হোম পিছনে ফিরে যান

যে কারণে গরুর মাংস খায় না আর্জেন্টাইনরা

banglatribune.com 6 দিন আগে

বিস্তীর্ণ গরুর খামার এবং আসাডো বারবিকিউর জন্য বিখ্যাত আর্জেন্টিনা। অথচ আগের চেয়ে কম গরুর মাংস খাচ্ছেন আর্জেন্টাইনরা। ব্যাপক মুদ্রাস্ফীতি এবং অর্থনৈতিক মন্দার কারণে দক্ষিণ এশিয়ার দেশটিতে গরুর মাংসের ব্যবহার কমেছে অন্তত ১৬ শতাংশ। শনিবার (২২ জুন) এ নিয়ে এক বিশেষ প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রয়টার্স।

আর্জেন্টিনার খাবারের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ গরুর মাংস। ফুটবলের সঙ্গে চার আর গরুর স্টেক বা চপ ছাড়া তাদের চলেই না। আর্জেন্টিনার বাড়িতে বাড়িতে গরুর মাংস পোড়ানো বা গ্রিলের জন্য রয়েছে আলাদা স্থান। পরিবারের সদস্যরা একত্রিত হয়ে খেলা দেখা আর গরুর গ্রিল খাওয়া তাদের এক সংস্কৃতিরই অঙ্গ। এমনকি রাজধানী বুয়েনস আয়ার্সে রাস্তার কোণায় দেখা যায় স্টেক হাউজ। সেখানে মানুষ ভিড় করে গরুর মাংস খাওয়ার জন্য। এমনকি বিক্ষোভের সময়ও তাদের প্রিয় খাবার এই গরুর মাংস।

এক কসাইয়ের দোকানে গরুর মাংস কেনার লাইনে দাঁড়িয়ে অবসরপ্রাপ্ত ৬৬ বছর বয়সী ক্লডিয়া সান মার্টিন বলেন, অর্থনৈতিক মন্দায় অনেক কিছু কাটছাঁট করলেও, এখনও এই মাংস বাদ দিতে পারিনি।

তারপরও সবশেষ তথ্যে দেখা যায়, চলতি বছর একজন আর্জেন্টাইন ৪৪ কেজি গরুর মাংস খেয়েছে, যা গতবছর ছিল ৫২ কেজি। ১৯৫০ সালে এর পরিমাণ ছিল ১০০ কেজির মতো।

দীর্ঘদিন ধরেই পতনের দিকে আর্জেন্টিনার অর্থনীতি। কিন্তু চলতি বছর উদারপন্থি প্রেসিডেন্ট জাভিয়ের মিলির কঠোর ব্যবস্থার পর মূল্যস্ফীতি ৩০০ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। অর্থনীতি স্থবির হয়ে পড়েছে। দারিদ্র বেড়েছে। প্রধান শহরগুলোতে আরও বেশি মানুষ গৃহহীন হয়ে পড়েছে।

৪৮ বছর বয়সী কৃষি প্রকৌশলী লুইস মার্চি বলেছেন, ভৌক্তারা গরুর মাংসের বদলে অন্যান্য সস্তা খাবার যেমন: মুরগী বা শূকরের মাংস এবং পাস্তার দিকে ঝুঁকছে।

৫৩ বছর বয়সী চাষি গুইলারমো ট্রামন্টিনি বলেন, গরুর মাংস খুব বেশি দামিও নয়। কিন্তু মানুষের ক্রয় ক্ষমতা ভয়ানকভাবে হ্রাস পেয়েছে।

বুয়েনস আয়ার্সে ৪০ বছর ধরে নিজের কসাইখানা চালাচ্ছেন জেরার্ডো টমসিন। ৬১ বছর বয়সী টমসিন বলেন, লোকেরা এখনও গরুর মাংস কিনতে আসছেন। কিন্তু তারা পরিশাণ কমিয়ে দিয়েছে।

স্থানীয় ব্যবহার কমে যাওয়ায় রপ্তানি বেড়েছে। এখন পর্যন্ত আর্জেন্টিনার গরুর মাংসের শীর্ষ ক্রেতা চীন। কিন্তু আন্তর্জাতিক বাজারে দাম অনেক কমে যাওয়ায়, রপ্তানি খাতটিও বর্তমানে কঠিন সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে, বলে জানিয়েছেন মুক্ত বাজার অর্থনীতিবিদ মাইলি।

People are also reading