হোম পিছনে ফিরে যান

বিপুল পরিমাণ চোরাই অ্যান্ড্রয়েড ফোনসহ চোরাচালানী চক্রের ৪ সদস্য গ্রেপ্তার

corporatesangbad.com 2024/10/5

কর্পোরেট সংবাদ ডেস্ক : নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁও এলাকা থেকে বিপুল পরিমাণ ভারতীয় কারখানায় তৈরি আন্তর্জাতিক বিভিন্ন ব্রান্ডের অবৈধ চোরাই অ্যান্ড্রয়েড ফোন ও ফিচার ফোনসহ চোরাচালান চক্রের ৪ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব-৩)।

মোবাইল চোরাকারবারী চক্রের গ্রেপ্তার আসামিরা হলেন-মূলহোতা আবু তাহের, মেহেদী হাসান (২২), রুবেল হোসেন ও নূর নবী। অভিযানে তাদের কাছ থেকে ৮০৮টি চোরাই মোবাইলফোন, দুটি প্রাইভেটকার এবং নগদ পাঁচ হাজার ৩শ ৬৯ টাকা জব্দ করা হয়।

রোববার (৩০ জুন) রাতে র‍্যাব-৩ এর সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ফয়জুল ইসলাম গণমাধ্যমে এ তথ্য জানান।

র‍্যাব জানায়, দীর্ঘদিন যাবৎ র‍্যাব-৩ চোরাই মোবাইল ক্রয় বিক্রয়ের সাথে জড়িত সংঘবদ্ধ চক্রের কার্যক্রমের উপর নজরদারী করে আসছে। এরই ধারাবাহিকতায় গোয়েন্দা কার্যক্রম পরিচালনা করে ভারত হতে কুমিল্লা সীমান্তবর্তী এলাকা দিয়ে বিপুল পরিমাণ মোবাইলফোন বাংলাদেশে এনে তা কম দামে বিভিন্ন শ্রেনীর গ্রাহকের কাছে বিক্রয়কারী একটি মোবাইল চোরাকারবারীর চক্রের সন্ধান পাওয়া যায়। এসব অপরাধীদের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করে বিপুল পরিমান চোরাই মোবাইল উদ্ধারসহ উক্ত চক্রের ৪ জন অপরাধীকে গ্রেফতার করা হয়।

সুনির্দিষ্ট গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ২৯ জুন রাতে নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁও এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে দেশের সীমান্তবর্তী এলাকা দিয়ে ভারতীয় চোরাই মোবাইল চোরাকারবারী চক্রের মূলহোতা আবু তাহের (২৬), পিতা-তারা মিয়া, তিতাস, কুমিল্লা এবং তার অন্যতম সহযোগী মোঃ মেহেদী হাসান (২২), পিতা-মোঃ জাহাঙ্গীর আলম, কুমিল্লা সদর, মোঃ রুবেল হোসেন (২৯), পিতা-মোঃ জুলহাস, তিতাস, কুমিল্লা, মোঃ নূর নবী (৩২), পিতা-নূর ইসলাম, সেনবাগ, নোয়াখালীদেরকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। গ্রেফতারকৃত আসামীদের হেফাজত হতে ৮০৮ টি চোরাই মোবাইলফোন, ২টি প্রাইভেটকার, এবং নগদ ৫,৩৬৯/-টাকা জব্দ করেছে র‍্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন-৩।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃত আসামিরা জানায় যে, তারা আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিয়ে অবৈধ ভাবে চোরাইপথে কুমিল্লা সীমান্তবর্তী এলাকা দিয়ে ভারতীয় কারখানায় তৈরী আন্তর্জাতিক বিভিন্ন ব্রান্ডের মোবাইল ফোন চোরাকারবারীর মাধ্যমে কুমিল্লা-ঢাকা রুট ব্যবহার করে রাজধানীতে নিয়ে আসে। মূলত সরকারি রাজস্ব ফাঁকি দেওয়ার কারনে অধিক লাভের আশায় গ্রাহকের কাছে কমদামে বিক্রয় করা হয় ফলে বাজারে এ সকল মোবাইল ফোনের অনেক চাহিদা রয়েছে। এছাড়াও এ সকল ফোনের ওগঊও নম্বর বিটিআরসির নথিভুক্ত না থাকায় অপরাধীরা বিভিন্ন অপরাধমূলক কার্যক্রমের জন্য চোরাইপথে আসা ভারতীয় এধরনের মোবাইল ব্যবহার করে থাকে। ধৃত আসামিরা আরও জানায়, চোরাইপথে আনা এ সকল মোবাইল তারা রাজধানীর বিভিন্ন মোবাইল বিক্রয়কারী মার্কেটে সরবরাহ করত।

