হোম পিছনে ফিরে যান

চাঁদপুরে সম্পত্তিগত বিরোধে আপন ভাই-বোনকে ডিবি পরিচয়ে প্রতারণা

alokitobangladesh.com 5 দিন আগে
চাঁদপুরে সম্পত্তিগত বিরোধে আপন ভাই-বোনকে ডিবি পরিচয়ে প্রতারণা

চাঁদপুরে সম্পত্তিগত বিরোধের জের ধরে আপন ভাই স্বপন খান ও বোন সামছুন্নাহারকে ভুয়া ডিবি পুলিশের মাধ্যমে প্রতারণা করে ৩৭ হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। পরবর্তীতে আরো ২ লাখ টাকা চাঁদা দাবী করায় পারিবারিক মারামারির ঘটনায় পুরো সাজানো ঘটনাটি ফাঁস হয়ে যায়।

এ ঘটনায় চাঁদপুর সদর মডেল থানায় গত (২৫জুন) মঙ্গলবার ৪ প্রতারকের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হলে পুলিশ ৩জন প্রতারককে (২৬জুন) আটক করে আদালতে পাঠায়। তারা ৩জন আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দী কালে ঘটনার মূলপরিকল্পনাকারী সাংবাদিক নামধারী নিজামউদ্দিনের নাম প্রকাশ করেছে এবং পুরো ঘটনা সর্ম্পকে বিস্তারিত আদ্লাতের কাছে উপস্থাপন করে বলে আজ বৃহস্পতিবার(২৭জুন) মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উপপরিদর্শক(এসআই) মো: শাহজাহান জানিয়েছেন।

ঘটনাটি ঘটেছে,গত ২৪ এপ্রিল রাত ৯ টায় শহরের বঙ্গবন্ধু সড়কের একটি নির্জন এলাকায়। চাঁদপুর শহরের জেনারেল হাসপাতাল (প্রা:) লি: এর আয়া শামসুন্নাহার প্রতিদিনের ন্যায় হাসপাতালে আয়ার কাজ শেষে বাড়ি ফেরার পথে এই ঘটনাটি ঘটায় ভিকটিম শামছুন্নাহারের আপন ভাই স্বপন খান,সাংবাদিক নামধারী নিজামউদ্দিনসহ ৪জন।

এই ঘটনায় শামসুন্নাহার বাদী হয়ে তার আপন ভাই স্বপন খানকে প্রধান ও নিজামুদ্দিনকে দ্বিতীয় আসামি করে মোট চারজনের বিরুদ্ধে চাঁদপুর মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন।

এই ঘটনায় যা জানা গেছে- প্রতারকরা ভারতীয় জনপ্রিয় ক্রাইম পেট্রোল দেখে পরিকল্পনার পর আপন বোনকে ইয়াবা দিয়ে ফাঁসিয়ে ভুয়া ডিবি পুলিশ সেজে ধরার পর প্রতারণা করে ৩৭ হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়েছে প্রতারক চক্র। অবশেষে অপরাধীদের এই গুরুতর অপরাধ কর্মকান্ড সংঘটিত করার পরিকল্পনার মোবাইলের কল রেকর্ড ফাঁস হওয়ায় ঘটনাটি সঠিক ঘটনায় রুপনেয়।

মামলা তদন্তকারী কর্মকর্তা উপপরিদর্শক(এসআই) শাহজাহান দক্ষতার পরিচয় দিয়ে তথ্য প্রমাণ কল রেকর্ড সংগ্রহের পর ভুয়া ডিবি পুলিশ সেজে একজন নিরীহ নারীর কাছ থেকে টাকা আদায় করার ঘটনায় অপরাধী তিনজনকে আটক করতে সক্ষম হন।

পুলিশের হাতে আটক হওয়া বিষ্ণনদী রোডের এজাহার ভুক্ত আসামি রুস্তম মিজির ছেলে আল-আমিন,মৃত হাসেম খন্দকারের ছেলে মাহবুব খন্দকার ও হারুন চৌকিদারের ছেলে সৌরভ প্রকাশ খোকনরা মূল পরিকল্পনাকারী নিজামুদ্দিন নামে একজন প্রতারক জড়িত রয়েছে বলে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী প্রেরণ করেন। সেই প্রতারক নিজামুদ্দিন তার মোবাইল থেকে মামলার প্রধান আসামি স্বপন খানের সাথে কথা বলার কল রেকর্ড পুলিশ সংগ্রহ করে আদালতে উপস্থাপন করেন।

এ প্রতারনার ঘটনায় মামলার বাদী হাসপাতালে আয়া শামসুন্নাহার জানান,আপন ভাই স্বপনের সাথে সম্পত্তিগত বিরোধ চলে আসছিল। ঘটনার দিন সেই ভাই এলাকার লম্পট নিজামুদ্দিনের সাথে পরিকল্পনা করে। ঘটনার দিন রাতে চাঁদপুর শহরের জেনারেল হাসপাতালের আয়ার কাজ শেষে শামসুন্নাহার বাড়ি ফেরার পথে ভাই স্বপন ও তার সহযোগী নিজামের ইঙ্গিতে জনৈক এক যুবক এসে একটি গেঞ্জির ব্যাগ দিয়ে সেটি তার বাড়ির সামনে দোকানদারের কাছে পৌঁছিয়ে দেওয়ার জন্য অনুরোধ করে। সেই ব্যাগটি দিয়ে যাওয়ার পরক্ষনে আরো ৪ জন এসে তারা ডিবি পুলিশ পরিচয় দিয়ে একটি অটো রিক্সায় উঠিয়ে বাদীকে শহরের বিভিন্ন জায়গায় ঘুরাতে থাকে। এ সময় তারা সেই ব্যক্তি থেকে ইয়াবা উদ্ধারের নাটক সাজিয়ে আটকের ভয় দেখিয়ে ২ লক্ষ টাকা দাবি করে।

পরবর্তীতে আপন ভাই স্বপন ও তার সহযোগী নিজামুদ্দিন এসে ২ লক্ষ টাকা দেওয়ার কথা বলে চাপ দেয়। পরবর্তীতে মান সমানের কথা চিন্তা করে বেগে থাকা ১৭ হাজার ও বাড়ি থেকে ২০ হাজার টাকা নিয়ে দোকানের সামনে ভাইয়ের হাতে টাকা তুলে দেয়।

বাকি টাকার জন্য চাপ প্রয়োগ করলে এ নিয়ে বাড়িতে মারামারি ঘটনা ঘটে। ভুয়া ডিবি পুলিশ সেজে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার ঘটনায় থানায় মামলা দায়ের করলে পুলিশ ভাইয়ের মোবাইলের রেকর্ড সংগ্রহের পর থলের বিড়াল বেরিয়ে আসে।

People are also reading