণের পাশাপাশি নতুন রপ্তানি বাজারও খুঁজে বের করা হবে।

People are also reading