হোম পিছনে ফিরে যান

জিয়া বাড়ি-গাড়ি দিতে চেয়েছিল, খুনির কাছ থেকে কিছু নিইনি : প্রধানমন্ত্রী

jaijaidinbd.com 2024/6/2
ছবি-সংগৃহিত

পরিবারের সব সদস্যকে হত্যার পর ৪৪ বছর আগে এই দিনে (১৭ মে) দেশে ফিরে আসার স্মৃতিচারণ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ৩২ নম্বরে আমরা মিলাদ পড়তে চাইলাম, আমাকে ঢুকতে দেয়নি জিয়াউর রহমান। উল্টো বলেছিল বাড়ি দেবে, গাড়ি দেবে, সব দেবে। বলেছিলাম তার কাছ থেকে কিছু নেব না। খুনির কাছ থেকে আমি কিছু নিতে পারি না।

শুক্রবার (১৭ মে) গণভবনে ৪৪তম স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে আওয়ামী লীগের নেতারা শুভেচ্ছা জানাতে গেলে দলটির সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

এ সময় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকসহ সিনিয়র নেতারা তাকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান। ছাত্রলীগ-যুবলীগসহ অন্যান্য অঙ্গ সংগঠনের নেতারাও উপস্থিত ছিলেন।

জিয়াউর রহমান ও তার স্ত্রী খালেদা জিয়া দিল্লি ও লন্ডনে গিয়ে তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে চেয়েছিলেন দাবি করে শেখ হাসিনা বলেন, আমি যখন দিল্লিতে ছিলাম সেখানে গিয়ে জিয়াউর রহমান আমার সঙ্গে দেখা করতে চেয়েছিল, তার স্ত্রীও দেখা করতে চেয়েছিল, আমি দেখা করিনি। লন্ডনে যখন তখনও দেখা করতে চেয়েছিল, আমরা দেখা করিনি। আমি যখন এলাম ৩২ নম্বরে ঢুকতে দেবে না, উল্টো বাড়ি-গাড়ি সাধবে, সেটা তো আমার কাছে গ্রহণযোগ্য না।

দেশে ফিরে আওয়ামী লীগের হাল ধরার স্মৃতিচারণ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সেদিন (১৯৮১ সালের ১৭ মে) ফিরে এসেছিলাম। এতবড় দল পরিচালনা করার অভিজ্ঞতা ছিল না। ছাত্রলীগ করার সময় নেতা হওয়ার চেষ্টা করিনি। দলের প্রয়োজনে যে দায়িত্ব দিয়েছে সেটাই পালন করেছি। কিন্তু যখন এই দায়িত্ব পেলাম, এটা বড় দায়িত্ব।

আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, কী পেলাম না পেলাম সেই চিন্তা করিনি। ভবিষ্যৎ কী সেই চিন্তাও করি না। চিন্তা করি দেশের মানুষের ভবিষ্যতটা আরও সুন্দরভাবে গড়ে দিয়ে যাব, সেটাই আমাদের লক্ষ্য।

এ সময় প্রধানমন্ত্রী জানান, আজ বাংলাদেশে আওয়ামী লীগ সবচেয়ে শক্তিশালী ও বড় সংগঠন। জনগণের কাছে সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য দল। প্রতিবার চক্রান্ত হয়, সেটা মোকাবিলা করে বেরিয়ে আসেন জানিয়ে আগামীতেও ষড়যন্ত্র হবে বলে দলীয় নেতাদের সতর্ক করেন। সবাইকে সচেতন থাকার তাগিদ দেন তিনি।

নেতাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, মনে রাখবেন, একটা দল করি শুধু নেতা হওয়া না, মানুষের জন্য কতটুকু করতে পারলাম, কী দিতে পারলাম, কী দিয়ে গেলাম– এটাই রাজনীতিকের জীবনের বড় কথা। এই কথাটা মাথায় রাখতে পারলে দেশের মানুষের জন্য অনেক কিছুই করা যেতে পারে।

আর যেন যুদ্ধাপরাধী-খুনিরা বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলতে না পারে সে ব্যাপারে সবাইকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, মুক্তিযুদ্ধ যারা করেছেন তারাই অপরাধী হয়ে গেল, যারা বিরোধিতা করেছিল, গণহত্যা করেছিল তারাই ক্ষমতায়– ওই অবস্থায় দেশে ফিরেছিলাম। আমার তো কিছুই ছিল না। একটা বিশ্বাস ছিল দেশের জনগণ ও আওয়ামী লীগের অগণিত নেতাকর্মীর ওপর। এরপর লড়াই-সংগ্রাম করে এইটুকু বলতে পারি পঞ্চমবারের মতো আওয়ামী লীগ ক্ষমতা এসেছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনা, কারফিউ, প্রতি রাতে মার্শাল ল, দেশের মানুষের কোনো আশা নেই, শুধু হতাশা। এই হতাশ জাতিকে টেনে তোলা যায় না। তাদের মাঝে আশার আলো জাগাতে হয়, ভবিষ্যৎ দেখাতে হয়, উন্নত জীবনের চিত্র তুলে ধরতে হয়। তবেই মানুষকে নিয়ে কাজ করা যায়। আমরা সেটাই করার চেষ্টা করছি।

গত ১৫ বছরে দেশ বদলে গেছে জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, মানুষের যদি রাজনৈতিক চিন্তা-চেতনা না থাকে, দেশপ্রেম না থাকে, সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়ার প্রত্যয় না থাকে, তাহলে সেটা এগোতে পারে না। পঁচাত্তরে যারা ক্ষমতায় ছিল তারা নিজেদের ক্ষমতা কুক্ষিগত করার চেষ্টা করেছিল, দেশের কোনো উন্নতি করতে পারেনি। আজ আমরা বলতে পারি দেশটা বদলে যাওয়া, বদলাতে পেরেছি। সামনে আরও বদলাতে হবে। কারণ আমার বাবার একটাই স্বপ্ন ছিল দেশটাকে গড়ার। আমাদের পরিকল্পনা সেটাই আছে।

People are also reading