হোম পিছনে ফিরে যান

‘৪০০ পার’ ভুলে ধর্মীয় বিভাজন ভরসা বিজেপির

anandabazar.com 2024/5/7
নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ০৮:০৮

PM Narendra Modi.

প্রথম দফা ভোটের আগে প্রচারের মূল মন্ত্র ছিল ৪০০ আসন ছোঁয়া। কিন্তু তাতে জনমানসে ধন্দ সৃষ্টি হওয়ায় পাল্টে গিয়েছে প্রচারের ভাষা। কাল দ্বিতীয় দফা ভোট শুরুর আগে দেখা যাচ্ছে ৪০০ আসনের প্রসঙ্গ উধাও, পরিবর্তে হিন্দু-মুসলমান বিভাজনের কথা বলে মেরুকরণের পুরনো অস্ত্রেই ভরসা রাখতে চাইছেন নরেন্দ্র মোদী তথা বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্ব। ১২টি রাজ্য ও একটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল মিলিয়ে মোট ৮৯টি আসনে কাল দ্বিতীয় দফায় ভোট হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু মধ্যপ্রদেশের বেতুল কেন্দ্রের বিএসপি প্রার্থী মারা যাওয়ায় ভোট স্থগিত হয়েছে। দার্জিলিং, বালুরঘাট ও রায়গঞ্জ— পশ্চিমবঙ্গের ৩টি কেন্দ্রেও কাল ভোট রয়েছে।

প্রথম পর্বে এনডিএ শাসিত রাজ্যগুলিতে ভোটের হার কম হওয়া উদ্বেগে রেখেছে গেরুয়া শিবিরকে। এ পর্বে এনডিএ শাসিত বিহার, উত্তরপ্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থান, মহারাষ্ট্রে ভোট রয়েছে। গত বার দ্বিতীয় পর্বে যে ভোট হয়েছিল, তাতে ৮৮টি আসনের মধ্যে ৬১টিতে জিতেছিল এনডিএ। বিজেপি জিতেছিল ৫২টি আসনে। কংগ্রেস জিতেছিল কেবল ১৮টি আসনে। বিজেপির বক্তব্য, সে বার প্রথম দু’টি পর্বেই দুই-তৃতীয়াংশ আসনে জয় নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিল।

কিন্তু এ বার চিত্রটি যে আলাদা, মেনে নিচ্ছে বিজেপি। গত দু’টি লোকসভায় বিজেপির পক্ষে মোদী ঝড় ছিল। এ যাত্রায় তা অদৃশ্য। উল্টে প্রতিষ্ঠান বিরোধিতার চোরা স্রোতে উৎসাহিত কংগ্রেস। সমস্যা হল বিজেপি কোনও পথে প্রচার চালাবে তা নিয়ে দলেই সংশয় রয়েছে। গোড়ায় দলের জন্য ৩৭০ ও এনডিএ-র জন্য ৪০০ আসনের লক্ষ্য রেখে ঝড় তুলছিলেন মোদী। তিনি ৪০০ আসনের শক্তিতে বলীয়ান হয়ে সংরক্ষণ তুলে দিতে সংবিধান পাল্টাতে চাইছেন বলে প্রচার শুরু করে বিরোধীরা। ফলে প্রথম পর্বের পরেই পুরনো ধর্মীয় মেরুকরণের অস্ত্র তুলে নেন মোদী। কিন্তু কৃষকদের ফসলের ন্যায্য দাম না পাওয়া, বেকারত্বের সমস্যা, অর্থনীতির বেহাল দশা, সরকারি চাকরির অপ্রতুলতার মতো সমস্যাগুলিকে মেরুকরণের অস্ত্র মুছবে কি না, এই দফায় তারই পরীক্ষা।

কালকের ভোটে যে রাজ্যগুলিতে ভোট হতে চলেছে তার অন্যতম কেরল। ওই রাজ্যের ২০টি লোকসভা আসনে ভোট। ওয়েনাড় থেকে লড়ছেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী (তালিকায় নজরকাড়া প্রার্থীরা)। বিজেপি শিবিরের মতে, ওয়েনাড়ে ভোটপ্রাপ্তির উপরে নির্ভর করছে রাহুলের অমেঠী যাত্রা। বিজেপির এক নেতার কথায়, “রাহুল অমেঠী থেকে মনোনয়ন জমা দিলে ধরে নিতে হবে ওয়েনাড়ে তাঁর জেতার আশা নেই।” তিরুঅনন্তপুরমে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রাজীব চন্দ্রশেখর দাঁড়ালেও, তিন বারের কংগ্রেস সাংসদ শশী তারুরের জয়ে সমস্যা হবে না বলেই মনে করা হচ্ছে।

২৮ আসনের কর্নাটকে কাল ১৪টি আসনে ভোট হতে চলেছে। বিজেপিকে ক্ষমতায় পৌঁছে দেওয়ার পিছনে গত বার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছিলেন ইয়েদুরাপ্পা। সে যাত্রায় রাজ্যে ২৫টি আসনে জিতেছিল বিজেপি। ইয়েদুরাপ্পার ছেলে বিজয়েন্দ্র এ বার বিজেপি সভাপতি। কংগ্রেসের সিদ্দারামাইয়া ও ডি কে শিবকুমার জুটিও এ বার ভাল ফল করতে মরিয়া। জেডিএস-এর সঙ্গে হাত মিলিয়েছে বিজেপি। কিন্তু দল ধরে নিয়েছে কর্নাটকে ভাল ফল হচ্ছে না।

মরাঠা-ভূমে নয়া জোট সঙ্গীরা কেমন ফল করে তার উপরে অনেকটাই নির্ভর মহারাষ্ট্রে বিজেপির ভাল ফল করা। কাল পশ্চিম উত্তরপ্রদেশে শেষ দফায় নির্বাচন। জাঠ ও মুসলিম অধ্যুষিত এই এলাকায় বিজেপি বরাবরই দুর্বল। এ ছাড়া ক্ষত্রিয় সমাজের ক্ষোভ উত্তরপ্রদেশের সঙ্গে রাজস্থানেও বিজেপিকে সমস্যায় ফেলতে চলেছে।

People are also reading