হোম পিছনে ফিরে যান

সুনামগঞ্জে রাতে বৃষ্টি হয়নি, কমতে শুরু করেছে বন্যার পানি

prothomalo.com 2024/10/6

সুনামগঞ্জে গতকাল মঙ্গলবার রাতে বৃষ্টি হয়নি। একই সময়ে উজান থেকে নেমে আসা ঢলের পানি কম এসেছে। ফলে সুরমা নদীর পানি কমেছে। আজ বুধবার সকাল ৯টায় শহরের ষোলঘর পয়েন্টে পানির উচ্চতা ছিল ৭ দশমিক ৮৪ সেন্টিমিটার, যা বিপৎসীমার ৪ সেন্টিমিটার ওপরে। গত ২৪ ঘণ্টায় সুনামগঞ্জে বৃষ্টি হয়েছে ২৫ মিলিমিটার।

বন্যার পানিতে প্লাবিত থাকায় সুনামগঞ্জ-তাহিরপুর সড়কে আজ সকাল পর্যন্ত সরাসরি যান চলাচল বন্ধ আছে। পানি নেমে যাওয়ায় সুনামগঞ্জ-বিশ্বম্ভরপুর, সুনামগঞ্জ-জামালগঞ্জ সড়ক দিয়ে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে। তবে এখনো তাহিরপুর, দোয়ারাবাজার, বিশ্বম্ভরপুর, সদর উপজেলার নিচু এলাকায়, লোকালয়ে, রাস্তাঘাটে পানি আছে। কিছু কিছু এলাকায় মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে আছে।

একই সময়ে সুনামগঞ্জের উজানে ভারতের চেরাপুঞ্জিতে বৃষ্টি হয় ৪৫৪ মিলিমিটার। এতে জেলার সদর, বিশ্বম্ভরপুর, তাহিরপুর, ছাতক, দোয়ারাবাজার উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়। অনেক রাস্তাঘাট প্লাবিত হয়েছে। শহরের সুরমা নদীর তীরবর্তী অনেক এলাকায় বন্যার পানি প্রবেশ করেছে।

শহরের কালীপুর এলাকার বাসিন্দা আলাউদ্দিন (৫০) বলেন, ‘বাড়িত আইতাম অই পারলাম না। পানি কিছু কমছিল, অখন আবার বাড়ি গেছে।’

একই এলাকার বাসিন্দা দীন ইসলাম (৪২) বলেন, ‘আগেরবার পানিত ঘরের বেড়া ভাঙছে। ইতা ঠিক করতাম পারছি না। সাত দিন উপজেলায় (আশ্রয়কেন্দ্র) আছলাম। পানি যদি আরও বাড়ে, তাইলে আবার যাইত অইব। আমরার কষ্টর সীমা নাই।’

আজ সকালে সুনামগঞ্জ সদরের পৌর মেয়র নাদের বখত বলেন, ‘শহরে পানি কমলেও কিছু কিছু এলাকা এখনো ডুবে আছে। ভারী বৃষ্টি না হলে, পানি শিগগিরই কমে যাবে বলে আশা করি।’

সুনামগঞ্জে চলতি মৌসুমে এক দিনে সর্বোচ্চ বৃষ্টি হয় ১৭ জুন। এদিন বৃষ্টির পরিমাণ ছিল ৩৬৫ মিলিমিটার। এরপরই পুরো জেলা বন্যাকবলিত হয়ে পড়ে। তখন বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হতে শুরু করলে গত রোববার রাত থেকে আবার ভারী বৃষ্টি শুরু হয়।
তাহিরপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আফতাব উদ্দিন জানান, এবার তাঁর উপজেলার সীমান্ত দিয়ে গত দুই দিন ব্যাপক পাহাড়ি ঢল নেমেছে। এ কারণেই পানি বেড়েছে। তাহিরপুর-সুনামগঞ্জ সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। তবে গতকাল পাহাড়ি ঢল কম নেমেছে বলে জানান তিনি।

সড়ক নিয়ে আফতাব উদ্দিন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, পাহাড়ি ঢল নামলেই সড়কের কয়েকটি স্থান প্লাবিত হয়। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েন উপজেলার বাসিন্দারা। কিন্তু এ সমস্যা সমাধানে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের কোনো উদ্যোগ নেই।

এদিকে সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী মামুন হাওলাদার বলেন, গতকাল দিনে ও রাতে বৃষ্টি কম হয়েছে। তাই নদীর পানি কমছে। ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস আছে। উজানের ঢলের সঙ্গে ভারী বৃষ্টি হলে পানি বাড়তে পারে।

People are also reading