হোম পিছনে ফিরে যান

সাবেক প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ারের ‘কুশপুত্তলিকায় জুতাপেটা’

rtvonline.com 4 দিন আগে
রাজশাহীতে মিছিল, সাবেক প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ারের ‘কুশপুত্তলিকায় জুতাপেটা’

রাজশাহীর বাঘায় আওয়ামী লীগের দুপক্ষের সংঘর্ষে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম বাবুল নিহতের ঘটনায় ক্রমেই দলটিতে রাজনৈতিক বিরোধ ভয়ঙ্কর রূপ নিচ্ছে।

বৃহস্পতিবার (২৭ জুন) নিহত বাবুলের জানাজায় রাজশাহী-৬ আসনের এমপি ও সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম হত্যাকাণ্ডের মদদদাতা দায়ী করে দলটির প্রেসিডিয়াম সদস্য এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন ও দলীয় আরেক এমপি মোহা. আসাদুজ্জামান আসাদের বিরুদ্ধে মামলা করার হুমকি দেওয়ার পর থেকেই রাজশাহীর রাজনীতি ক্রমেই উত্তপ্ত হয়ে উঠছে।

শুক্রবার (২৮ জুন) বিকেলে এমপি শাহরিয়ারের এমন বক্তব্যের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে রাজশাহী শহরে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন মহানগর যুবলীগ, ছাত্রলীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা। বিক্ষোভ মিছিল থেকে এমপি শাহরিয়ারের কুশপুত্তলিকায় জুতার মালা পরিয়ে তাতে জুতাপেটা করেন নেতাকর্মীরা। এ সময় তারা এমপি শাহরিয়ারের বক্তব্যের প্রতিবাদ জানান। বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে এমপি শাহরিয়ারকে রাজশাহীতে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয়।

রাজশাহী মহানগর যুবলীগ সভাপতি মনিরুজ্জামান মণির সভাপতিত্বে ও মহানগর ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক ডা. সিরাজুম মুনির সবুজের সঞ্চালনায় নগরীর সাহেব বাজার জিরোপয়েন্টে বিক্ষোভ মিছিলোত্তর সমাবেশে বক্তব্য রাখেন মহানগর যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক তৌরিদ আল মাসুদ রনি, সাংগঠনিক সম্পাদক অরবিন্দ দত্ত বাপ্পি, মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগ সভাপতি আব্দুল মোমিন, মহানগর ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি রকি কুমার ঘোষ, বর্তমান সভাপতি নুর মোহাম্মদ সিয়ামসহ আরও অনেকে। এর আগে বিক্ষোভ মিছিলটি রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে শুরু হয়ে নগরীর প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে নগরীর প্রাণকেন্দ্র সাহেব বাজার জিরো পয়েন্টে গিয়ে শেষ হয়। পরে সেখানে আয়োজন করা হয় বিক্ষোভ সমাবেশের।

সমাবেশে বক্তারা বলেন, নৃশংস হামলায় বাঘা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বাবুল খুন হন। সেই হত্যাকাণ্ডের মদদদাতা হিসেবে এমপি শাহরিয়ার আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনের নাম জড়িয়ে চরম ধৃষ্টতা দেখিয়েছেন। হত্যাকাণ্ডের প্রকৃত ঘটনা আড়াল করতেই এমপি শাহরিয়ার দলের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের নেতা খায়রুজ্জামান লিটনকে জড়িয়ে বক্তব্য দিয়েছেন। তারা সমাবেশ থেকে এমপি শাহরিয়ারকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেন।

গত বৃহস্পতিবার দুপুরে বাঘা মডেল উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে নিহত আওয়ামী লীগ বাবুলের জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। ওই জানাজায় স্থানীয় এমপি শাহরিয়ার আলম বলেছিলেন, ‘আমরা জবাব চাই, আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনের কাছে। অ্যাডভোকেট লায়েব উদ্দিন লাভলুর কাছে জবাব চাই, সে কেন আজ পলাতক? খুনের সময় দুজন সশরীরে উপস্থিত ছিলেন। পেছন থেকে মদদদাতা হিসেবে আসাদুজ্জামান আসাদ, এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন এবং লায়েব উদ্দিনের বিরুদ্ধে মামলা করা হবে। তাদের শাস্তি না হওয়া পর্যন্ত আমরা রাজপথে থাকব।’

এমপি শাহরিয়ারের এমন বক্তব্যে বৃহস্পতিবার বিকেলে সংবাদ সম্মেলন করে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন। এ সময় তিনি বলেন, ‘বাবুল যখন ছাত্রনেতা, তখন থেকেই তাকে আমি পাশে পেয়েছি। তাকে হত্যার মতো নিন্দনীয়-নৃশংস হত্যার সঙ্গে আমি কোনভাবে জড়িত থাকার কোনো কারণ নেই, কোনো সুযোগ নেই। জানাজায় আমার নাম ধরে চারঘাট-বাঘার বর্তমান এমপি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও ঈর্ষাপরায়ণভাবে এ রকম উক্তি করতে পারেন, সেটা আমার বোধগম্য নয়। তার কাছ থেকে এটা আশাই করিনি। কী উদ্দেশ্যে, কেন তিনি বলেছেন তা তিনিই বলতে পারবেন। যারা বিবেকসম্পন্ন মানুষ তারা এটাকে সমর্থন করবেন না।’

উল্লেখ্য, গত ২২ জুন বাঘা উপজেলা সদরে আওয়ামী লীগের ২ গ্রুপের সংঘর্ষে গুরুতর আহত হন বাবুল। গত বুধবার (২৬ জুন) বিকেলে তিনি রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউতে মারা যান।

People are also reading