গ্রেফতারকৃত আবু তাহের ভারত হতে মোবাইল ফোন চোরাকারবারী এই চক্রটির মূলহোতা। তাহের গত ০৩ বছর পূর্বে কুমিল্লা জেলার গৌরীপুর এলাকায় একটি মোবাইল শো-রুমে বিক্রয়কর্মী হিসেবে চাকুরি শুরু করে। তখন থেকেই কুমিল্লার বিভিন্ন সীমান্ত পথে অবৈধভাবে সংঘবদ্ধ মোবাইল চোরাকারবারী চক্রের সাথে তার সখ্যতা গড়ে উঠে। একপর্যায়ে মোবাইলের শো-রুমে চাকুরির পাশাপাশি সে নিজেও এসব ভারতীয় ব্রান্ডের চোরাই মোবাইলের চালান আনিয়ে কুমিল্লাসহ রাজধানীর বিভিন্ন মার্কেটে সরবরাহ করতে শুরু করে। অল্প সময়ে অধিক অর্থ লাভের আশায় এবং তার এই অপরাধ কর্মকান্ডটি বিস্তৃত করতে সে নিজেই একটি সংঘবদ্ধ চক্র গড়ে তোলে। তার নেতৃত্বে চক্রটি কুমিল্লা সীমান্ত এলাকা দিয়ে গত দেড়মাসে এ ধরনের ০৫টি বড় চালান ঢাকায় সরবরাহ করেছে বলে প্রাথমিকভাবে স্বীকার করেছে।

গ্রেফতারকৃত মেহেদী উক্ত চক্রটির মূলহোতা আবু তাহেরের অন্যতম সহযোগী। সে কুমিল্লা সদর দক্ষিণের বাসিন্দা। তার এক পরিচিত ভাইয়ের মাধ্যমে চোরাইপথে মোবাইল আমদানির চক্রে তাহেরের সাথে জড়িয়েছে বলে জানা যায়। গত দেড় মাসে সে তাহের এর সাথে মিলে ৫ টি বড় চালান নির্বিঘ্নে ঢাকায় সরবরাহ করেছে। তার দাবী সে কুমিল্লা সদরের জনৈক সাজ্জাদ ওরফে শাকিল কর্তৃক বেতনভুক্ত কর্মচারী তবে তার এই দাবীর সত্যতা পাওয়া যায় নি।

গ্রেফতারকৃত রুবেল একজন গাড়ি চালক। প্রথমে সে রেন্ট এ কার এর গাড়ি ভাড়ায় চালালেও পরবর্তীতে তাহের এর চক্রে যোগ দেয়ার পরে তাহের তাকে একটি প্রাইভেটকার ভাড়ায় চালাতে দেয়। সে উক্ত প্রাইভেটকারটি চালানোর আড়ালে চোরাইপথে আসা মোবাইলসমূহ তাহেরের নির্দেশে বিভিন্ন এলাকায় সরবরাহের কাজ করে থাকে। এছাড়াও গ্রেফতারকৃত নূরনবী ফেনী জেলার মহিপাল এলাকার জনৈক টিটু চৌধুরীর ব্যক্তিগত গাড়িচালক হিসেবে চাকুরি করত। তাহেরের সাথে পরিচয়ের পর অতিরিক্ত অর্থ উপার্জনের আশায় সে চোরাই মোবাইল ফোন পরিবহনের এই চক্রের প্রস্তাবে রাজি হয় এবং তাহেরের নির্দেশে বিভিন্ন সময় মোবাইল ফোনের চালান বিভিন্ন এলাকায় পৌছে দেয়ার কাজ শুরু করে।

গ্রেফতারকৃত আসামিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।

------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------

© ২০২৩ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত | কর্পোরেট সংবাদ

সম্পাদক - মোঃ মিজানুর রহমান । উপদেষ্টা সম্পাদক- জেসমিন আক্তার, এফসিএস

ই-মেইলঃ corporatesangbad@gmail.com । ফোনঃ ০২২২-৩৩৫৪১২৫ । মোবাইলঃ ০১৭১১০৭৬৮১৫

অফিসঃ ৫৫/বি, নোয়াখালী টাওয়ার, ১১ তলা, সুইট ১১-এফ, পুরানা পল্টন, ঢাকা ১০০০

People are also reading