বলিউডের গানে অভিষেক হলো আসিফ আকবরের
বাংলা গানের তৃতীয় শিল্পী হিসেবে আসিফ বলিউডে গান গাইলেন। এর আগে উপমহাদেশের প্রখ্যাত সঙ্গীত শিল্পী রুনা লায়লা, জনপ্রিয় ব্যান্ড তারকা জেমস গান গেয়েছেন।
এ আর রাহমানের মুম্বাইয়ের কে এম স্টুডিওতে গান রেকর্ডিং শেষে আসিফ ফেসবুকে লিখেছেন, ‘মুম্বাই এসেছি কিছু রেকর্ডিংয়ের কাজে। দুটো গানের ভয়েস দিলাম শ্রদ্ধেয় এ আর রাহমান স্যারের কে এম স্টুডিওতে। কমপক্ষে ১৫ হাজার স্কয়ার ফিটের সুবিশাল স্টুডিও। ভেতরে ঢুকেই মনটা ভালো হয়ে গেল, কী চমৎকার পরিবেশ! যাঁরা উনার কাছে মিউজিক ক্লাস করেন, তাঁদের জন্য ছাদে শেড দেওয়া সুন্দর খোলামেলা স্কুল। তাঁর ব্যক্তিগত স্টুডিওতে গাওয়ার অনুমতি পেয়েছি, এটা পরম সৌভাগ্য আমার জন্য। ভয়েস রুমের টেম্পারেচার কেমন হওয়া উচিত সেটার অভিজ্ঞতাও পেলাম।’
‘চিরদিনের সঙ্গিনী’ শিরোনামে গানটি লিখেছেন কবির বকুল। আর সুর ও সংগীত করেছেন সংগীত প্রেমীদের পরিচিত নাম সংগীত শিল্পী ও সংগীত পরিচালক রাজা কাশেফ। গানটি মেলোডিয়াস ডুয়েট বলে জানিয়েছেন রাজা কাশেফ।তিনি জানান, আগামী ১৫ মে লন্ডনে এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে উন্মোচন করা হবে। আসিফ আকবর সেখানেও থাকবেন ।
জানা গেছে, কিংবদন্তী সঙ্গীতশিল্পী অনুরাধা পড়োয়াল এ গানে কণ্ঠ দিয়েছেন কিছুদিন হলো। এর মধ্যে তিনি ভারতের ক্ষমতাসীন দল বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন। হয়তো আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে অংশ নিবেন। নব্বইয়ের দশকে ‘আশিকি’, ‘দিল হ্যায় কে মানতা নেহি’, ‘দিল’, সাজনের মতো চলচ্চিত্রে গান করে তুমুল জনপ্রিয়তা পান অনুরাধা পড়োয়াল। ‘আশিকি’ ছবির গানের অ্যালবাম ২০ মিলিয়নের বেশি বিক্রি হয়। ‘নজর কে সামনে’, মুঝে নিন্দ না আয়ে’, ‘দিল হে কি মানতা নেহি’, ‘বহুত প্যায়ার করতে হ্যায়’ ইত্যাদি গান এখনো সংগীত প্রেমীদের কণ্ঠে ধ্বনিত হয়।
এদিকে বাংলাদেশে শীর্ষ জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী আসিফ আকবরের এটি তৃতীয় গান, যা ভারত থেকে মুক্তি পাবে। ২১ বছর আগে ভারতের আরেক নন্দিত শিল্পী কবিতা কৃষ্ণমূর্তির সাথে ডুয়েট করেছিলেন আসিফ। সফল গায়িকা শ্রেয়া ঘোষালের সাথেও গান করেছেন। পাঁচ বছর আগে ভারতে আসিফের প্রথম একক গান মুক্তি পায়। ভারতের মুম্বাইয়ের গ্রিবস মিডিয়া অ্যান্ড প্রোডাকশনের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান গ্রিবস মিউজিক বাংলা ‘অভিনয়’ শিরোনামে গানটি প্রকাশ করে। দুই মিলিয়নের বেশি ভিউ হয়েছিল গানটি।
ভারতের কিংবদন্তী সঙ্গীতশিল্পী অনুরাধা পড়োয়ালের সাথে গান করার সুযোগ পেয়ে খুশি আসিফ আকবর তাঁর ফেসবুক পেজে লিখেছেন, ‘আমার পরম সৌভাগ্য অনুরাধা ম্যাডামের সাথে গান গাওয়ার সুযোগ পেয়েছি। ধন্যবাদ রাজা কাশেফ ও রুবাইয়াৎ জাহানকে। কৃতজ্ঞঁতা শাহেদ ভাই ও সাবাহ ভাবী।
বৃহস্পতিবার আসিফ গান করে ফেরার পথে গাড়িতে বসেই তাঁর ফেসবুক পেজে লিখেছেন, ‘আলহামদুলিল্লাহ। মুম্বাই ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে আমার অভিষেক ঘটেছে। প্রিয় বাংলাদেশের পতাকা উড়িয়েছি। আল্লাহ মহান। ভালোবাসা অবিরাম।’
এর আগে গান শেষ করার পর সংক্ষিপ্ত আড্ডায় মিউজিক ডিরেক্টর, কো-প্রডিউসর ও মিউজিক সংশ্লিষ্ট অন্যরা বলছিল-‘গুলশান কুমার আজকে এখানে থাকলে বলতো এই ছেলেকে আগামী তিন বছরের জন্য টি সিরিজে নিয়ে নিলাম।’ এক জন বলেন-‘আদনান সামিকে একটু একটু পাচ্ছি মনে হয়’। মিউজিক ডিরেক্টর বরেন-‘ঐ শব্দটা রাফি সাহেবের এর মতো এসে গেছে।’ ‘সুভাষ গাই এমন করতো।’ ‘মুম্বাইয়ে এই কণ্ঠটার শূণ্যতা রয়েছে’। কো-প্রডিউসর বরেন-‘সময় সব বলবে আমাদের কিছু বলতে হবে না। কারো উত্থানে একটা উছিলা লাগে, মাধ্যম লাগে।’
আসিফের সফরে সাথে থাকা দৈনিক কুমিল্লার কাগজ সম্পাদক আবুল কাশেম হৃদয় জানান, ‘আমিও প্রচন্ড আত্মবিশ্বাসী উপমহাদেশের প্রখ্যাত সঙ্গীতজ্ঞ শচীন কর্তার পরে কুমিল্লার আসিফ আকবরই মুম্বাইয়ের কিং হবেন। মুম্বাই অভিষেকে আসিফ আকবরের আরেক সফরসঙ্গী ছিলেন সঙ্গীত পরিচালক ও কুমিল্লার কৃতী সন্তান জাভেদ আহমেদ কিসলু।