সরকারকে তুষ্ট করার আরও একটি নির্বাচন
ক্ষমতার প্রয়োজনে দলীয় গঠনতন্ত্র লঙ্ঘন করে ডামি প্রার্থী প্রদানের কৌশলের যে একটা মূল্য আছে, তা এখন একেবারে খোলাসা হয়ে গেছে। নেতার নির্দেশ অলঙ্ঘনীয় বা শিরোধার্য বলে যে জনশ্রুতি (মিথ) রাজনীতিতে প্রতিষ্ঠা পেয়েছিল, তা অনেকটাই ভেঙে গেছে। রাজনীতিতে এটিকে একটা ইতিবাচক পরিবর্তনের সূচনা বলেও কেউ গণ্য করতে চাইলে তা একেবারে নাকচ করে দেওয়া যাবে না। ওপর থেকে কিছু চাপিয়ে দেওয়া আর যা-ই হোক, তা গণতান্ত্রিক নয়।
দলীয় শৃঙ্খলায় অবাধ্যতার যে প্রশ্ন উঠেছে, তার পেছনে দলের ভেতরেই দ্বৈত নীতি অনুসরণের ভূমিকাও অস্বীকার করা যায় না। সমকাল ৩ মে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের ভাই এবং সাবেক রাষ্ট্রপতির বোনও প্রার্থী হয়েছেন। শীর্ষস্থানীয় নেতাদের পরিবারের সদস্যরা যদি দলের ভেতরে নিজস্ব অবস্থানের কারণে প্রার্থী হতে পারেন, তাহলে অন্য মন্ত্রী-এমপিরাও যে তাঁদের পরিবারের সদস্যদের বেলায় একই অধিকার চাইবেন, সেটাই তো স্বাভাবিক। সাবেক মন্ত্রী শাজাহান খান তাঁর ছেলের প্রার্থিতার বিষয়ে প্রকাশ্যে সে কথাই বলেছেন বলে একই পত্রিকায় খবর ছাপা হয়েছে।
আরেকটি চমকপ্রদ তথ্য দিয়েছে বণিক বার্তা। গত ২০ এপ্রিল তারা জানায় যে মন্ত্রী-এমপিদের স্বজন কারা, সেই সংজ্ঞা নির্ধারণে দলটির মধ্যে মতভেদ দেখা দিয়েছে। তা ছাড়া প্রশ্ন হচ্ছে, স্বজন হলে রাজনীতিতে তাঁর অধিকার খর্ব করার নীতি কোনো রাজনৈতিক দল আদৌ কি নিতে পারে? মূল সমস্যা তো মন্ত্রী-এমপিদের ক্ষমতা ও প্রভাবকে বেআইনিভাবে কাজে লাগানো বন্ধ করার ক্ষেত্রে প্রশাসনের অক্ষমতা, কোনো কোনো ক্ষেত্রে অনিচ্ছা; আবার কোনো কোনো ক্ষেত্রে অনৈতিক ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত যোগসাজশ।