স্বর্ণালংকার লুট করতে বৃদ্ধা নানীকে হত্যা
এই খবরটি পডকাস্টে শুনুনঃ
কক্সবাজারের টেকনাফে স্বর্ণালংকার লুট করতে বৃদ্ধা নানী জাহেদা খাতুন (৭৫) কে হত্যার পর বস্তাবন্দি করে বাড়ির পাশের নালায় ফেলে দেয় নাতি ছৈয়দ হোসেন ওরফে মামুন।
সোমবার ১ জুন রাত সাড়ে ১২ টায় টেকনাফ উপজেলার সাবরাং ইউনিয়নের রুহুল্ল্যারডেবা এলাকার একটি নালা থেকে বস্তাবন্দি লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
নিহত জাহেদা খাতুন একই এলাকার ছৈয়দ আহমদের স্ত্রী। তিনি সাবরাং ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি সাব্বির আহমদের মা।
নিহতের স্বজন ও স্থানীয়দের বরাতে টেকনাফ থাকান ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ওসমান গনি বলেন, সোমবার বিকেলে জাহেদা খাতুন পালিত ছাগলের খোঁজ নিতে বের হন। সন্ধ্যার পরও তিনি বাড়িতে ফিরে না আসায় স্বজনরা সম্ভাব্য বিভিন্ন স্থানে খোঁজ-খবর নিতে শুরু করেন। এক পর্যায়ে মধ্যরাতে বাড়ির পার্শ্ববর্তী একটি নালায় সন্দেহজনক মুখ বাঁধা একটি বস্তা দেখতে পান। পরে স্বজনরা বস্তাটি খুললে জাহেদা খাতুনকে মৃত অবস্থায় দেখতে পায়। নিহতের মুখমণ্ডলে কিল-ঘুষি বা অন্য কোন কিছুর দ্বারা আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।
ওসি বলেন, ‘স্বজনরা জানিয়েছে, নিহত বৃদ্ধা অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী পরিবারের নারী। তিনি গলায় ও কানে দেড় ভরি ওজনের স্বর্ণালংকার পরিহিত অবস্থায় ছিলেন। পুলিশ প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে, স্বর্ণালংকার লুটের জন্য বৃদ্ধা ওই নারীকে হত্যার পর খুনিরা লাশ বস্তাবন্দি করে বাড়ির পাশের ড্রেনে ফেলে দিয়ে পালিয়ে গেছে।’
নিহতের ছেলে সাব্বির আহমদ বলেন, আপন এক চাচাতো বোন মোবিনা আক্তার তার প্রতিবেশী। ওই চাচাতো বোনের ছেলে ছৈয়দ হোসেন ওরফে মামুন একজন বেকার ও উশৃঙ্খল প্রকৃতির। ইতিপূর্বে এলাকায় সংঘটিত কয়েকটি চুরি ও ছিনতাইয়ের ঘটনায় মামুনের জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে।
তিনি বলেন, আমার মা জাহেদা খাতুন গলায় ও কানে সবসময় দেড় ভরি ওজনের স্বর্ণালংকার পরে থাকতেন। গত কয়েকদিন ধরে আমার মা বাড়ি থেকে একা বের হলে মামুনসহ ২-৩ জন যুবক অনুসরণ করতো। এ নিয়ে সন্দেহ হওয়ায় বিষয়টি মা আমাকে অবহিত করেছিলেন।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘আমার মাকে মৃত অবস্থায় উদ্ধারের পর গলায় ও কানে পরিহিত স্বর্ণালংকার পাওয়া যায়নি। এতে ধারণা করা হচ্ছে, মামুনসহ ঘটনায় জড়িতরা মা খুন করে স্বর্ণালংকার লুটের পর লাশ বস্তাবন্দি করে নালার পাশে জঙ্গলে ফেলে রেখে পালিয়ে গেছে।
ওসি মুহাম্মদ ওসমান গনি জানান, সোমবার রাতে পুলিশ লাশটি উদ্ধার করে রাতে থানায় নিয়ে আসে। পরে মঙ্গলবার সকালে লাশটি ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানোর হয়। এরপর দুপুরে সেখানে ময়নাতদন্ত শেষে লাশটি স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
ঘটনায় জড়িতদের চিহ্নিত করে গ্রেপ্তারে পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে বলে জানান তিনি।