হোম পিছনে ফিরে যান

হিজবুল্লাহর সঙ্গে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে লড়তে প্রস্তুত লেবাননের ফিলিস্তিনিরা

banglatribune.com 3 দিন আগে

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের ধ্বংসলীলা দেখে ক্ষুব্ধ লেবাননের ফিলিস্তিনিরা। তবে গাজার মতো লেবাননেও ইসরায়েল যুদ্ধ শুরু করলে দেশটির বিরুদ্ধে হিজবুল্লাহর সঙ্গে লড়াই করতে প্রস্তুত রয়েছে তারা। সম্প্রতি হিজবুল্লাহর বিরুদ্ধে ইসরায়েলের সর্বাত্মক হামলার ঝুঁকি দেখা দিয়েছে। এর মধ্যে লেবাননের শরণার্থী শিবিরে বেশ কয়েকজন শরণার্থী কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরাকে এই কথা জানিয়েছে।

অক্টোবরে গাজায় ইসরায়েলি হামলা শুরু হওয়ার পর থেকেই ইসরায়েলের সঙ্গে লেবাননের সীমান্তে নিয়মিত গুলি বিনিময় করছে হিজবুল্লাহ। তারা বারবার বলেছে, গাজায় ইসরায়েলের হামলা বন্ধ হলে তবেই সীমান্তে হামলা বন্ধ করবে তারা।

৭ অক্টোবর ইসরায়েলি ভূখণ্ডে হামাসের করা হামলার জেরে ওইদিনই গাজায় পাল্টা হামলা শুরু করেছিল ইসরায়েল। ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষের মতে, হামাসের হামলায় ওইদিন প্রায় ১ হাজার ২০০ ফিলিস্তিনি নিহত হন। তখন জিম্মি করে গাজায় নিয়ে যাওয়া হয় আরও ২৫০ ইসরায়েলিকে।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মতে, ইসরায়েলের হামলায় এখন পর্যন্ত ৩৭ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।

লড়তে প্রস্তুত লেবাননের ফিলিস্তিনিরা

বৈরুতে শাতিলা ফিলিস্তিনি শরণার্থী শিবিরে শরণার্থীদের সঙ্গে কথা বলেছে আল-জাজিরা। প্রতিরোধ আন্দোলনের সঙ্গে জড়িত অনেক মানুষ সংবাদমাধ্যমটিকে বলেছেন, তারা ভীত নন এবং ইসরায়েলের বিরুদ্ধে হিজবুল্লাহ ও এই অঞ্চলের অন্যান্য প্রতিরোধ্য যোদ্ধাদের সঙ্গে মিলে লড়বেন।

তবে তাদের মনে পরিবার ও বেসামরিকদের নিয়ে ভয় কাজ করছে। তারা আশঙ্কা করছে, গাজার মতো লেবাননের ঘন জনবসতিপূর্ণ শরণার্থী শিবিরেও হামলা চালাবে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী।

শাতিলায় পপুলার ফ্রন্ট ফর দ্য লিবারেশন অব প্যালেস্টাইন-জেনারেল কমান্ড (পিএফএলপি-জিসি) এর সদস্য আহেদ মাহার বলেছেন, ‘ইসরায়েলি সেনাদের কোনও নৈতিকতা নেই। তারা মানবাধিকার মানে না এবং শিশুদের অধিকারের কথাও বিবেচনা করে না।’

তিনি আরও বলেন, ‘ইসরায়েলি সেনাবাহিনী শুধু প্রতিশোধ নিতে জানে।’

বাড়ি ফেরা

শাতালিয়াতে বড় হওয়া ২৯ বছর বয়সী আবু আলি আল-জাজিরাকে বলেছেন, ১৯৪৮ সালের নাকবার সময় ফিলিস্তিন থেকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত হয়ে প্রায় ২ লাখ ৫০ হাজার ফিলিস্তিনি লেবাননের ১২টি শরণার্থী শিবিরে আশ্রয় নিয়েছিলেন। তখন থেকেই তাদের মনে নিজ দেশে ফিরে যাওযার আকুতি রয়েছে।

আল-জাজিরাকে তিনি বলছিলেন, লেবাননে যদি বড় ধরনের কোনও যুদ্ধ হয় তবে তিনি ও তার মা প্রয়োজনীয় কিছু বস্তু নিয়ে ইসরায়েল-লেবানন সীমান্তের দিকে ছুটে যাবেন।

এসময় তিনি বলেন, ‘আমার মনে হয়, যুদ্ধ হলে অসংখ্য ফিলিস্তিনি একবার হলেও ফিলিস্তিনে ফিরে যাওয়ার চেষ্টা করবে।’

আবু আলি বলেন, তিনি বিশ্বাস করেন, যুদ্ধ শুরু হলে ফিলিস্তিনি শরণার্থী শিবিরে বোমা ফেলবে ইসরায়েল এবং তারা এই বলে নিজেদের পক্ষে সাফাই দিবে যে, সেখানে প্রতিরোধ যোদ্ধারা ছিল, যেমনটা তারা গাজায় করেছিল।

লেবাননে ফিলিস্তিনিরা আইনি বৈষম্যের শিকার হচ্ছে এবং দারিদ্রতার মধ্যে বসবাস করছে উল্লেখ করে আবু আলি বলেন, লেবাননে ফিলিস্তিনিদের শরণার্থী শিবিরগুলো ধ্বংস হয়ে গেলে রাষ্ট্রহীন শরণার্থীদের নিজ দেশ ফিলিস্তিনে ফিরে যাওয়া ছাড়া আর কোনও উপায় থাকবে না।

আল-জাজিরাকে নিজের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমি হয় ফিলিস্তিন নয় ইউরোপে যেতে পারব। তবে ইউরোপে যেতে হলে আমাকে ১০ থেকে ১২ হাজার ডলার পাচারকারীদের দিতে হবে। এটি কখনোই সম্ভব না।’

People are also reading