হোম পিছনে ফিরে যান

চুরির ঘটনায় তদন্তে নেমে ৫টি অস্ত্রের সন্ধান

banglatribune.com 2024/5/14

রাজধানীর পুরান ঢাকার ইসলামবাগ এলাকায় ঈদের ছুটিতে গত ১২ এপ্রিল চুরির ঘটনা ঘটে। এই ঘটনায় ভুক্তভোগী বাদী হয়ে চকবাজার থানায় একটি মামলা করেন। মামলার তদন্তে নেমে প্রথমে দুই নারীকে এবং পরে তাদের দেওয়া তথ্যে আরও পাঁচ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তাদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, অস্ত্র চুরি করে সেগুলোর বিক্রি করে দেওয়ার তথ্য। পুলিশ ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে পাঁচটি অস্ত্রও উদ্ধার করেছে।

রবিবার (২৮ এপ্রিল) বিকালে রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশন্স) ড. খ. মহিদ।

দ্বিতীয় বারে গ্রেফতার পাঁচজন হলেন– মো. রাজীব হোসেন রানা (২৮), মো. শাহীন (৪০), মো. আবুল হাসান সুজন (২৫), মো. পারভেজ নুর (৩৮) ও মানিক চন্দ্র দাস (৩৬)। এই ঘটনায় জড়িত আরও দুই জন পলাতক রয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

খ. মহিদ জানান, পুরান ঢাকার চকবাজার থানার পূর্ব ইসলামবাগ এলাকার একটি বাড়িতে গত ১২ এপ্রিল সকাল ১০টার দিকে চুরি হয়। এই ঘটনায় দায়ের করা মামলার তদন্তে নেমে অভিযান চালিয়ে চুরির সঙ্গে জড়িত দুই নারীসহ চক্রের সাত সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়। এই চক্রের মূলহোতা ২২ মামলার আসামি মামুন। মামুনের অন্যতম সহযোগী তার মা হাসিনা। তারা স্থানীয়ভাবেও চোর হিসেবে পরিচিতি।

যেভাবে চোর চক্র গড়ে তুলে মামুন

অতিরিক্ত কমিশনার বলেন, মামলায় গ্রেফতার হয়ে কারাগারে গিয়ে চক্র গড়ে তোলে মামুন। কারাগারে গড়ে তোলা ১০ থেকে ১২ জনের চক্রটি স্থানীয়ভাবে ‘মামুন বাহিনী’ হিসেবে পরিচিত। তারা নানা কৌশলে বিভিন্ন বাসা-বাড়িতে চুরি করে আসছিল।

মামুনের চক্রের একটি অংশের সদস্য রাজীব হোসেন রানাসহ (২৮) চক্রের তিন সদস্য প্রায় এক বছর আগে কেরানীগঞ্জ মডেল থানা এলাকার একটি বাসায় চুরির ঘটনা ঘটায়। কিন্তু রহস্যজনকভাবে এই ঘটনায় থানা পুলিশের কাছে কোনও অভিযোগ করেননি ভুক্তভোগীরা। এর কারণ এই বাসা থেকেই টাকা পয়সা ও স্বর্ণালঙ্কারসহ বেশ কিছু অস্ত্র চুরি হয়ে যায়। ফলে এই অবৈধ অস্ত্রের মালিক শাহিন কোনও অভিযোগ করেননি।

ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশন্স) ড. খ. মহিদ
© 2024 Bangla Tribune Online Media

পরবর্তীতে অস্ত্রের মালিক শাহিনকে গ্রেফতার করার পর গত ২২ এপ্রিল থকে ২৭ এপ্রিল পর্যন্ত টানা ৫ দিন ধারাবাহিক অভিযান চালিয়ে পাঁচটি অস্ত্র ও ৩৯ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়। এই অস্ত্র উদ্ধারের ঘটনায় শাহিনসহ পাঁচজনকে গ্রেফতার করা হয়।

অস্ত্র উদ্ধারের মামলায় গ্রেফতার রানার বিরুদ্ধে ১০টি মামলা, সুজনের বিরুদ্ধে একটি, মানিকের বিরুদ্ধে চারটি ও পারভেজের বিরুদ্ধে দুটি মামলা রয়েছে। বর্তমানে তারা পুলিশের রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে কারাগারে রয়েছেন।

গত এক বছরে চুরি করে পাওয়া অস্ত্রগুলো নানা কৌশলে হাত বদল হয় উল্লেখ করে অতিরিক্ত কমিশনার মহিদ বলেন, মামুনের চক্রটি মূলত চুরির সঙ্গে জড়িত। সাধারণত যখন কোনও চক্র গড়ে ওঠে তখন তারা নানা সরঞ্জাম সংগ্রহ করে থাকে। এখন পর্যন্ত আমাদের কাছে যে তথ্য রয়েছে এই অস্ত্রগুলো একাধিকবার হাত বদল হয়েছে। কেনা-বেচা হয়েছে। তবে অস্ত্রগুলো কোনও ধরনের ব্যবহারের তথ্য পাইনি। ব্যবহারের আগেই উদ্ধার করা হয়েছে।

অস্ত্রের প্রকৃত মালিক বৈধ নাকি অবৈধ জানতে চাইলে অতিরিক্ত কমিশনার বলেন, যার বাসা থেকে অস্ত্রগুলো চুরি হয়েছে তিনি কোনও অভিযোগ করেননি। এমনকি আমাদের তদন্তে যখন গ্রেফতার হয়েছেন তখনও তিনি অস্ত্রের বৈধতার কোনও তথ্য দিতে পারেননি। অস্ত্রগুলো চুরি হওয়ার পরে তিন হাতে বদল হয়েছে। অবৈধ অস্ত্র তিনি কোথা থেকে সংগ্রহ করেছেন সেই বিষয়টি আমরা তদন্ত করে দেখছি।

People are also reading