হোম পিছনে ফিরে যান

অতি ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস বন্যা পরিস্থিতি অবনতির শঙ্কা

comillarkagoj.com 2 দিন আগে

 অতি ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস বন্যা পরিস্থিতি অবনতির শঙ্কা

সাগরে সৃষ্টি হয়েছে লঘুচাপ। দেশের আকাশে মৌসুমি বায়ু সক্রিয় রয়েছে আগে থেকেই। এ দুইয়ের প্রভাবে আগামী তিন দিন ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদফতর। এতে সিলেট অঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি ঘটতে পারে। পাশাপাশি উত্তরাঞ্চলে নতুন করে বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে বলে জানিয়েছে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র। ভারী বৃষ্টির সঙ্গে পাহাড়ি এলাকায় ভূমিধসের সতর্কতাও দিয়েছে আবহাওয়া অধিদফতর।
বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী সরদার উদয় রায়হান বলেন, আগামী তিন দিন ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদফতর। সে হিসেবে বেশ কিছু নদীর পানি বাড়বে। এর ফলে উত্তরাঞ্চলের নদীগুলোর পানি সাময়িকভাবে বেড়ে স্বল্পমেয়াদি বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে। এই পানি বিপদসীমার ওপর দিয়েও যেতে পারে। সব মিলিয়ে ৬ থেকে ৭ দিন সময় লাগতে পারে।
তিনি জানান, এখন সিলেটের বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হলেও আগামী দুই দিন তার কিছুটা অবনতি ঘটতে পারে। বাড়তে পারে বেশ কিছু নদীর পানি। তবে দুই থেকে তিন দিনের মধ্যে সিলেটের বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হতে পারে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
আজ রবিবার (৩০ জুলাই) কুশিয়ারা নদীর মারকুলি পয়েন্টে পানি বিপদসীমার ১৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
বন্যা সতর্কীকরণ কেন্দ্রের পূর্বাভাসে জানানো হয়, ব্রহ্মপুত্র ও যমুনার সঙ্গে সংযুক্ত নদ-নদীর পানি স্থিতিশীল আছে, যা আগামী ৭২ ঘণ্টায় বাড়তে পারে। ভারতে গঙ্গা নদীর পানিও বাড়ছে, তবে পদ্মা নদীর পানি স্থিতিশীল আছে, যা আগামী ২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে। এদিকে মনু, খোয়াই নদী ছাড়া দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের প্রধান নদীগুলোর পানি বাড়ছে।
আবহাওয়া সংস্থাগুলোর তথ্য অনুযায়ী, দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চল ও পার্শ্ববর্তী উজান এলাকায় আগামী ৪৮ ঘণ্টায় ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস রয়েছে। ফলে এ সময়ে দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের নদীগুলোর পানি বাড়তে পারে।
আগামী ৪৮ ঘণ্টায় উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সুরমা, কুশিয়ারা, পুরাতন সুরমা, সারিগোয়াইন নদীর পানি দ্রুত বেড়ে সিলেট ও সুনামগঞ্জ জেলার কিছু নি¤œাঞ্চলে স্বল্পমেয়াদি বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে পারে।
এদিকে রবিবার সন্ধ্যায় আবহাওয়া বিভাগ আগামী তিন দিনের আবহাওয়ার পূর্বাভাস দিয়েছে। এতে বলা হয়েছে, পশ্চিমবঙ্গ ও আশপাশের এলাকায় অবস্থানরত লঘুচাপটি মৌসুমি অক্ষের সঙ্গে মিলিত হয়েছে। মৌসুমি বায়ুর অক্ষ উত্তর প্রদেশ, বিহার, পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের মধ্যাঞ্চল হয়ে আসাম পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। এটি বাংলাদেশের ওপর সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরে প্রবল অবস্থায় রয়েছে।
রবিবার (৩০ জুন) সন্ধ্যা ৬টা থেকে পরের ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা, ময়মনসিংহ, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণ হতে পারে। এই সময় সারা দেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা সামান্য কমতে পারে।
সোমবার (১ জুলাই) সন্ধ্যা ৬টা থেকে পরের ২৪ ঘণ্টায় রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা, ময়মনসিংহ, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণ হতে পারে। এ সময় সারা দেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
মঙ্গলবার (২ জুলাই) সন্ধ্যা ৬টা থেকে পরের ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা, ময়মনসিংহ, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণ হতে পারে। সারা দেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
আবহাওয়া বিভাগ আরও জানায়, ভারী বর্ষণের কারণে চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের পাহাড়ি এলাকার কোথাও কোথাও ভূমিধসের শঙ্কা রয়েছে। আবহাওয়াবিদ শাহনাজ সুলতানা বলেন, আগামী ৭২ ঘণ্টায় ভারী বৃষ্টির শঙ্কার কথা আমরা জানিয়েছি। এতে নদ-নদীর পানি বৃদ্ধির পাশাপাশি পাহাড়ি এলাকায় ভূমিধসের শঙ্কাও রয়েছে।
এছাড়া লঘুচাপের প্রভাবে বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকা এবং সমুদ্রবন্দরগুলোর ওপর দিয়ে দমকা বা ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে বলেও আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে। এ জন্য চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারগুলোকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত উপকূলের কাছাকাছি এসে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে।

People are also reading