জুম খোকনের কমিটি বাণিজ্যে ধ্বংসের পথে বহির্বিশ্ব বিএনপি
দেশে এবং বিদেশে বিএনপির কর্মপন্থা সক্রিয় করার লক্ষ্যে লন্ডন প্রবাসী বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ছোটখাটো সকল কমিটিকে ঢেলে সাজানোর উদ্যোগ নিয়েছিলেন। বিভিন্ন সময়ে কয়েকজন আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদককে দায়িত্ব দেয়া হয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি কমিটি গঠনের জন্য। তাঁরা সশরীরে চেষ্টা করে অল্পতেই হার মেনে যান অর্থাৎ যুক্তরাষ্ট্রের কমিটিগুলো ঢেলে সাজাতে ব্যর্থ হন। এদের মধ্যে সাবেক শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী ড. এহসানুল হক মিলন, মাহিদুর রহমান, ব্যারিস্টার আবু সায়েম উল্লেখযোগ্য। এভাবে কমিটি বিহীন যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির সময় কেটেছে অনেকগুলি বছর।
রাজনৈতিক কাজ করতে হলে সুশৃঙ্খল কমিটির প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করে যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির নেতাকর্মীরা ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের কাছে আবেদন করেন যে কোন ভাবে যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির কমিটি দেয়া হলে সবাই তা মেনে নেবেন। এই সুযোগ কাজে লাগিয়েছেন অখ্যাত এক বিএনপি নেতা আনোয়ার হোসেন খোকন ওরফে জুম খোকন। তিনি তখন ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে বুঝিয়ে নানা কৌশলে যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি কমিটি গঠনের দায়িত্বভার বাগিয়ে নেন।
তিনি প্রথমে যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির সিনিয়র নেতৃবৃন্দের সাথে সখ্যতা গড়ে তুলে আস্তে আস্তে নিজের পছন্দের কিছু অপরিপক্ক তরুণ নেতাদের দিয়ে কয়েকটি স্টেটের আহ্বায়ক কমিটি গঠন করেন। যেহেতু দীর্ঘদিন কমিটি না থাকার কারণে মানুষের মনে আশার সঞ্চার শুরু হয় অন্তত কিছু একটাতো হচ্ছে! তাই ভুলভ্রান্তিতে ভরা সেই আহ্বায়ক কমিটিগুলি নিয়ে কেও কোন মুখ খোলেনি, মেনে নিয়েছিলেন। যেহেতু আপাত দৃষ্টিতে তিনি বেশ কয়েকটি আহবায়ক কমিটি গঠনে সফল হয়েছেন সেহেতু ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তার উপর আস্থা রেখে আরো কিছু দায়িত্ব অর্পণ করেন। এভাবেই দুরন্ত হয়ে ওঠেন জুম খোকন।
বিএনপি চেয়ারম্যানের এই দুর্বলতাকে কাজে লাগিয়ে আনোয়ার হোসেন খোকন ওরফে জুম খোকন একে একে শুরু করেন তার আসল ধান্ধা। প্রথমে বাগিয়ে নেন আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদকের পদ, এরপর শুরু করেন বিভিন্ন দেশের কমিটি গঠনের পদ বাণিজ্য। এখন তিনি আন্তর্জাতিক সম্পাদকের বাইরে নিজেকে উত্তর আমেরিকা, দক্ষিণ আমেরিকা, আফ্রিকা, এশিয়া, অস্ট্রেলিয়া, মধ্যপ্রাচ্য সহ সকল দেশের সংগঠনিক দায়িত্বপ্রাপ্ত বলে নিজের নামের সাথে টাইটেল জুড়ে রাখেন। এতে করে যে সুবিধাটা হয় সেটা হলো প্রবাসের কমিটি বাণিজ্যের রমরমা ব্যবসাটা পাকাপোক্ত করা সম্ভব হয়। সাধারণ নেতাকর্মীরা টাইটেল দেখে মনে করেন তারেক রহমানের পরেই আনোয়ার খোকনের ক্ষমতা তাই কোন শব্দটুকু করতেও সাহস করেন না। এটাকে পুঁজি করে চলছে জুম খোকনের রমরমা ব্যবসা।
তিনি শুধুমাত্র প্রবাসী বিএনপি কমিটি বাণিজ্যের সাথে জড়িত নন, তিনি ইতিমধ্যে বিএনপি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের চোখে ধুলা দিয়ে একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট গড়ে তুলেছেন। দেশের বাড়ী 'কুমিল্লা' ইমেজ কাজে লাগিয়ে লন্ডন প্রবাসী বিভক্ত সিলেট নেতৃত্বকে আলাদা করে চেয়ারম্যানের কাছে নতুন নতুন ফর্মুলা উপস্থাপন করেন। বিএনপি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান জুম খোকনের বিচক্ষণতা ও মিষ্টি মিষ্টি ধর্মীয় কথায় মুগ্ধ হয়ে একের পর এক পদোন্নতি দিয়ে চলেছেন। এত ক্ষমতার পরেও সম্প্রতি বিদেশ বিষয়ক সম্পর্কোন্নয়ন কমিটিতে জুম খোকনকে সদস্য পদ দেয়া হয়েছে। বর্তমানে জুম খোকনের অহংকার এতটাই বৃদ্ধি পেয়েছে যে প্রবাসী বিএনপি কমিটি গঠনের জুম মিটিংয়ে নিজেকে বিএনপির প্রধান বলে দাবি করেন। ইনিয়ে বিনিয়ে এটাই তিনি বুঝাতে চাইছেন যে বিএনপি মানেই আনোয়ার হোসেন খোকন।
লন্ডন সিন্ডিকেটের অন্যতম প্রধান আনোয়ার হোসেন খোকনকে এখনই যদি কন্ট্রোল করা না হয় তাহলে ঠিক যেভাবে হাওয়া ভবনের দোহাই দিয়ে সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী গিয়াস উদ্দিন মামুন দুর্নীতির পাহাড় গড়ে তুলেছিলেন ঠিক তেমনি জুম খোকন ও তার নিজস্ব দুর্নীতি জগৎ তৈরী করে নিবেন এবং এতে ক্ষতিগ্রস্থ হবে বিএনপি, ধ্বংস হবে দলের সকল অর্জিত সুনাম।
আমাদের ধারাবাহিক অনুসন্ধানে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন স্টেটে বিএনপি নেতাকর্মীদের সাথে যোগাযোগ করে জানা গেছে আনোয়ার হোসেন খোকন ওরফে জুম খোকন বিএনপির নেতা খুঁজে কমিটি গঠন করেন না তিনি বরং তার ব্যক্তি চামচা খুঁজে পদপদবী বন্টন করেন। তার তেলবাজি না করলে কিংবা চামচামি না করলে তাকে বিএনপির সকল পদ পদবি থেকে বঞ্চিত করেন। দলের ত্যাগী নেতাকর্মীদের কোন মূল্য তার কাছে নাই. চামচামি আছেতো পদবি আছে চামচামি নাইতো পদ পদবি নাই। সহজ সরল ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান এখনও জুম খোকনের চালাকি বুঝে উঠতে পারছেন না হয়ত যেদিন বুঝতে পারবেন ততদিনে জুম খোকন অনেক বেশি শক্তিশালী হয়ে যাবে এবং ষড়যন্ত্রকারীদের সাথে মিশে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের আরেকবার কোমর ভাঙার প্রচেষ্টায় লিপ্ত হবে। তাই সময় থাকতে জুম খোকনের লাগাম টেনে ধরা উচিত বলে প্রবাসী জাতীয়তাবাদে বিশ্বাসীরা ধারণা করছেন।