হোম পিছনে ফিরে যান

খুলনায় আ. লীগ নেতাকে সাবেক ছাত্রলীগ নেতার হুমকি

risingbd.com 3 দিন আগে
খুলনায় আ. লীগ নেতাকে সাবেক ছাত্রলীগ নেতার হুমকি
কেসিসি’র ৬ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর শামসুদ্দিন আহম্মেদ প্রিন্স, ডানে অভিযুক্ত ইসরাফিল জনি

খুলনায় আওয়ামী লীগ নেতা ও সিটি করপোরেশনের (কেসিসি)  ৬ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর শামসুদ্দিন আহম্মেদ প্রিন্সকে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে সাবেক এক ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় দৌলতপুর থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন প্রিন্স।

Google news

অভিযুক্তের নাম ইসরাফিল জনি। তিনি খুলনা মহানগর ছাত্রলীগের গত কমিটির সহ-সভাপতি ছিলেন।

এদিকে, সহকর্মীকে হুমকি দেওয়ার ঘটনায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন কেসিসির অন্য কাউন্সিলররা। দুই প্যানেল মেয়রের নেতৃত্বে ৮ জন কাউন্সিলর বিষয়টি নিয়ে কেসিসি মেয়র ও মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি তালুকদার আবদুল খালেকের কাছে নালিশও করেছেন। 

সাধারণ ডায়েরিতে উল্লেখ করা হয়, কাউন্সিলর প্রিন্সকে ফোন দিয়ে জনিকে বলতে শোনা যায়, ‘সেভ অ্যান্ড সেফের সামনে বসা নিয়ে টিটু ভাইয়ের (২৩ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ফয়েজুল ইসলাম টিটো ) কাছে নালিশ করেছে কে? তোর কাউন্সিলরগিরি….দেই, তোমাকে ঠেকাবে (বাঁচাবে) তোমার কোন আব্বা।’ পরে কাউন্সিলরকে দেখে নেওয়ারও হুমকি দেন ছাত্রলীগ নেতা।

ইসরাফিল জনির বাড়ি নগরীর দৌলতপুর থানার দেয়ানায়। নিজেকে যুবলীগ নেতা দাবি করলেও বর্তমানে তার কোনো পদ-পদবি নেই। স্থানীয় নেতাকর্মীদের অভিযোগ, কোন পদ-পদবি না থাকলেও দলের নাম ব্যবহার করে সুবিধা আদায়, মানুষকে হুমকি দেওয়াসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত জনি। আওয়ামী লীগ নেতা ফয়েজুল ইসলাম টিটো জনিকে প্রশয় দেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

অন্যদিকে শামসুদ্দিন আহম্মেদ প্রিন্স কেসিসির ৬ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও একই ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য। প্রিন্সের বাবা শেখ শওকত আলী বিএনপি নেতা এবং এই ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ছিলেন। বাবার মৃত্যুর পর প্রিন্স বিএনপির সমর্থন নিয়ে ৬ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর নির্বাচিত হন। ২০১৬ সালে তিনি আওয়ামী লীগে যোগ দেন। বিগত দুটি কেসিসি ও জাতীয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগের হয়ে কাজ করছেন প্রিন্স।

এ বিষয়ে শামসুদ্দিন আহম্মেদ প্রিন্স বলেন, ‘একটি সালিশকে কেন্দ্র করে এলাকায় যুবলীগ নেতা হিসেবে পরিচিত জনির সঙ্গে মতবিরোধ তৈরি হয়। এ নিয়ে দৌলতপুর থানার ভেতরেই সালিশ বৈঠকে আমাদের গালিগালাজ করেছেন তিনি। দৌলতপুর সেভ অ্যান্ড সেফ, বর্তমানে মনা শো-রুমের সামনে জনি ও তার অনুসারীদের অসামাজিক কার্যক্রম নিয়ে ব্যবসায়ীরা আমার কাছে অভিযোগ করেন। বিষয়টি দলের নেতা ফয়েজুল ইসললাম টিটোকে জানিয়ে জনিকে সতর্ক করার অনুরোধ করি। এটা জানতে পেরে জনি আমাকে ফোন দিয়ে গালিগালাজ করেছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আওয়ামী লীগ নেতাদের জানালেও তারা কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় বিষয়টি সিটি মেয়র ও মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি তালুকদার আবদুল খালেককে লিখিতভাবে জানিয়েছি। থানায় একটি সাধারণ ডায়েরিও করেছি।’

এ বিযষয়ে গত বুধবার প্রিন্সকে সঙ্গে নিয়ে সিটি মেয়রের সঙ্গে দেখা করেন দৌলতপুর এলাকার ৮ জন কাউন্সিলর। সিটি মেয়রকে তারা বলেন, ইসরাফিল জনি, ইয়াসিন আরাফাত সোহাগসহ পদ-পদবীহীন সেলফিবাজ কিছু ব্যক্তি দলটিকে শেষ করে দিচ্ছে। তারা দলের নাম ভাঙিয়ে দৌলতপুরে ব্যবসায়ীদের হুমকি, মারধর, চাঁদাবাজি করে। দলের কয়েকজন নেতা এদের আশ্রয়-প্রশয় দেয়। এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিলে কোনো ভালো মানুষ সম্মান নিয়ে আওয়ামী লীগ করতে পারবে না।

শুক্রবার (৫ জুলাই) খুলনা সিটি করপোরেশনের মেয়র তালুকদার আবদুল খালেক বলেন, ‘দলের নাম ভাঙিয়ে চাঁদাবাজি, পেশিশক্তি প্রদর্শন সহ্য করা হবে না।’ তিনি এসব ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে দৌলতপুর থানার ওসিকে অবহিত করেন।

অভিযুক্ত ইসরাফিল জনি বলেন, ‘প্রিন্সের পুরো পরিবার বিএনপি করতো। ওর ভাই মিল্টন নাশকতা মামলার আসামি। এরা বিভিন্ন সময় আমাকে নিয়ে কটূক্তি করে। আমাদের এলাকার একজন গর্ভবতী মেয়েকে নিয়ে সালিশে অন্যায্য বিচার করেছে। আমার নামে নেতাদের কাছে মিথ্যা নালিশ করেছে। তাই তাকে সামান্য বকা দিয়েছি।’

দৌলতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রবীর কুমার বিশ্বাস বলেন, ‘কাউন্সিলর প্রিন্স সাধারণ ডায়েরি করেছেন। বিষয়টি আমরা তদন্ত করছি। দৌলতপুরে কেউ যাতে অহেতুক আড্ডাবাজি বা চাঁদাবাজি করতে না পারে, সে ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’

People are also reading